ফাইল চিত্র।
পরিকাঠামোয় খরচের জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকার রাজ্যগুলিকে ১ লক্ষ কোটি টাকা বিনা সুদে ঋণ দেবে বলে বাজেটে ঘোষণা করেছে। কিন্তু তার সঙ্গে নানাবিধ শর্ত জুড়লে আখেরে লাভ হবে কি না, তা নিয়ে রাজ্যগুলির মধ্যেই সংশয় তৈরি হয়েছে।
কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলিকে রাজ্যের জিডিপি-র ৪% পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। রাজ্যগুলির হাতে যাতে যথেষ্ট অর্থ থাকে, তার জন্যই বাড়তি ঋণের অনুমতি। কিন্তু রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, আদতে ৪% ঋণের মধ্যে ০.৫% ঋণ মিলবে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ইচ্ছে মতো বিভিন্ন সংস্কার করলে। দেড় বছর আগেই কেন্দ্রীয় সরকার এই ঘোষণা করেছিল। কিন্তু অন্ধ্রপ্রদেশ, রাজস্থান ছাড়া আর কোনও রাজ্যই বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে সংস্কারে রাজি হয়ে প্রস্তাব জমা দেয়নি।
বাজেটে এ বার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘোষণা করেছেন, পরিকাঠামোয় খরচের জন্য রাজ্যগুলিকে ৫০ বছরের জন্য বিনা সুদে ঋণ দেওয়া হবে। বিরোধী দল শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা মনে করছেন, কেন্দ্র যদি চায়, রাজ্যগুলি পরিকাঠামোয় বেশি খরচ করুক, তা হলে তার জন্য অনুদান দিচ্ছে না কেন? তার বদলে মহাজনের মতো ঋণ দিচ্ছে কেন? কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের পাল্টা যুক্তি, অনুদান দিতে গেলে খরচ বেড়ে গিয়ে কেন্দ্রের রাজকোষ ঘাটতি লাগামছাড়া হবে বলেই ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান মুখ্য উপদেষ্টা অমিত মিত্র আগেই অভিযোগ তুলেছেন, কেন্দ্র ঋণ দিলেও শর্ত চাপাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, মূলত যে সব প্রকল্প মোদী সরকারের অগ্রাধিকারে রয়েছে, সেগুলিতেই খরচের দিকে জোর দেওয়া হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় ‘পিএম গতিশক্তি প্রকল্প’ তার মধ্যে থাকছেই। তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা, অপটিকাল ফাইবার নেটওয়ার্ক তৈরির কাজ শেষ করার প্রকল্পও থাকছে। আবাসন, নগর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে নানা রকম সংস্কারের দিকেও নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, এটা পুরোপুরি কেন্দ্রের নিজের কর্মসূচি রাজ্যের উপরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরুদ্ধে।
অর্থ মন্ত্রকের সূত্র বলছে, রাজ্যগুলিকে ১ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হলেও কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের জন্য অর্থসাহায্য খুব বেশি বাড়ছে না। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সূত্র মেনে কেন্দ্রের কর বাবদ মোট আয়ের ৪১ শতাংশ অর্থও রাজ্যগুলিকে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ কেন্দ্রের করের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ সেস, সারচার্জের নামে আদায় হচ্ছে। যা রাজ্যগুলির সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার দরকার নেই। চলতি অর্থ বছরে যেমন কেন্দ্রীয় কর বাবদ মোট আয়ের মাত্র ২৯.৬ শতাংশ রাজ্যগুলির মধ্যে বিলি হবে। অর্থ কমিশনের নির্দেশিত ৪১ শতাংশের অনেক কম।
অর্থ মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যগুলিকে দেওয়া অর্থের পরিমাণও খুব সামান্য বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় চলতি অর্থ বছরে তা প্রায় ৫.৮ শতাংশ বেড়েছিল। কিন্তু আগামী বছরে তা মাত্র ২ শতাংশ বাড়বে। একই ভাবে অর্থ কমিশনের অনুদান গত বছরের ১.৮৪ লক্ষ কোটি টাকা থেকে বেড়ে চলতি বছরে ২.১১ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছিল। আগামী বছরে তা ১.৯২ লক্ষ কোটি টাকায় নেমে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy