সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। —ফাইল চিত্র।
জেলে বন্দিদের মধ্যে কাজ ভাগ করার সময় কোনও বৈষম্য চলবে না। বন্দিদের সকলকে সমান চোখে দেখতে হবে। একটি মামলায় এমনটাই মন্তব্য করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। সেই সঙ্গে জেলের নিয়ম বদল করতে বলে রাজ্যগুলিকে নির্দেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত। জেলের মধ্যে প্রচলিত জাতিবৈষম্যের বিরুদ্ধে এই নির্দেশ।
অভিযোগ, দেশের অধিকাংশ জেলের প্রচলিত নিয়মেই জাতিবৈষম্য রয়েছে। বন্দিদের জেলের মধ্যে যে কাজ করতে দেওয়া হয়, তাতে বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, জেলের মধ্যে ঝাঁট দেওয়া কিংবা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার মতো কাজগুলি যাঁদের দেওয়া হয়, তাঁরা তথাকথিত নিচু জাতের। আর তথাকথিত উঁচু জাতের বন্দিরা রান্না করা বা ওই জাতীয় কোনও কাজ পান, যা অপেক্ষাকৃত বেশি সম্মানের। বন্দিদের মধ্যে কাজ ভাগের সময় এই বৈষম্য সংবিধানের ১৫ নম্বর ধারার বিরোধী, মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি। ওই ধারা অনুযায়ী, ধর্ম, জাতি, লিঙ্গ, বর্ণ বা জন্মস্থানের ভিত্তিতে নাগরিকদের সঙ্গে কোনও বৈষম্য করা যায় না। তা সত্ত্বেও যে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরে দেশের বিভিন্ন জেলে বৈষম্যমূলক নিয়ম প্রচলিত রয়েছে, তাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেছেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘সমাজে সকলেই সমান হয়ে জন্মেছেন। এখানে জাত নিয়ে কোনও ভেদাভেদ থাকতে পারে না।’’
প্রত্যেক রাজ্যকে জেলের নিয়ম বদলের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রত্যেক বন্দির মধ্যে সমান ভাবে বিভিন্ন কাজ ভাগ করতে হবে। প্রত্যেকেই সব ধরনের কাজের অধিকার পাবেন। নিয়ম বদলের জন্য তিন মাস সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, এর পরেও যদি কোনও জেলে বৈষম্যমূলক নিয়ম প্রচলিত থাকে, তবে তার দায় নিতে হবে কারা কর্তৃপক্ষকেই। কারাগারে প্রচলিত নিয়মগুলিকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে মন্তব্য করেছে আদালত।
শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, জেলের নিয়মকানুনের বই এবং রেজিস্টার থেকে ‘জাতি’ শব্দটিই মুছে দিতে হবে। বন্দিদের নাম এবং আইনি সংজ্ঞার ভিত্তিতে চিহ্নিত করতে হবে। কোথাও জাতের উল্লেখ রাখা যাবে না। এ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘বন্দিদের প্রাপ্য মর্যাদা না দেওয়া আসলে ঔপনিবেশিক শাসনের প্রতিফলন।’’ বৈষম্যের বিরুদ্ধে নির্দেশ দেওয়ার সময় কেন্দ্রীয় সরকারকেও আদর্শ কারা বিধিতে পরিবর্তন করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy