অধিবেশনের শেষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রী, স্পিকার ও বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে চা-পানের আসরে মিলিত হন। ফাইল ছবি
একেবারে শুরুর দিন লোকসভায় এসেছিলেন। তার পর সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিনে ফের লোকসভায় দেখা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। কিন্তু রাজ্যসভায় অধিবেশনের শেষে যখন ‘বন্দে মাতরম’ বাজছে, সে সময় প্রধানমন্ত্রী অনুপস্থিত। কংগ্রেসের অভিযোগ, আরও একটি প্রথা ও ঐতিহ্য ভাঙা হল।
নিজে মাত্র দু’দিন লোকসভায় উপস্থিত থাকলেও আজ প্রধানমন্ত্রী শিবসেনার লোকসভার দলনেতা বিনায়ক রাউতের কাছে উদ্ধব ঠাকরের বিধানসভায় অনুপস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। অধিবেশনের শেষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রী, স্পিকার ও বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে চা-পানের আসরে মিলিত হন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী রাউতের কাছে উদ্ধবের শরীর-স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
অসুস্থতার জন্য মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী এ দিন মহারাষ্ট্র বিধানসভা অধিবেশনের প্রথম দিনে হাজির হননি। বিজেপি দাবি তুলেছে, উদ্ধব অন্য কাউকে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। রাউতের দাবি, প্রধানমন্ত্রী তাঁর কাছে জানতে চান, উদ্ধব বিধানসভায় যাবেন তো! তৃণমূলের সৌগত রায় আবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, তিনি কবে আবার বিদেশ যাচ্ছেন? প্রধানমন্ত্রী জানান, এখনই কোনও পরিকল্পনা নেই।
সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী চা-পানের আসরে সংসদের অধিবেশন ঠিক মতো না চলার জন্য বারবার হতাশা প্রকাশ করেন। মন্তব্য করেন, ‘কেউ সংসদে দেশের জন্য কাজ করে, কেউ দলের জন্য কাজ করে।’ নাম না করলেও প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য যে রাহুল গাঁধী তথা কংগ্রেস নেতৃত্ব, তা সকলেই বুঝতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী না বললেও সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী আজ বলেছেন, রাহুল গাঁধী রাজনৈতিক ফায়দা কুড়োতে সংসদ অচল করেছেন। রাহুলকে ‘পার্টটাইম রাজনীতিক’ বলে কটাক্ষ করে জোশী বলেন, ‘‘এর পরে হয়তো উনি বড়দিন, নতুন বছরের ছুটি কাটাতে কোথাও চলে যাবেন!’’
কংগ্রেসের পাল্টা অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী রাজ্যে রাজ্যে ভোটের প্রচার করেন। কিন্তু সংসদে আসেন না। কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা আগেই প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। লোকসভায় কংগ্রেসের উপদলনেতা গৌরব গগৈ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী দিনের পর দিন লোকসভায় আসেননি।’’ রাজ্যসভায় কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘রাজ্যসভায় বন্দে মাতরম বাজানোর সময়ে প্রধানমন্ত্রীরা সাধারণত হাজির থাকতেন। আজ মোদী গরহাজির রইলেন। আরও একটি প্রথা ও ঐতিহ্য ভেঙে ফেলা হল।’’
দু’সপ্তাহ আগে মোদী নিজে বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে দলের সাংসদদের অনুপস্থিতি নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তাঁরা নিজেদের না বদলালে ‘বদল’ হয়ে যাবে। কিন্তু তিনি নিজেই লোকসভায় অধিবেশনের প্রথম দিনের পরে আর হাজির হননি। বিজেপি সাংসদদের অনুপস্থিত থাকার অভ্যাসেও কোনও বদল ঘটেনি। এমনকি মন্ত্রীরাও সংসদে অনুপস্থিত থাকায় তা নিয়ে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সোমবার প্রশ্নোত্তর পর্বে বিজেপিরই ৯ সাংসদের নাম ডেকেও পাওয়া যায়নি। বিজেপির মুখ্য সচেতক রাকেশ সিংহও অনুপস্থিত ছিলেন। আজ সংসদের অধিবেশনের শেষে প্রধানমন্ত্রী তথা লোকসভার নেতা নরেন্দ্র মোদীর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় স্পিকার ওম বিড়লা অবশ্য বলেন, ‘‘যখন তাঁদের নামে কোনও কার্যসূচি বা প্রশ্ন থাকে, তখন তাঁরা হাজির হন।’’
লোকসভা সচিবালয় সূত্রে খবর, শীতকালীন অধিবেশনে সুখবীর সিংহ বাদল, সানি দেওল, শিশির অধিকারী-সহ ১১ জন সাংসদ পুরোপুরিই অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁরা অনুমতিও চেয়ে নিয়েছিলেন। তবে বিজেপির কিরণ খের, হরিশ দ্বিবেদীর মতো আরও অন্তত ৬ জন খুব বেশি হলে দু’দিন অধিবেশনে হাজির হয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy