গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
দুপুর গড়াতেই ভিড় জয়পুরের সর্দার পটেল মার্গে বিজেপির রাজ্য দফতরে। একে একে পৌঁছচ্ছেন রাজস্থানে বিজেপির সদ্যজয়ী বিধায়কেরা। কথা বলছেন বাইরে অপেক্ষায় থাকা সাংবাদিকদের সঙ্গে। কিন্তু বেশ কয়েক জন বিধায়ক গাড়ির জানালার কালো টিন্টেড কাচ তুলে সটান ঢুকে গেলেন দফতরে!
জনশ্রুতি তাঁরা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের অনুগামী। সকালে ঢোলপুরের মহারানির ১৩ নম্বর সিভিল লাইন্সের বাংলো ঘুরে এসেছেন দলের বৈঠকে। ছত্তীসগঢ়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ, মধ্যপ্রদেশে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে ‘ছেঁটে’ ফেলার পরে এ বার বসুন্ধরার পালা বলে সোমবার সন্ধ্যা থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে রাজস্থানে। সেই সঙ্গে বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে ‘অচেনা মুখের খোঁজ’। আপাতত সেই তালিকায় প্রথম নাম অনিতা ভদেল।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী পদে আদিবাসী নেতা বিষ্ণুদেও সাই এবং মধ্যপ্রদেশে অনগ্রসর (ওবিসি) নেতা মোহন যাদবের পরে এ বার জাতপাতের সমীকরণ মাথায় রেখে রাজস্থানে কোনও তফসিলি জাতি বা ‘উচ্চবর্ণের’ নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী বাছতে পারেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতে পারে দলের দীর্ঘ দিনের ‘ভোটব্যাঙ্ক’ রাজপুত বা তফসিলি কোলিরা। অজমের-দক্ষিণের তিন বারের বিধায়ক অনিতা কোলি জনগোষ্ঠীর নেত্রী। ২০১৩-১৮ বসুন্ধরার জমানায় তিনি রাজস্থানের নারী এবং শিশুকল্যাণ মন্ত্রী ছিলেন।
এই পরিস্থিতিতে মরুরাজ্যের নবনির্বাচিত বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে মঙ্গলবার বিকেল ৫টেয় বৈঠকে বসছেন দলের তিন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক— প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী বিনোদ তাওড়ে এবং রাজ্যসভা সাংসদ তথা ছত্তীসগঢ়ের নেত্রী সরোজ পাণ্ডে। ওই বৈঠকেই নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হবে।
বিজেপির একটি সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটের পর বসুন্ধরা তাঁর অনুগামী প্রায় দু’ডজন বিজেপি বিধায়ককে নিয়ে ধারাবাহিক বৈঠক করায় ‘বিদ্রোহের’ ইঙ্গিত দেখছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। তাই দলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথের মতো হেভিওয়েট নেতাকে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের নেতা করে পাঠানো হয়েছে রাজস্থানে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা নাগাদ রাজনাথ-সহ তিন পর্যবেক্ষক জয়পুর বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পরে শহরের মেয়র তথা বিজেপি নেত্রী সৌম্যা গুর্জ্জর তাঁদের অভ্যর্থনা জানিয়ে রাজ্য দফতরে নিয়ে যান। সেখানেই মধ্যাহ্নভোজনের পরে শুরু হয় বৈঠক।
প্রসঙ্গত, ২০০ আসনের রাজস্থান বিধানসভায় এ বার বিজেপি ১১৫টিতে জিতে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের ঝুলিতে গিয়েছে ৬৯টি। নির্দল এবং অন্য দলগুলির প্রার্থীরা জিতেছেন ১৫টি আসনে। ওই রাজ্যে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরার পাশাপাশি, বিধানসভা ভোটে সদ্যজয়ী তিন সাংসদ মহন্ত বালকনাথ, দিয়া কুমারী এবং রাজ্যবর্ধন রাঠৌরের নাম আলোচনায় রয়েছে বলে দলের একটি সূত্রের খবর। দু’বারের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা এ বার তাঁর পুরনো কেন্দ্র ঝালারাপাটনে জিতলেও মোদী-শাহদের ‘সুনজরে’ না থাকায় তাঁর পক্ষে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া কঠিন বলে দলের একটি অংশ মনে করছে।
এ ছাড়া বিজেপির প্রাক্তন দুই রাজ্য সভাপতি, ওপি মাথুর এবং সতীশ পুনিয়ার নাম ছিল জল্পনার তালিকায়। তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী— গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত, অশ্বিনী বৈষ্ণব, অর্জুনরাম মেঘওয়ালের পাশাপাশি, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার নাম ঘিরেও চলেছিল জল্পনা। বসুন্ধরা রাজপুত কন্যা হলেও ঢোলপুরের জাঠ রাজবংশের ঘরনি। অন্য দিকে, দীয়া রাজপুত রাজবংশের সন্তান। আর ‘রাজস্থানের যোগী’ বালকনাথ ওবিসি জনগোষ্ঠীর নেতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy