রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে শরদ পওয়ার। ছবি: পিটিআই
উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে শরদ পওয়ারের বৈঠক। তার আগে আবার রাজভবনে গিয়ে ‘চা চক্রে’ যোগদান পওয়ারের। পর পর এই বৈঠক ঘিরে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি নিয়ে শুরু হল তুমুল জল্পনা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং লকডাউন ঘিরে শিবসেনা, এনসিপি, কংগ্রেসের জোট সরকারে টানাপড়েন শুরু হয়েছে বলে গুঞ্জন নানা মহলে। সুযোগ খুঁজতে ময়দানে নেমে পড়েছে পদ্ম শিবিরও। যদিও এনসিপি এবং শিবসেনা উভয়ের তরফেই দাবি করা হয়েছে, সরকারে সঙ্কট নেই। বিধায়করা জোটের সঙ্গেই রয়েছেন। কিন্তু তাতেও জল্পনা থামেনি। বরং কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশের পথেই কি এগোচ্ছে মহারাষ্ট্র— নানা মহলে এমন চর্চাও শুরু হয়ে গিয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের গোড়া থেকেই কার্যত শীর্ষে মহারাষ্ট্র। বর্তমানে দেশের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি আক্রান্ত ও মৃত রয়েছে এই রাজ্যেই। এনসিপি সূত্রে খবর, এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের উপর অসন্তোষ বাড়ছিল শরদ পওয়ারের দলের। তার উপর সম্প্রতি উদ্ধব ঘোষণা করেছেন, ধীরে ধীরে লকডাউন খুলে দেওয়া হবে। পওয়ারের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, যেখানে এখনও প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা, সেখানে লকডাউন তুলে নেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন না শরদ পওয়ার। এই নিয়েই উদ্ধবের দলের সঙ্গে প্রায় সঙ্ঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়।
এই পরিস্থিতিতেই দলের আরেক নেতা প্রফুল পটেলকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেন শরদ পওয়ার। তার পর যান উদ্ধবের বাসভবন মাতশ্রীতে। সেখানে তাঁর সঙ্গেও এক প্রস্থ আলোচনা করেন। এই দুই বৈঠক ঘিরে জোট শরিকদের মধ্যে সঙ্ঘাতের জল্পনা তৈরি হয়। এমনকি, সরকার ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনাও উঠে আসে নানা মহলের চর্চায়। যদিও মারাঠা স্ট্রং ম্যান শরদ পওয়ার সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘‘দেবেন্দ্র ফড়নবীস অধৈর্য হয়ে পড়ছেন। কিন্তু মহারাষ্ট্র সরকারে কোনও সঙ্কট নেই। সব বিধায়ক আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। এই সময়ে তাঁদের ভাঙানোর চেষ্টা করলে জনগণ তাঁকে উচিত শিক্ষা দেবেন।’’
আরও পড়ুন: হাওড়া, কলকাতা সচল হতেই শিকেয় দূরত্ব বিধি, বাড়ছে করোনা শঙ্কা
অন্য দিকে শিবসেনার আর এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও সাংসদ সঞ্জয় রাউতের টুইট, ‘‘দুই নেতার মধ্যে দেড়ঘণ্টার মতো কথা হয়েছে। সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে কেউ কোনও খবর ছড়ানোর চেষ্টা করলে সেটা তাঁর পেটব্যথা। সরকার শক্তিশালী। কোনও সমস্যা নেই।’’
কিন্তু তা হলে শরদ পওয়াররা রাজভবনে গেলেন কেন? বিশেষ করে গত বছর তিন দলের জোট সরকার গঠনের পর থেকে এক বারও যেখানে রাজভবনে যাননি, তখন এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। যদিও রাজভবনের বৈঠকের সঙ্গে সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই জানিয়ে প্রফুল পটেলের জবাব, ‘‘এটা রাজ্যপাল ও শরদ পওয়ারের মধ্যে নেহাতই সৌজন্য বৈঠক। আমরা সেখানে গিয়েছিলাম চা খাওয়ার জন্য। রাজ্যপাল শরদ পওয়ারকে চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আমরা সেই সৌজন্য রক্ষা করতেই গিয়েছিলাম। এর মধ্যে রাজনীতির কোনও বিষয় নেই।’’
আরও পড়ুন: গালওয়ানে সেনা তৎপরতা চিনের, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধ পরিস্থিতি
তবে প্রফুল পটেলের দ্বিতীয় মন্তব্যে জল্পনা বেড়েছে। তিনি বলেছেন, রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল ভাল কাজ করছেন। অথচ এই রেলমন্ত্রীর সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ও তাঁর দলের টানাপড়েন চলছে। মহারাষ্ট্রে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজেদের রাজ্যে ফেরানোর জন্য পর্যাপ্ত ট্রেন রেলমন্ত্রী দিচ্ছেন না বলে একাধিক বার আক্রমণ শানিয়েছে শিবসেনা। পাল্টা রেলমন্ত্রীও উদ্ধবের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। অথচ উদ্ধব সরকারেরই শরিক দল হয়ে এনসিপি নেতা প্রফুল পটেলের রেলমন্ত্রীর প্রশংসা সেই জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, করোনাভাইরাসের মোকাবিলা এবং লকডাউন নিয়ে ‘মহা বিকাশ অগধি’র অন্দরে যে টানাপড়েন শুরু হয়েছে সেটা প্রায় স্পষ্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy