Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Kiren Rijiju

‘আপনাদের ভোটে লড়তে হয় না’! বিচারপতিদের আরও যা বললেন ‘যুযুধান’ কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রিজিজু

গত কয়েক মাস ধরে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আইনমন্ত্রী রিজিজু বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন। যা নিয়ে এর আগে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।

কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর আবার বিতর্কিত মন্তব্য।

কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর আবার বিতর্কিত মন্তব্য। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:৩৬
Share: Save:

বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কলেজিয়াম পদ্ধতি বদলানোর জন্য গত কয়েক মাস ধরেই সরব তিনি। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। এ বার মন্তব্য করলেন বিচারকদের উপর নজরদারি নিয়ে। সোমবার রিজিজুর মন্তব্য, ‘‘সরাসরি ভোট বা জনতার পছন্দের ভিত্তিতে বিচারপতি নিযুক্ত হন না। তবে তাঁদের উপর সব সময়ই জনতার নজর থাকে।’’

এর পরে বিচারকদের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘মানুষ আপনাদের দেখছে। আপনারা কী রায় দেন, কী ভাবে কাজ করেন নজর রাখছে। সামাজিক মাধ্যমের এই যুগে আপনি কিছুই লুকোতে পারবেন না।’’ কলেজিয়াম ঘিরে কেন্দ্রের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের টানাপড়েনের মধ্যেই রিজিজুর এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে শাসক শিবিরের একাংশ।

দিল্লি হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি আর এস সোধির একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন রিজিজু। তাতে প্রাক্তন বিচারপতি সোধিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘এই প্রথম সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানকে হাইজ্যাক করেছে। তারা বলছে আমরাই বিচারপতি নিয়োগ করব। সুপ্রিম কোর্ট হাই কোর্টগুলির সব বক্তব্য বিনা বাক্যব্যয়ে মানে না। কিন্তু হাই কোর্টের বিচারপতিরা সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকিয়ে থাকেন ও শীর্ষ আদালতের সব কথা বিনা বাক্যব্যয়ে মানতে থাকেন।’’

প্রাক্তন বিচারপতির বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রিজিজুর বক্তব্য, ‘‘এটা এক জন বিচারপতির বক্তব্য। ভারতীয় গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হল তার সাফল্য। দেশবাসী তাঁদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে দেশ শাসন করেন। জনপ্রতিনিধিরাই মানুষের স্বার্থ ও আইনের প্রতিনিধিত্ব করেন। আমাদের বিচারবিভাগ স্বাধীন এবং সংবিধান সকলের ঊর্ধ্বে।’’ রিজিজুর বক্তব্য, ‘‘আসলে অধিকাংশ দেশবাসীই এমন বিচক্ষণ (বিচারপতি সোধির মতের অনুরূপ) ভাবনায় বিশ্বাসী। কেবল কিছু মানুষ সংবিধান ও মানুষের রায়ের পরোয়া করেন না। তাঁরা নিজেদের সংবিধানের ঊর্ধ্বে বলে মনে করেন।’’ এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী শীর্ষ আদলতকেই নিশানা করেছেন বলে মত বিরোধীদের।

গত কয়েক মাস ধরে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আইনমন্ত্রী রিজিজু বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন। যা নিয়ে এর আগে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে শীর্ষ আদালত কেন্দ্রের বিরুদ্ধে উচ্চ বিচারবিভাগীয় স্তরে বিচারপতি নিয়োগে গয়ংগচ্ছতার অভিযোগও তুলেছে। গত ডিসেম্বরে বিচারপতি সঞ্জয় কিষেণ কউল ও বিচারপতি এএস ওকা-র বেঞ্চ কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা করে বলেছিল, বিচারপতি পদে নিয়োগের জন্য কলেজিয়ামের সুপারিশ করা নামে সম্মতি জানাতে সরকারের তরফে অকারণে দেরি করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, মোদী সরকার ক্ষমতায় এসেই ২০১৫ সালে জাতীয় বিচারপতি নিয়োগ কমিশন (এনজেএসি) আইন এনেছিল। কিন্তু শীর্ষ আদালতের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ তা অসাংবিধানিক বলে খারিজ করে কলেজিয়াম ব্যবস্থা বজায় রাখার পক্ষেই রায় দেয়। তার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে মতবিরোধ চলছে কেন্দ্র ও শীর্ষ আদালতের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE