Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

লোডশেডিং নিয়ে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের

২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘণ্টাই বিদ্যুত্ থাকছে না করিমগঞ্জে। শেষ পর্যন্ত প্রতিবাদে পথে নামল স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। আজ অসম বিদ্যুত্ বিতরণ কোম্পানির শিববাড়ি রোডের অফিসে তারা ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায়। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, বিদ্যুতবাহী তারে জল পড়লেই বিছিন্ন করে দেওয়া হয় বিদ্যুত্ সংযোগ।

বিদ্যুৎ দফতরে বিক্ষোভ ছাত্রছাত্রীদের। শুক্রবার করিমগঞ্জে। শীর্ষেন্দু শী’র তোলা ছবি।

বিদ্যুৎ দফতরে বিক্ষোভ ছাত্রছাত্রীদের। শুক্রবার করিমগঞ্জে। শীর্ষেন্দু শী’র তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
করিমগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০৯
Share: Save:

২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘণ্টাই বিদ্যুত্ থাকছে না করিমগঞ্জে। শেষ পর্যন্ত প্রতিবাদে পথে নামল স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। আজ অসম বিদ্যুত্ বিতরণ কোম্পানির শিববাড়ি রোডের অফিসে তারা ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায়।

ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, বিদ্যুতবাহী তারে জল পড়লেই বিছিন্ন করে দেওয়া হয় বিদ্যুত্ সংযোগ। দিনরাতের অধিকাংশ সময় বিদ্যুত্ থাকছে না। এই অবস্থায় ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা কার্যত লাটে উঠেছে। বর্তমানে বিভিন্ন স্কুলে চলছে ইউনিট টেস্ট। কিন্তু বিদ্যুতের অপ্রতুলতায় বিঘ্ন ঘটছে পড়াশোনায়। বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্য, তাই বাধ্য হয়েই প্রতিবাদে তারা রাস্তায় নেমেছে।

আজ দুপুর একটা নাগাদ করিমগঞ্জের বিদ্যুত্ বিতরণ কোম্পানির অফিসে হাজির হয় প্রতিবাদকারীরা। তারা এই লাগাতার লোডশেডিঙের কারণ জানতে চান। বিদ্যুতের লাইন মেরামতির দায়িত্বে যারা রয়েছেন তাঁদের যোগ্যতা, কাজের গুণগত মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। কিন্তু অভিযোগের কোনও সদুত্তরই দিতে পারেননি স্ংস্থার স্থানীয় প্রধান। ফলে বাগবিতণ্ডার পরিবেশ তৈরি হয়। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ১৭-১৮ ঘণ্টা বিদ্যুত্ না থাকার পর গ্রাহক যখনই ফোন করে কখন বিদ্যুত্ আসবে তা জানার চেষ্টা করেন, দেখা যায় কোম্পানির সংশ্লিষ্ট টেলিফোনটিও নামিয়ে রাখা হয়েছে। অর্থাত্ কোনও সদুত্তর দিতে রাজি নয় কোম্পানি। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগে বিড়ম্বনায় পড়েন স্থানীয় প্রধান।

কোম্পানিরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যুতবাহী তার মেরামতির নামে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না। কারণ অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগ করে সারাইয়ের কাজ করা হচ্ছে। যার ফলে করিমগঞ্জে বিদ্যুত্ না থাকাটা একটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট ম্যানেজার হিমাদ্রিশেখর বিশ্বাস ছাত্রছাত্রীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেও প্রকাশ্যে এই নিয়ে তিনি মুখ খুলতে রাজি হননি।

তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি অস্থায়ী ভারপ্রাপ্ত। তিন দিনের জন্য আছি। আমি এ নিয়ে কোনও কথা বলব না।’’ বিদ্যুত্ বিতরণ কোম্পানির অফিসে যখন ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, ম্যানেজারকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করছে, সেই সময় অবশ্য করিমগঞ্জ শহরে বিদ্যুতের জোগান নিরবিচ্ছিনই ছিল।

এ দিকে, ছাত্রছাত্রীরা আজ কোম্পানির কার্যালয়ে যখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল তখন সেখানকার অধিকাংশ কর্মীই অনুপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি আন্দোলনকারীদের নজরে পড়ে। আন্দোলনকারীরা ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজারের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েও সদুত্তর পায়নি।

এরপর বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীরা জেলাশাসক সঞ্জীব গোঁহাই বরুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে। জেলাশাসক সঙ্গে সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট জয়শঙ্কর শর্মাকে বিদ্যুত্ বিতরণ কোম্পানির অফিসে পাঠান। ম্যাজিস্ট্রেট শর্মা শুক্রবারের উপস্থিতি খাতা পরীক্ষা করলে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এদিন অফিসের একজন স্থায়ী কর্মী ছাড়া বাকি ১১ জন কর্মীই ক্যাজুয়েল লিভ না নিয়েই অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘উপস্থিতির বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করা হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE