মধ্যপ্রদেশে শেষ হয়ে গেল শিবরাজ সিংহের জমানা। সোমবার রাজধানী ভোপালে রাজ্য বিজেপির দফতরে দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে তিন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক— হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর, রাজ্যসভা সাংসদ কে লক্ষ্মণ এবং ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর মেয়র তথা দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য আশা লাকড়া নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মোহন যাদবের নাম ঘোষণা করলেন।
মোহনের মন্ত্রিসভায় দু’জন উপমুখ্যমন্ত্রী থাকবেন বলেও বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকেরা জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এক জন বিদায়ী অর্থমন্ত্রী জগদীশ দেবড়া। দ্বিতীয় জন দলেন ব্রাহ্মণ নেতা তথা বিদায়ী শিবরাজ মন্ত্রিসভার জনসংযোগ মন্ত্রী রাজেন্দ্র শুক্ল। রবিবার ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী পদে আদিবাসী নেতা বিষ্ণুদেও সাইকে বেছেছিল বিজেপি। এ বার জাতপাতের সমীকরণ মাথায় রেখেই ৫৮ বছরের অনগ্রসর (ওবিসি) নেতা মোহনকে বেছে নেওয়া হল বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা। উজ্বয়িনী-দক্ষিণ কেন্দ্রের তিন বারের বিধায়ক মোহন বিদায়ী মন্ত্রিসভার শিক্ষমন্ত্রী ছিলেন।
মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা ভোটে বিজেপির বিপুল জয়ের পরেই জল্পনা তৈরি হয়েছিল, বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজকে সরিয়ে এ বার ভোপালের কুর্সিতে নতুন মুখ আনতে পারে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী পদে বদলের জল্পনা আরও বাড়িয়ে দেয় বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজের দফতরের তরফে সমাজমাধ্যম করা একটি পোস্ট। তাঁর হাতজোড় করা একটি ছবির তলায় লেখা, ‘সকলকে রাম-রাম’! যা ‘মামা’র (মধ্যপ্রদেশে এই নামেই পরিচিত শিবরাজ) বিদায়বার্তা বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন। এই পরিস্থিতিতে সোমবার বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকের আগে আলাদা ভাবে শিবরাজের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন খট্টরেরা।
পরবর্তী মুখ্যন্ত্রিত্বের জল্পনায় সদ্য বিধানসভা ভোটে জয়ী দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর, প্রহ্লাদ পটেল এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের নাম ছিল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে, দলের রাজ্য সভাপতি বিষ্ণুদত্ত শর্মার নামও ছিল আলোচনায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে রাজ্যের শীর্ষ সরকারি পদে অপেক্ষাকৃত অচেনা নেতা মোহনকে বেছে নিলেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহেরা। তবে তোমরকে নতুন বিধানসভার স্পিকারের দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, এ বারের বিধানসভা ভোটে মধ্যপ্রদেশের ২৩০টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ১৬৩টি আসন। গত বারের চেয়ে ৫৪টি বেশি। মোট ভোটের প্রায় ৪৯ শতাংশ। যা ২০০৩ সালের চেয়ে প্রায় পাঁচ শতাংশ বেশি। অন্য দিকে, ৬৬টি আসনে জেতা কংগ্রেস ভোট পেয়েছে প্রায় ৪১ শতাংশের কাছাকাছি। আট শতাংশের ওই ভোটের পার্থক্যে কংগ্রেসের চেয়ে ৯৭টি আসন বেশি জিতেছে বিজেপি।