প্রতীকী চিত্র
পুলওয়ামা হামলার দু’বছরের মাথায় কাশ্মীর পুলিশ বানচাল করল বড়সড় নাশকতার ছক। ৭ কেজি আইইডি বিস্ফোরক উদ্ধারের সূত্র ধরে উঠে এল পাক জঙ্গিদের নতুন পরিকল্পনার কথা। নাম পাল্টে কাশ্মীর ও পঞ্জাবে সংগঠন বিস্তারের নীতি নেওয়া লস্কর-ই-তইবার মতো একাধিক পাক জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপ নিয়ে নিশ্চিত হলেন তদন্তকারীরা।
রবিবার জম্মুর ব্যস্ত বাস স্ট্যান্ড থেকে উদ্ধার করা হয় ৭ কেজি আইইডি বিস্ফোরক। দুই জঙ্গিকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। একজনের নাম সুহেল। সে নার্সিংয়ের ছাত্র। অন্যজনের নাম কাজি।জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ডিজি দিলবাগ সিংহ বলেছেন, ‘‘রঘুনাথ মন্দির, লাখদত্ত বাজার ও জম্মু রেলওয়ে স্টেশনে হামলার ছক কষেছিল জঙ্গিরা। আমাদের সন্দেহ, যে সমস্ত কাশ্মীরি ছাত্র পঞ্জাবে পড়াশোনা করছে, তাঁদের নিয়ে সংগঠনের জাল বিস্তারের চেষ্টা চলছেঅনেকদিন ধরেই। ‘আল বদর’-নামে একটি সংগঠনের তলায় এই নবনিযুক্ত জঙ্গিদের নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনাও করছে পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গি সংগঠন।’’
পুলিশ আরও জানিয়েছে, দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট ও লস্কর-এ-মুস্তাফা নামে দু’টি পৃথক নতুন জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরি করেছে লস্কর-ই-তইবা ও জইশ-ই-মহম্মদ। এই দুই নতুন গোষ্ঠীর ছাতার তলায় পঞ্জাব, কাশ্মীরে জাল বিস্তার করতে চাইছে সংগঠনগুলি। এই নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে আলোচনাও করেছে কাশ্মীরের স্থানীয় প্রশাসন। সব মিলিয়ে রবিবারের অভিযানের সাফল্য সন্ত্রাসদমনে এক বড় পদক্ষেপ বলেই দাবি করছে প্রশাসন।
শনিবার লোকসভা উত্তাল হয়েছে কাশ্মীর ইস্যুতে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জোরের সঙ্গে বলেছেন, ১৭ মাস আগে ৩৭০ ধারা বিলোপ ও রাজ্য ভাগ হওয়ার পর থেকে শান্তি ফিরেছে ভূস্বর্গে। যদিও বিরোধীরা সে কথা মানতে চাননি। অনেকের মতেই যে উন্নতি ও অবস্থা পরিবর্তনের স্বপ্ন কেন্দ্রীয় সরকার দেখিয়েছিল, তা পূরণ হয়নি। পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে কাশ্মীরের। লোকসভায়কথা উঠেছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও।
সেই বিতর্কের মধ্যেই কাশ্মীর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘‘শেষ ২-৩ দিন ধরেই একাধিক সূত্র মারফত খবর পেয়ে কাশ্মীর পুলিশ সতর্ক ছিল। সূত্রের খবরের ভিত্তিতেই পুলওয়ামায় তল্লাশি চালায় পুলিশ, সাড়ে ৬ কেজি বিস্ফোরক-সহ গ্রেফতার করা হয় এই জঙ্গিদের।’’
স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন উঠে আসছে, তাহলে কি নিরাপত্তার হাল ফেরেনি ভূস্বর্গে? লোকসভায় দাঁড়িয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলার পরের দিনই যেভাবে ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতিদের গৃহবন্দি করার অভিযোগ উঠেছে, যেভাবে বিপুল বিস্ফোরক উদ্ধার হচ্ছে, তাতে অনেকেই সন্দিহান হয়ে পড়েছেন। কিন্তু এর উল্টো তত্ত্বও আছে। শাসক পক্ষ বলছে, পুলিশ ও সেনার তৎপরতা এখন কাশ্মীর সীমান্তে শান্তি অনেকটাই ফিরিয়েছে। কাশ্মীরের আভ্যন্তরীণ প্রতিবাদের ঝাঁঝও এখন তলানিতে। কিছুটা হলেও ফিরে এসেছে স্থিতাবস্থা। তবে কাশ্মীরের মতো দীর্ঘদিনের সমস্যা যে ১৭ মাসের ব্যবধানে একেবারে মিটে যাবে না, সেটি স্বীকার করেছেন খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy