জঙ্গি কার্যকলাপে অর্থ জোগানে অভিযুক্ত পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) ধূসর তালিকা থেকে মুক্তি দেওয়ার ফলে ভারতে জঙ্গি হামলা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। মুম্বইয়ের তাজ হোটেলে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাস-বিরোধী কমিটির বৈঠকে এই আশঙ্কার ইঙ্গিত দিয়েছে নয়াদিল্লি।
কেন্দ্রের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার আধিকারিক সফি রিজভি শুক্রবার সন্ত্রাস-বিরোধী কমিটির বৈঠকে তথ্য-পরিসংখ্যান পেশ করে দেখিয়েছেন, গত চার বছর ধরে পাকিস্তান এফএটিএফ-এর ধূসর তালিকায় থাকার ফলে সীমান্ত পারের সন্ত্রাসের ঘটনা ক্রমশ কমেছিল। তিনি জানান, জম্মু ও কাশ্মীরে সেনা ও আধাসেনার শিবিরের মতো ‘হার্ড টার্গেটে’ ২০১৪ সালে ৫টি হামলা ঘটেছিল। ২০১৫-য় ঘটে ৮টি। ২০১৬-য় ১৫টি। এর পর জঙ্গি কার্যকলাপে অর্থ জোগানের অভিযোগে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে এফএটিএফ সক্রিয় হওয়ায় ২০১৭-য় তা নেমে আসে ৮টিতে। ২০১৮-য় কমে হয় ৩।
আরও পড়ুন:
২০১৯-এ পুলওয়ামার মতো ঘটনা ঘটলেও তার পরের বছর উপত্যকায় একটিও ‘হার্ড টার্গেটে’ জঙ্গিরা আঘাত হানতে পারেনি। এফএটিএফ-এর পদক্ষেপের পাশাপাশি জঙ্গি হামলা কমার কারণ হিসাবে ৩৭০ ধারার বিলোপকেও চিহ্নিত করেন তিনি। চলতি ১৮-২১ অক্টোবর প্যারিসে এফএটিএফ-এর ২০৬ জনের প্রতিনিধি দলের বৈঠকে রাষ্ট্রপুঞ্জ, আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ), বিশ্ব ব্যাঙ্ক, ‘এগমন্ট গ্রুপ অফ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট’-সহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ইসলামাবাদকে ফের ‘সাদা তালিকা’য় ফেরত আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নয়াদিল্লির মতে এর ফলে পরিস্থিতির ফের অবনতি হতে পারে।
আরও পড়ুন:
২০০৮ সালের নভেম্বরে সেই তাজ হোটেলে পাকিস্তান থেকে আসা লস্কর-ই-তইবা জঙ্গিরা তিন দিন ধরে হামলা চালিয়ে ৩০ জনেরও বেশি মানুষকে খুন করেছিল। শুক্রবার সেখানে হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাস-বিরোধী কমিটির বৈঠক। শুক্রবার বৈঠকের সূচনায় ২৬/১১ সন্ত্রাসের কেন্দ্রস্থলে দাঁড়িয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পাকিস্তানের নাম না করে হামলার চক্রীদের আড়াল করার অভিযোগ তোলেন। পাশাপাশি, সন্ত্রাসে আর্থিক সহায়তা দমনে আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে ‘করণীয়’ পাঁচ দফা প্রস্তাবও পেশ করেন বিদেশমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসে জড়িতদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপুঞ্জ এখনও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারছে না।’’