২৬/১১ মুম্বই হামলায় অভিযুক্ত তাহাউর রানাকে দিল্লিতে জেরা করছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। সূত্রের খবর, তাঁর জন্য এক বিশেষ সাক্ষীকে তৈরি রাখা হয়েছে। যে কোনও দিন রানার সামনে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে। দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে। সেখান থেকে অনেক গোপন তথ্য উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এই সাক্ষীকে ‘সংরক্ষিত’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইম্স এনআইএ সূত্র উল্লেখ করে এই তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রের খবর, এই সাক্ষী রানার ছেলেবেলার এক বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কিত। পাক বংশোদ্ভূত সন্ত্রাসবাদী ডেভিড হেডলির সঙ্গেও তাঁর যোগ রয়েছে। ২০০৬ সালে মুম্বইতে এসেছিলেন হেডলি। সেই সময়ে এই সাক্ষীই হেডলিকে স্বাগত জানিয়েছিলেন এবং তাঁর থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করে দিয়েছিলেন। হেডলিকে অন্যান্য রসদ জুগিয়েও তিনি সহায়তা করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে হেডলির সঙ্গে মিলেই রানা মুম্বই হামলার ছক কষেন বলে অভিযোগ। মনে করা হচ্ছে, এই সাক্ষীর সামনে পড়লে অনেক কথা স্বীকার করবেন রানা। তাঁদের অনেক গোপন পরিকল্পনাও প্রকাশ্যে আসতে পারে। রানার মামলায় এই সাক্ষী তাই এনআইএ-র ‘তুরুপের তাস’। তাঁকে অতি সন্তর্পণে কড়া প্রহরায় রাখা হয়েছে। তাঁর নাম প্রকাশ করা হয়নি। এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘আমাদের এই সংরক্ষিত সাক্ষীর সঙ্গে রানার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। শীঘ্রই আমরা তাঁকে রানার সামনে নিয়ে যেতে পারি।’’
আরও পড়ুন:
আদালতের নথিতেও এই সাক্ষীর পরিচয় গোপন রেখেছে এনআইএ। তাঁর পরিচয় প্রকাশ্যে এলে পাক আশ্রিত জঙ্গিরা, বিশেষত লশকর-এ-ত্যায়বার সদস্যেরা তাঁর ক্ষতি করার চেষ্টা করতে পারেন। সেই আশঙ্কা থেকেই সাক্ষীকে নিয়ে বাড়তি গোপনীয়তা অবলম্বন করছেন তদন্তকারীরা।
পাক বংশোদ্ভূত হলেও রানা কানাডার নাগরিক। এত দিন তিনি আমেরিকার জেলে বন্দি ছিলেন। তাঁকে ভারতে ফেরানো এবং বিচারপ্রক্রিয়ার আওতায় আনার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে এনআইএ। অবশেষে তাঁর প্রত্য়র্পণ সফল হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে নামে রানার বিমান। বিমানবন্দরেই তাঁকে গ্রেফতার করে এনআইএ। মধ্যরাতে তাঁকে দিল্লির বিশেষ এনআইএ আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। বিচারক ১৮ দিনের জন্য রানার এনআইএ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন। তার পর শুক্রবার সকাল থেকে এনআইএ তাঁকে জেরা করা শুরু করেছে। আপাতত ১৮ দিনের জন্য রানার ঠিকানা দিল্লিতে এনআইএ-র সদর দফতরের নীচতলার একটি কুঠুরি। তাঁকে ২৪ ঘণ্টা সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টা অন্তর তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা।