বৃষ্টির পরেও হালকা ধোঁয়াশায় ঢেকে দিল্লির আকাশ। ছবি: পিটিআই।
প্রতি বছর আদালত বলার পরেই কেন পদক্ষেপ করে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার? শুক্রবার এই প্রশ্ন তুলে অরবিন্দ কেজরীওয়াল সরকারকে প্রবল ভর্ৎসনা করল দেশের শীর্ষ আদালত।
দিল্লি-সহ জাতীয় রাজধানী এলাকায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বায়ুদূষণ চরমে উঠেছে। স্কুল-সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে এবং দিল্লিতে জোড়-বিজোড় সংখ্যার গাড়ি চালানোর নিদান দিয়ে তা মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে দিল্লি সরকার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাতাসের মান উন্নত হয়নি।
আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিষণ কলের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এই বিষয়ে বেশ কিছু আবেদনের শুনানি ছিল। দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, শুক্রবার ভোররাতে বৃষ্টি হওয়ায় বাতাসের মানের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। যা শুনে বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘সাধারণ মানুষের সামনে প্রার্থনা করা ছাড়া আর তো কোনও রাস্তা নেই। তাঁরা বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করছেন, ঝোড়ো হাওয়ার জন্য প্রার্থনা করছেন। মাঝেমধ্যে তাঁদের প্রার্থনায় ফলও মিলছে। তাঁদের ডাকে ভগবান হয় তো সাড়া দিচ্ছেন, কিন্তু সরকার কিছুই করে উঠতে পারছে না।’’
দিল্লি সরকার আদালতে জানায়, কৃত্রিম ভাবে বৃষ্টি নামানোর জন্য তারা কেন্দ্রের কাছে আবেদন করতে চায়। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে যা ব্যয় হবে, তাও বহন করবে রাজ্য সরকার। কেন্দ্র রাজি হলে ২০ নভেম্বরের মধ্যে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কেন্দ্রের কাছে এ বিষয়ে তারা আর্জি জানাবে কি না, তা আদালতের কাছে জানতে চায় সরকার। দিল্লি সরকারের এই প্রশ্ন শুনে দৃশ্যতই চটে যান বিচারপতি। বলেন, ‘‘কী পদ্ধতিতে বায়ুদূষণ মোকাবিলা করবেন তা আপনারা জানেন। আমরা কোনও পন্থা বাতলে দেব না। না হলে পরে আপনারাই বলবেন, আমরা এটা করতে চেয়েছিলাম, ওটা করতে চেয়েছিলাম, আদালত আমাদের করতে দেয়নি। আমাদের শুধু একটাই নির্দেশ— অবিলম্বে বাতাসের মান উন্নত করার ব্যবস্থা করুন।’’
নাড়া পোড়ানো বন্ধ করা নিয়ে আদালতের কঠোর অবস্থান আজ ফের স্পষ্ট করে দেন বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘প্রতি বছর সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে এ নিয়ে বলা হয়। কিন্তু পরের বছর আর তার কোনও ফল দেখা যায় না। প্রতি বছর শুধু আদালত বলার পরেই কেন পদক্ষেপ করা হয়? স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কেন রাজ্যগুলি কিছু করতে পারে না?’’ আদালতের কড়া নিদান, অন্তত ৫০ শতাংশ ফসলের নাড়া পোড়ানো যাবে না, প্রযুক্তির সাহায্যে নষ্ট করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় করতে হবে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার, দু’পক্ষকেই। কোর্টের প্রশ্ন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার কি এই ব্যয়ের ৫০ শতাংশ বহন করতে রাজি আছে?’’
প্রতি বছরের মতো এ বছরও দিল্লি সরকার জোড়-বিজোড় সংখ্যার গাড়ি চালানোর অনুমতি দিয়ে দূষণ মোকাবিলার চেষ্টা করছে। এ সম্পর্কে আদালত আগেই জানিয়েছিল, এই পদ্ধতিতে কতটা দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে বিষয়ে তাদের যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আজ বিচারপতি জানান, লাগাতার এই পদ্ধতি ব্যবহার করে শুধু ১৩ শতাংশ দূষণই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘শুধু বৈঠকই হচ্ছে। বাস্তবের মাটিতে তার কোনও প্রতিফলন দেখছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy