সুধীন্দ্র কুলকর্ণী ও শত্রুঘ্ন সিন্হা।
রাহুল গাঁধীর অভিষেককে ‘ঔরঙ্গজেব-রাজ’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেই রাহুলের অভিষেক নিয়েই উচ্ছ্বাস জানিয়ে বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেললেন দলের দুই নেতা শত্রুঘ্ন সিন্হা ও সুধীন্দ্র কুলকর্ণী।
শত্রুঘ্ন বিজেপির সাংসদ। আর সুধীন্দ্র অটলবিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আডবাণীর বিশ্বাসভাজন বলে পরিচিত। বাজপেয়ী আমলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এ-হেন সুধীন্দ্র মন্তব্য করেছেন, ‘‘কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবেন। তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত।’’ আর রাহুলকে অভিনন্দন জানিয়ে শত্রুঘ্নর মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের সভাপতি পদে রাহুল গাঁধী সব থেকে যোগ্য।’’ সুধীন্দ্ররও মত, রাহুল কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ায় এক নতুন নেতার জন্ম হল। যে নেতাকে ভারতের প্রয়োজন। সুধীন্দ্র এ-ও বলেন, ‘‘রাহুল এমন নেতা, যিনি সত্যি সত্যিই মহাত্মা গাঁধীর দর্শনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। যে রাজনীতি আদর্শ, ভালবাসা, সেবা, সকলকে নিয়ে চলা ও আলাপ-আলোচনার কথা বলে।’’ শত্রুঘ্ন রাহুলের পাশাপাশি কংগ্রেসেরও উন্নতি কামনা করেছেন। তাঁর যুক্তি, গণতন্ত্রের স্বার্থেই কংগ্রেসের টিকে থাকা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: দু’দশকের স্মৃতি বেয়ে বিদায় সনিয়া গাঁধীর
দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতার মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়লেও দলে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের অনুগামী নেতারা এ নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নন। তাঁদের বক্তব্য, যশবন্ত সিন্হা, অরুণ শৌরি, শত্রুঘ্ন বা সুধীন্দ্রর মতো নেতাদের খোলা ছাড় দেওয়া রয়েছে। তাঁরা এখন খাতায়-কলমে দলের বিক্ষুব্ধ বিতর্ক থামছে না তাতে। পাল্টা যুক্তি উঠে আসছে, ভোট-সভায় রাহুলের অভিষেককে ‘ঔরঙ্গজেব-রাজ’ বললেও মোদী কিন্তু পরে টুইট করে দলের সভাপতি হওয়ার জন্য তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী বিজয় গয়ালও রাহুলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শত্রুঘ্ন-সুধীন্দ্রদের ভুলটা তবে কোথায়?
• সাংগঠনিক রদবদল
পার্টির ভোলবদল, আরও বেশি আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব দেখবেন। দলে প্রতিভা যথেষ্ট, কাজে লাগাতে হবে।
• দলীয় গণতন্ত্র
অবশ্যই। যথাসম্ভব বেশি নতুন, তরুণ মুখ। অবশ্য তার মানে এই নয় প্রবীণ, অভিজ্ঞদের জায়গা থাকবে না।
• গুজরাতের ভোট
বিজেপি ভাগ-বাঁটোয়ারা করেছে। আমরা একজোট করেছি। আমাদের বিরুদ্ধেই জাতপাতের অভিযোগ তুলছে! এ তো গাঁধীজি, পটেল, নেহরু জেল খাটার পরে সাভরকরের আত্মসমর্পণের মতো।
• সামনে চ্যালেঞ্জ
বিকল্প পথ পেশ করব। মানুষ ভেবেছিলেন, আরএসএস আর্থিক বৃদ্ধি আনলে ওদের মতাদর্শের ত্রুটি মানা যাবে। ত্রুটি রয়ে গিয়েছে, অর্থনীতির লাভ হয়নি।
• মানুষ কী বলছে
এক অটোচালক আমাকে বললেন, ‘‘মুক্তি দিন। আগে দিনে ৫০ টাকা আয় হতো, এখন ২৫ টাকা হয়।’’ দেশের এমনই অবস্থা।
জবাবে বিজেপি নেতারা বলছেন, দু’জনের কথা থেকেই স্পষ্ট, রাহুলের প্রশংসার পাশাপাশি মোদী-অমিত জুটি বিজেপিকে খোঁচা দেওয়াই তাঁদের আসল লক্ষ্য। সোমবার গুজরাতের ভোটে বিজেপি জিতলেই এই সব আক্রমণ ভোঁতা হয়ে যাবে।
তবু প্রশ্নের কাঁটা থেকেই যাচ্ছে। বিজেপি সমর্থিত নির্দল সাংসদ সঞ্জয় কাকাড়ে দাবি করেছেন, বুথফেরত সমীক্ষার সঙ্গে তিনি একমত নন। বিজেপি গুজরাতে সরকার গড়তে পারবে না। এনডিএ-শরিক শিবসেনার প্রধান উদ্ধব ঠাকরেরও দবি বুথফেরত সমীক্ষার ফল মিলবে না গুজরাতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy