Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

দক্ষিণের জঙ্গিপনায় ‘বাংলা’ ছাপে উদ্বেগ

দক্ষিণে জঙ্গি সংগঠনগুলির সদস্যদের আত্মগোপন করে থাকার প্রেক্ষাপটটিও জানতে পেরেছেন নিরাপত্তা সংস্থার কর্তারা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫০
Share: Save:

সেনাবাহিনী দক্ষিণ ভারতে জঙ্গিহানার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল সোমবার। মঙ্গলবারই চেন্নাই থেকে ধরা পড়েছে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি-র জঙ্গি আসাদুল্লা শেখ বা ইরফান। গত বছর বেঙ্গালুরু থেকে ধরা পড়েছিল খাগড়াগড় কাণ্ডের অন্যতম মাথা কওসর। খাগড়াগড় কাণ্ডের আরও কয়েক জন অভিযুক্তের সন্ধানও মিলেছিল দক্ষিণেই। গত কয়েক বছরে দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে যে ভাবে বাংলাভাষী এবং বাংলাদেশি জঙ্গিদের হদিস মিলেছে, তাতে চিন্তিত নিরাপত্তা সংস্থাগুলি।

দক্ষিণে জঙ্গি সংগঠনগুলির সদস্যদের আত্মগোপন করে থাকার প্রেক্ষাপটটিও জানতে পেরেছেন নিরাপত্তা সংস্থার কর্তারা। তাঁদের দাবি, গত ৮-১০ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় বেশ কিছু শ্রমিক-ঠিকাদার সংস্থা গজিয়েছে। এরা সীমান্তের জেলাগুলি থেকে নির্মাণ শ্রমিকদের দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে নিয়ে যাচ্ছে। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দুই ২৪ পরগনা থেকে কয়েক লক্ষ শ্রমিক এখন কেরল, তামিলনাডু, কর্নাটক ও তেলঙ্গনায় গিয়ে থিতু হয়েছে। নিরাপত্তা এজেন্সিগুলির দাবি, দক্ষিণের ‘বাংলাভাষী’ শ্রমিকদের মাঝে বাংলাদেশি জঙ্গিরাও আশ্রয় নিচ্ছে। ওপারের হাসিনা সরকারের তাড়া খেয়েও অনেক জেএমবি-র কর্মী দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের কয়েক জন ধরাও পড়েছে। তাঁদের আরও দাবি, মায়ানমারের রোহিঙ্গারাও নানা পথে হায়দরাবাদে ঘাঁটি গেড়েছে। কেরলে পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া-র অতি সক্রিয় হয়ে ওঠাও চিন্তায় রেখেছে গোয়েন্দাদের। কারণ, শ্রীলঙ্কা, মলদ্বীপ এবং বাংলাদেশে যোগাযোগ রয়েছে এই সংগঠনের। নিরাপত্তা এজেন্সিগুলির দাবি, ১০ বছরে দেশের বড় জঙ্গি সংগঠনগুলির পরিচালকেরা দক্ষিণ ভারত থেকেই উঠে এসেছে। ফলে আজমগড় বা দ্বারভাঙ্গা নয়, এখন দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকেই হামলার শঙ্কা বেশি।

গোয়েন্দাদের দাবি, বছর ১৫ আগে কর্নাটকের ভটকলে জঙ্গি সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন তৈরি করেছিল মহম্মদ আহমেদ জারার সিদ্দিবাপা। পরে সে পরিচিত হয় ইয়াসিন ভটকল নামে। তার দুই ভাই রিয়াজ এবং ইকবাল ভটকলও আইএম-এর মাথা ছিল। ২০১৩ সালে নেপাল থেকে ইয়াসিন ধরা পড়ার পরে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের কার্যকলাপে ভাটা পড়ে।

গোয়েন্দা সংস্থারগুলির দাবি, ২০১০-এ ধৃত লস্কর জঙ্গি টি নাসির কেরল পুলিশকে জানিয়েছিল, ভারতে তাদের সদর দফতর ছিল হায়দরাবাদে। ২০০৭-এ হায়দরাবাদে মক্কা মসজিদে জোড়া বিস্ফোরণের পাণ্ডা মহম্মদ শাহিদ বিলাল গোয়েন্দাদের জানিয়েছিল, ২০০২-এ হায়দরাবাদ থেকেই ১৪ জন যুবককে লস্কর পাকিস্তানে পাঠিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে ফের ভারতে ঢুকিয়েছিল। হরকতুল জেহাদি ইসলামি (হুজি)-র অন্যতম চাঁই মহম্মদ আমজাদ ওরফে খাজাও গ্রেফতার হয়েছিল চেন্নাই থেকে। আবু জুন্দাল নামে আরও এক লস্কর চাঁইও আদতে হায়দরাবাদের বলে দাবি গোয়েন্দাদের। নিরাপত্তা এজেন্সিগুলির আরও দাবি, জামাত ইনায়েত আনসারুল মোমিন নামে নতুন এক জঙ্গি সংস্থা কেরলে সক্রিয় হয়েছে। এই সংস্থা ইদানীং যুবক-যুবতীদের জঙ্গি প্রশিক্ষণেও পাঠাচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Terrorism JMB
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy