—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
নারী ও পুরুষের মধ্যে দীর্ঘদিন শারীরিক সম্পর্ক থাকলেও যদি নারী বিবাহ করার দাবি না জানান, তবে তা সম্মতির ভিত্তিতে তৈরি সম্পর্ক হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি বি ভি নাগারত্ন ও বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংহের বেঞ্চের মতে, এখনসম্মতির ভিত্তিতে তৈরি সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই পুরুষের বিরুদ্ধে ধর্ষণ-সহ ফৌজদারি আইনের নানা ধারায় মামলা করা হচ্ছে।এটা উদ্বেগজনক।
মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা এক মহিলা তাঁর অভিযোগে বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তির অসুস্থ স্ত্রীর দেখাশোনার জন্য তাঁকে ২০০৮ সালে নিয়োগ করা হয়েছিল। পরে জোর করে বারবার তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করেন অভিযুক্ত। দুই স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও অভিযুক্ত তাঁকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন। মহিলার অভিযোগ, অভিযুক্ত তাঁকে বলেন, তাঁর দুই স্ত্রীই অসুস্থ। ফলে তিনি তাঁকে বিয়ে করবেন। ২০১৭ সাল থেকে তাঁকে এড়াতে শুরু করেন অভিযুক্ত। বিয়ের প্রতিশ্রুতিও ভুলে যান।
অন্য দিকে অভিযুক্তের আইনজীবীরা জানান, তাঁদের মক্কেল পেশায় সমাজকর্মী। অভিযোগকারিণীর বড় মেয়ের অপহরণের সময়ে তাঁকে সাহায্য করেন তিনি। পরে আর্থিক সাহায্যও করেন। পরে বারবার অভিযোগকারিণী তাঁর অফিসে আসতেন। কিন্তু আর্থিক সাহায্যের দাবি বাড়ায় অভিযোগকারিণীকে এড়াতে শুরু করেন তিনি। অভিযোগকারিণী তাঁকে ও পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেওয়ায় তাঁরা পুলিশে অভিযোগও করেন। পরে অভিযোগকারিণী তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, প্রতারণা ও ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ দায়ের করেন।
দায়রা আদালতে অভিযুক্ত জামিন পাওয়ার পরে অভিযোগকারিণী নয়া অভিযোগে জানান, তাঁর মেয়েকে যৌন নির্যাতন করেছেন অভিযুক্ত। সেই মামলাতেও রক্ষাকবচ পান তিনি। কিন্তু দু’টি মামলা খারিজ করার জন্য তাঁর আর্জি খারিজ করে বম্বে হাই কোর্ট। ফলে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন তিনি। বিচারপতি নাগারত্ন ও বিচারপতি সিংহের বেঞ্চের মতে, বিয়ের ভুয়ো প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে সম্পর্ককে সম্মতির ভিত্তিতে সম্পর্ক থেকে আলাদা করা প্রয়োজন। বিবাহবন্ধন ছাড়াই কোনও মহিলা কোনও পুরুষকে পছন্দ করলে যৌন সম্পর্ক করতেই পারেন। বেঞ্চের মতে, দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক সম্পর্ক থাকলেও নারী যদি বিয়ের জন্য দাবি না জানান তবে সেই সম্পর্ককে কেবল বিয়ের ভুয়ো প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে সম্পর্ক বলা যায় না। এই ধরনের সম্পর্ক যত বেশি দিন ধরে চলবে ততই পুরুষের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্যতা কমবে বলেই মত বিচারপতিদের।
এই মামলায় বম্বে হাই কোর্টের রায় ও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতার মতে, ‘‘এই ধরনের ধর্ষণের মামলার ফলে প্রকৃত ধর্ষণের ঘটনায় নির্যাতিতাদের সুবিচার পাওয়া কঠিন হয়।’’ আইনজীবী সুনন্দ রাহার মতে, ‘‘এ নিয়ে বিভিন্ন হাই কোর্টের নানা ধরনের রায় ছিল। ফলে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় অত্যন্ত সময়োপযোগী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy