ট্রেনে কাটা পড়ে এক ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে রণক্ষেত্র চেহারা নিল পটনা রেল স্টেশন। বিহার পুলিশ জানায়, স্কুল-কলেজের কয়েকশো ছাত্র বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্টেশনে জড়ো হয়ে ৩-৪টি মেল-এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেয়। বাতানুকূল কামরার কাঁচও ভেঙে দেয় তারা। যাত্রীদের মারধরও করে। পুলিশ ও রেল সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানরা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ছাত্ররা তাদের ধাওয়া করে। ছাত্রদের মারমুখী চেহারা দেখে যাত্রীরা ট্রেন থেকে নেমে পালাতে শুরু করেন। রেল পুলিশ জানায়, ছাত্ররা কার্যত বিনা বাধায় স্টেশন ও লাগোয়া চত্বর জুড়ে ছ’ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালায়। পরে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নির্দেশ পেয়ে রাজ্য পুলিশের বড় বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তারা লাঠি চার্জ করে ছাত্রদের এলাকা ছাড়া করে।
পূর্ব-মধ্য রেল সূত্রের খবর, ক্রবার বিকেলে পটনা-ইসলামপুর প্যাসেঞ্জার ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয় ছাত্র ঋষি কুমার (২২)। তাঁর বাড়ি স্থানীয় রাজেন্দ্রপুর এলাকায়। রেল পুলিশ জেনেছে, ওই ছাত্র কানে মোবাইলের হেড ফোন গুঁজে রেল লাইন পার হচ্ছিল। পিছন থেকে আসা প্যাসেঞ্জার ট্রেনের হর্ন শুনতে পাননি।
ছাত্র মৃত্যুর খবর ছড়াতেই এলাকার লোকজন এবং ছাত্ররা পটনা স্টেশনে ছুটে আসেন। প্রবল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তারা। সেই সময় রেল পুলিশ ও রেল সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানরা তাঁদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেন। ছাত্রদের অভিযোগ, রেল পুলিশ তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। সন্ধ্যায় পটনা স্টেশনে ঢুকছিল পটনা-দুর্গ এক্সপ্রেস। ওই ট্রেনটি পটনা-আদ্রা-পুরুলিয়া-টাটা হয়ে মধ্যপ্রদেশের দুর্গ-এ যায়। ওই ট্রেনটিই প্রথমে ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পড়ে। ছাত্রেরা ওই ট্রেনের সাধারণ একটি কামরায় আগুন লাগায়। যাত্রীরা ভয়ে ট্রেন থেকে নেমে যে যেদিকে পারেন ছুটে পালাতে শুরু করেন।
রেল পুলিশ জানায়, ওই সময় পটনা স্টেশনের অন্য কয়েকটি প্ল্যাটফর্মে আরও দু’তিনটি মেল-এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রী নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। তার মধ্যে ছিল নয়াদিল্লি-ডিব্রুগড় রাজধানী এক্সপ্রেসও। ছাত্রেরা ওই ট্রেনগুলিতেও চড়াও হয়ে হামলা শুরু করে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গোলমালও বাড়তে থাকায় পুলিশ ও রেল কর্তৃপক্ষ রাজ্য সচিবালয়ের কর্তা-ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। খবর যায় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের কাছে। তাঁর নির্দেশেই রাজ্য পুলিশের বড় বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ও পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে।
পূর্ব-মধ্য রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক জানান, পটনা-দুর্গ এক্সপ্রেসের চারটি বাতানুকূল কামরা ও একটি সাধারণ কামরা কেটে দিয়ে ওই অবস্থাতেই যাত্রী তুলে শনিবার ভোরে ট্রেনটি রওনা করানো হয়। বাকি ট্রেনগুলিরও ক্ষতিগ্রস্ত কামরা কেটে দিয়ে রওনা করানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, যে সব যাত্রী যেতে পারেননি, তাঁদের পুরো ভাড়া রেল ফেরত দিয়ে দেবে। এমনকী বাতানুকূল কামরার ভাড়াও ফেরত দেওয়া হবে। যে কামরাগুলি কেটে দেওয়া হয়েছে, ফিরতি পথে সেই কামরাগুলিও থাকবে না। যাত্রীদের পুরো ভাড়া ফেরত দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy