Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
National News

মোদী হাওয়া, অমিতের ম্যানেজমেন্ট, ১০০% নতুন প্রার্থীতেই বাজিমাত

মুখ্যমন্ত্রীকে খারিজ করে প্রধানমন্ত্রীকেই কবুল করল দিল্লি।উত্তরপ্রদেশে বিপুল জয়ের ঠিক পরে দিল্লি পুরসভা ভোটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দলই যে ক্ষমতা ধরে রাখছে, এমনটা প্রত্যাশিতই ছিল।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ১৬:৫৪
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রীকে খারিজ করে প্রধানমন্ত্রীকেই কবুল করল দিল্লি।

উত্তরপ্রদেশে বিপুল জয়ের ঠিক পরে দিল্লি পুরসভা ভোটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দলই যে ক্ষমতা ধরে রাখছে, এমনটা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু এই ভোটে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের দল যেমন ধাক্কা খেল, সেটাই পুর-ফলের নতুন ঘটনা। বিশেষ করে মাত্র দু’বছর আগে মোদী জমানাতেই খোদ দিল্লিতে কেজরী-ঝড়ে খরকুটোর মতো বিজেপির উড়ে যাওয়ার পর। উত্তরপ্রদেশে ভরাডুবির পর রাহুল গাঁধীর দলের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু কেজরীর ভোটে থাবা বসিয়ে গত বিধানসভায় ক্ষয় হওয়া জনভিত্তি থেকে ভোট ও আসন অনেকটা বাড়িয়ে নিলেও, কংগ্রেসকে তৃতীয় স্থানের সান্ত্বনা পুরস্কারেই সন্তুষ্ট থাকতে হল।

হারের পর আপ ও কংগ্রেস- দুই দলেই বেসুর বাজতে শুরু করেছে। রাহুল গাঁধীকে আড়াল করে তড়িঘড়ি ইস্তফার কথা ঘোষণা করলেন কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অজয় মাকেন। যাঁর বিরুদ্ধে গোটা ভোট-প্রক্রিয়া জুড়ে সরব হয়েছেন শীলা দীক্ষিত ও তাঁর অনুগামীরা। ভোটের ঠিক মুখে মাকেন ও রাহুল গাঁধীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিজেপিতেও যোগ দিয়েছেন অনেকে। পরাজয়ের পর প্রত্যাশিতভাবে কেজরীবালের দল বলল, এই জয় ‘মোদী-ঝড়’ নয়, ‘ইভিএম-ঝড়’। কারচুপি করেই ভোটে জিতেছে বিজেপি। যদিও সে দলেও ভগবন্ত মান থেকে কুমার বিশ্বাসরা বেসুরো গাইতে শুরু করেছেন।

প্রশ্ন হল, দিল্লিতে দশ বছর ক্ষমতাতে থেকেও কী করে আগের থেকেও বড় জয় মুঠিতে পুড়ল মোদীর দল?

বিজেপি নেতাদের মতে, রসায়ন তিনটি। এক, ভোটের আগেই সব প্রার্থীকে বদলে ফেলেছিলেন মোদী-অমিত শাহ। দশ বছরে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়াকে নতুন মুখ এনে এক ধাক্কায় মুছে ফেলেন মোদী। বোঝাতে চান, এই নতুন মুখ তাঁর টিম, তাঁর বিজেপি। দিল্লির উন্নয়ন হবে এ বারে তাঁর হাতেই। গুজরাতে মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ও মোদী ফি-বিধানসভায় এক চতুর্থাংশ প্রার্থী বদল করতেন।

আরও পড়ুন: কেজরীর গড়েও গেরুয়া গর্জন, দিল্লি পুরভোটে বিজেপির জয়জয়কার

বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে, কেজরীবালের থেকে মুখ ফেরাল দিল্লি

দিল্লিতে বিজেপি ঝড়ের এই কারণটা কী?

ইভিএম-কেই দুষল আপ, অজুহাতের রাজনীতির হার বলছে বিজেপি

দুই, ভোটের আগে সাফাই, জল-বিদ্যুৎ বিলে মাফ, রোগ-ভোগ নিরাময়ের মতো বিষয় কেজরীবাল যতই সামনে আনার চেষ্টা করুন, বিজেপি ভরসা জাগিয়েছে শুধুই মোদী-নামে। আর হাতে গরম উত্তরপ্রদেশের জয়ের রেশকে মিটতে না দিয়ে সেটিকেই পুঁজি করেছে।

তিন, অমিত শাহের মাইক্রো-ম্যানেজমেন্ট। ওয়ার্ড ধরে ধরে থাবা বসানোর অঙ্ক কষেছেন আপ-কংগ্রেসের গড়ে। মনোজ তিওয়ারির মতো সেলিব্রিটিকে রাজ্য সভাপতি করে পূর্বাঞ্চলীদের মন জয়ের চেষ্টা করেছেন। মোদীর গরিব-কল্যাণ কর্মসূচি নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন বস্তিতেও, যে ভোটব্যাঙ্ক আগে ছিল কংগ্রেসের হাতে। আর পরে যা ছিনিয়ে নেন কেজরীবাল।

কলকাতায় অমিত শাহ আজ জয়ের কৃতিত্ব দেন মোদীকেই। আর কেজরীকে নিশানা করে বলেন, নেতিবাচক রাজনীতির পরাজয়। বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘কেজরীবালই একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যাঁর হাতে কোনও দফতর নেই। আর খালি মাথা শয়তানের বাসা। সকালে ঘুম থেকে উঠে আর রাতে ঘুমোনোর আগে মোদী-মোদী করাই তাঁর একমাত্র কাজ ছিল। লোক তাই মোদীকেই দু’হাত ভরে ভোট দিয়েছে।’’ ভোটে হারলে ইটের জবাব ইটে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন কেজরী। আজ দিল্লির এক বিজেপি নেতা অনলাইনে দুটি ইটও পাঠিয়ে দিয়েছেন কেজরীবালকে। তবে দু’শোটি আসন না পেরোনোর আক্ষেপ রয়েছে দলের মধ্যে।

অন্য বিষয়গুলি:

Politics MCD MCD Poll Modi Delhi Amit Shah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE