কলেজিয়াম বৈঠকের তথ্য প্রকাশ্যে আনার আবেদন খারিজ শীর্ষ আদালতে। প্রতীকী ছবি।
বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত কলেজিয়ামের বৈঠকের তথ্য চেয়ে তথ্যের অধিকার আইনে করা আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি এমআর শাহ এবং সিটি রবিকুমারের বেঞ্চ শুক্রবার এই রায় ঘোষণা করে বলেছে, ‘একাধিক সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে গৃহীত সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত জনসমক্ষে আনা যায় না।’
গত শনিবার ওই মামলার শুনানি-পর্বে দুই বিচারপতির বেঞ্চ তার পর্যবেক্ষণে বলেছিল, ‘কোনও অবস্থাতেই কলেজিয়াম ব্যবস্থাকে বেলাইনের চেষ্টা করা উচিত নয়।’’ সেই সঙ্গে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন কলেজিয়ামের দক্ষতা এবং নিরপেক্ষতা নিয়ে কোনও সংশয় নেই দাবি করে দুই বিচারপতি বেঞ্চ বলে, “আমরাই সবচেয়ে স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান।’’
ওই মামলার শুনানিতে আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বরের ওই কলেজিয়াম সভার কার্যবিবরণীর তথ্য প্রকাশের বিষয়ে প্রত্যাশিত স্বচ্ছতা দেখা যাচ্ছে না। তারই প্রেক্ষিতে ওই মন্তব্য করেছিল দুই বিচারপতির বেঞ্চ। শনিবার শুনানি শেষের পর রায় সংরক্ষিত রাখা হয়। শুক্রবার ঘোষিত হল কলেজিয়াম বৈঠকের তথ্য চাওয়ার আবেদন খারিজের রায়।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন। যা নিয়ে এর আগে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে শীর্ষ আদালত কেন্দ্রের বিরুদ্ধে উচ্চ বিচারবিভাগীয় স্তরে বিচারপতি নিয়োগে গয়ংগচ্ছতার অভিযোগও তুলেছে। গত মাসে বিচারপতি সঞ্জয় কিষেণ কউল ও বিচারপতি এএস ওকা-র বেঞ্চ কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করে বলেছিল, বিচারপতি পদে নিয়োগের জন্য কলেজিয়ামের সুপারিশ করা নামে সম্মতি জানাতে সরকারের তরফে অকারণে দেরি করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, রিজিজুর অভিযোগ, বর্তমান কলেজিয়াম ব্যবস্থায় অস্বচ্ছতা রয়েছে। এমনকি, বিচারপতি নিয়োগের এই ব্যবস্থাকে ‘ভারতীয় সংবিধানে বহিরাগত’ বলেন তিনি। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর ওই মন্তব্যকে গত মাসে ‘হতাশাজনক’ বলেছিল শীর্ষ আদালত।
বর্তমান ব্যবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ শীর্ষস্থানীয় বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত ওই কলেজিয়ামই সম্ভাব্য বিচারপতিদের নাম সুপারিশ করে। তার পরে সেই নামগুলি বিবেচনা করে সরকার। কলেজিয়ামের পুনর্বিবেচনার জন্য সরকার নাম ফেরত পাঠাতে পারে। কিন্তু কলেজিয়াম সেই নামগুলি আবার ফেরত পাঠালে সরকার তা মানতে বাধ্য।
মোদী সরকার ক্ষমতায় এসেই ২০১৫ সালে জাতীয় বিচারপতি নিয়োগ কমিশন (এনজেএসি) আইন এনেছিল। কিন্তু শীর্ষ আদালতের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ তা অসাংবিধানিক বলে খারিজ করে কলেজিয়াম ব্যবস্থা বজায় রাখার পক্ষেই রায় দেয়। তার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে মতবিরোধ চলছে কেন্দ্র ও শীর্ষ আদালতের। সম্প্রতি উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় সুপ্রিম কোর্টের ২০১৫ সালের সেই রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। দিল্লিতে গত রবিবার একটি স্মারক বক্তৃতা কর্মসূচিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের উপস্থিতিতেই উপরাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত আইনসভার সদস্যদের পাশ করা আইনকে দেশের শীর্ষ আদালত ‘অসাংবিধানিক’ বলছে, এমন নজির বিশ্বে আর নেই!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy