Advertisement
২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Uttar Pradesh BJP

যোগী-মৌর্য সংঘাতে তপ্ত উত্তরপ্রদেশ বিজেপি

মৌর্য শিবিরের অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনে দলের খারাপ ফলের জন্য যোগীর কুশাসন দায়ী। যোগী শিবিরের পাল্টা, আদিত্যনাথকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরাতেই পরিকল্পিত ভাবে দলে অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে।

যোগী আদিত্যনাথ।

যোগী আদিত্যনাথ। —ফাইল ছবি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৪ ০৮:৪৪
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনের খারাপ ফলকে ঘিরে আড়াআড়ি ভাবে বিভাজনের ইঙ্গিত উত্তরপ্রদেশ বিজেপিতে। কার্যত সম্মুখসমরে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও উপমুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য।

মৌর্য শিবিরের অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনে দলের খারাপ ফলের জন্য যোগীর কুশাসন দায়ী। যোগী শিবিরের পাল্টা, আদিত্যনাথকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরাতেই পরিকল্পিত ভাবে দলে অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে। চূড়ান্ত ডামাডোলের মধ্যে এ মাসের শেষে লোকসভা ফলাফল নিয়ে আলোচনা করতে সমস্ত বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। আগামিকাল সন্ধ্যায় দলের সদর দফতরের নিচুতলার কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে বক্তব্য রাখতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।

গো-বলয়ের সবচেয়ে বড় রাজ্যে পদ্মশিবিরে অসন্তোষ প্রকাশ পাচ্ছিল ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকেই। কিন্তু গত রবিবার লখনউ-তে লোকসভা ভোটের পর্যালোচনা বৈঠকের পর থেকেই ওই বিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। যোগী হারের পিছনে যেখানে দলীয় কর্মীদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসকে দায়ী করে সরব হয়েছেন, সেখানে মৌর্য দলীয় কর্মীদের সম্মান বৃদ্ধির উপরে জোর দেন। তিনি বলেন, সংগঠন সরকারের থেকেও বড়। মৌর্য শিবিরের অভিযোগ, যোগী শাসন আমলাকেন্দ্রিক হওয়ায় প্রশাসনের কাছ থেকে যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। বেশ কয়েকজন পরাজিত সাংসদ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁদের হারের অন্যতম কারণ যোগী প্রশাসনের অত্যাধিক কঠোর নীতি। যা মানুষ মেনে নেননি। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বিজেপির ভোটে। প্রশ্নের মুখে যোগীর বিতর্কিত বুলডোজ়ার নীতিও।

পারস্পরিক মতপার্থক্য স্পষ্ট হওয়ার পর থেকেই দ্রুত প্রেক্ষাপট পরিবর্তন শুরু হয় লখনউয়ের রাজনীতিতে। গত কাল দিল্লি এসে দলীয় সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গে দেখা করে নিজের অসন্তোষ জানিয়েছেন মৌর্য। সূত্রের মতে, প্রয়োজনে নিজের উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব পদ ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে ডেকে পাঠানো হয়েছে আর এক উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠককে। এরই মধ্যে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সভাপতি ভূপেন্দ্র চৌধুরী দিল্লি এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, উত্তরপ্রদেশের খারাপ ফলের জন্য তিনি নিজের পদ থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন।

এরই মধ্যে আজ রাজ্যে হতে যাওয়া দশটি উপনির্বাচন নিয়ে দলের মন্ত্রী ও পদাধিকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন যোগী। বৈঠকে অবশ্য দুই উপমুখ্যমন্ত্রীই অনুপস্থিত ছিলেন। সূত্রের মতে, অন্তত ৩০ জন মন্ত্রীকে উপনির্বাচনে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যোগী শিবিরের দাবি, বিশেষ একটি শিবিরকে ভবিষ্যতে ফায়দা করে দেওয়ার লক্ষ্যেই এ ভাবে যোগীকে উত্তরপ্রদেশে খারাপ ফলের জন্য একক ভাবে দায়ী করার কৌশল নেওয়া হচ্ছে। যাতে যোগীকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়। যোগী শিবিরের একাংশের মতে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে যাতে যোগী প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী না হতে পারেন, তা নিশ্চিত করতেই পরিকল্পিত ভাবে কলকাঠি নাড়ানো শুরু হয়েছে। যদিও বিজেপির একটি বড় অংশ মনে করে, বর্তমান পরিস্থিতিতে যোগী যদি সরে যান, সে ক্ষেত্রে ২০২৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পক্ষে উত্তরপ্রদেশে জয়ের হ্যাটট্রিক করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে।

এই আবহে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব উস্কে দেওয়ার সুযোগ ছাড়তে চাননি (এসপি) নেতা অখিলেশ যাদব। তিনি বলেন, কুর্সি নিয়ে বিজেপির অন্দরে উত্তপ্ত লড়াই চলছে। ঠান্ডা ঘরে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। যে বিজেপি বিরোধী দলের সঙ্গে ভাঙনের রাজনীতি করে, সেই
বিজেপির ঘরেই এ বার ভাঙন। সাধারণ মানুষের সম্পর্কে ভাবার সময় নেই তাঁদের।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Uttar Pradesh BJP Yogi Adityanath
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy