The journey of India's Rihanna Renee Kujur, from Chhattisgarh to fashion ramp dgtl
National News
গায়ের রং কালো বলে কটূক্তি পেরিয়ে আজ দেশের অন্যতম সেরা মডেল ভারতের রিহানা
ছত্তীসগঢ়ের এক অনামী গ্রাম থেকে পথ চলা শুরু। দীর্ঘ পথ পেরিয়ে এখন তিনি দেশের নামী মডেল। রেনে কুজুরের হাঁটার পথটা যেন ফিল্মি গল্পের মতো। তবে সে পথে কাঁটাও ছিল বিস্তর। ‘কালো’, ‘বোঁচা নাক’, এমন নানা কটূক্তি শুনতে হয়েছে। সে সব বাধা অতিক্রম করেই রেনে এখন খ্যাতির শীর্ষে। ‘ভারতের রিহানা’ বলে পরিচিত রেনের সে কাহিনি জানেন?
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৯ ১২:১৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
ছত্তীসগঢ়ের এক অনামী গ্রাম থেকে পথ চলা শুরু। দীর্ঘ পথ পেরিয়ে এখন তিনি দেশের নামী মডেল। রেনে কুজুরের হাঁটার পথটা যেন ফিল্মি গল্পের মতো। তবে সে পথে কাঁটাও ছিল বিস্তর। ‘কালো’, ‘বোঁচা নাক’, এমন নানা কটূক্তি শুনতে হয়েছে। সে সব বাধা অতিক্রম করেই রেনে এখন খ্যাতির শীর্ষে। ‘ভারতের রিহানা’ বলে পরিচিত রেনের সে কাহিনি জানেন?
০২১২
ছত্তীসগঢ়ের জশপুর জেলায় পিরাই গ্রামের নামটা অনেকেরই অজানা। সেখানকার কুরুখ জনজাতি পরিবারে ১৯৮৪ সালে জন্ম রেনে কুজুরের।
০৩১২
গায়ের রং কালো বলে ছোট থেকেই তাঁকে নানা জনের নানা কটূক্তি সহ্য করতে হয়েছে। কেমন সে অভিজ্ঞতা? রেনে জানিয়েছেন, স্কুলের ফ্যান্সি ড্রেস অনুষ্ঠানে এক বার পরী সেজেছিলেন। বয়স তখন তিন। তবে স্টেজে উঠামাত্রই দর্শকেরা চেঁচাতে শুরু করেন, ‘কালো পরী, কালো পরী’। কাঁদতে কাঁদতে স্টেজ থেকে নেমে পড়েছিল ছোট্ট রেনে।
০৪১২
পেশাদার মডেল হওয়ার আগে টমি হিলফিগারের মতো নামী ব্র্যান্ডের সেলস স্টাফ হিসাবে কাজ করতেন রেনে। মডেলিং কেরিয়ারের শুরুটা হয়েছিল ২৮ বছর বয়সে। সে কেরিয়ায়ের শুরুর দিকেও গায়ের রঙের জন্য বৈষম্যের শিকার হয়েছেন রেনে।
০৫১২
মডেল হিসাবে কেরিয়ার শুরুর পর প্রায় এক বছর রেনের কাছে কোনও কাজ ছিল না। নিজের পোর্টফোলিয়ো তৈরি করে নানা এজেন্সির দরজায় দরজায় ঘুরেছেন। তবে কেউই তাঁকে বিশেষ পাত্তা দেয়নি। রেনে জানিয়েছেন, বোঁচা নাক আর গায়ের রং কালো বলে অনেকেই তাঁকে নিয়ে ঠাট্টা করেছেন। এমন কথাও শুনতে হয়েছে যে, কেবলমাত্র ফর্সা মডেলদেরই কাজে নেওয়া হবে।
০৬১২
শুধু কি গায়ের রং! মডেল হিসাবে রেনের বয়স ২৮, জানতে পেরে অনেকেই তাঁকে কাজ দিতে চাননি। ফ্যাশন ইন্ড্রাস্ট্রিতে সাধারণত কমবয়সি মডেলদেরই জন্য কাজ বেশি। এমন কথাই শুনতে হয়েছে। অনেক এজেন্সির লোকজন তাঁর সঙ্গে দেখা না করেই কেবলমাত্র বয়সের জন্য তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
০৭১২
বার বার ব্যর্থতার মুখেও হাল ছাড়েননি রেনে। এক সময় আসল বয়স লুকিয়ে কাজ খুঁজতে শুরু করেন তিনি। এক সময় কাস্টিং কাউচের শিকারও হয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ক্লায়েন্টদের খুশি না করতে পারলে আমি মডেল হতে পারব না, এমনটাও শুনতে হয়েছে।’’
০৮১২
শেষমেশ কাজ জুটেছে রেনের। তবে তাতেও বিপত্তি কমেনি। তাঁকে এমন ভাবে মেকআপ করানো হত, যাতে তাঁর গায়ের রং ৩-৪ শেডের কম কালো লাগে। এমনকি, ফোটোশপে তাঁর গায়ের রং সাদা করে দেওয়া হত।
০৯১২
এ ভাবেই অপমানিত হতে হয়েছে রেনেকে। হঠাৎই এক দিন তাঁর এক বন্ধু রেনেকে বলেন, তিনি পপ আইকন রিহানার মতো দেখতে। প্রথমটায় হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন সে কথা। ধীরে ধীরে মডেল হিসাবে রেনের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। এক সময় অনেকেই রেনের মধ্যে রিহানার চেহারার মিল খুঁজে পান।
১০১২
গায়ের রং কালো বা সাদা, তাতে যে কিছু এসে যায় না, তা আরও অনেকের মতো দেখিয়ে দিয়েছেন রিহানা। রেনে জানিয়েছেন, তাঁর মনে হয়েছিল, “পশ্চিমী দেশগুলিতে রিহানাকে নিয়ে তুমুল উন্মাদনা। আর আমি যদি রিহানার মতোই দেখতে হই, তবে নিজেকে কী ভাবে অসুন্দর বলব? এটা আসলে আমাদের মনের ভুল ছাড়া কিছুই নয়।’’
১১১২
নানা বাধা কাটিয়ে ফ্যাশন মডেল হিসাবে নিজেকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে গিয়েছেন রেনে। তবে যাঁর সঙ্গে তাঁর চেহারার এত মিল, সেই রিহানা (ছবিতে বাঁ-দিকে)-র সঙ্গে এখনও পর্যন্ত দেখা হয়নি। এক দিন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘রিহানার সঙ্গে দেখা করে ওঁকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’’
১২১২
গায়ের রং ছাড়াও ইংরেজিতে কথা বলতে পারতেন না বলেও ব্যঙ্গের শিকার হয়েছেন রেনে। এখনও অনেকের থেকেই কম কাজ পান। তা যে তাঁর গায়ের রঙের জন্য তা মোক্ষম বুঝেছেন। রেনে বলেন, ‘‘খুব কম মানুষই চিরাচরিত ভাবনা-চিন্তা ছেড়ে বেরতে চান। এখনও অনেকে ফরসা হওয়াকেই সৌন্দর্যের মাপকাঠি বলে মনে করেন। এই মানসিকতা বদলাতে সময় লাগবে।’’