Advertisement
১৯ জানুয়ারি ২০২৫

সনিয়া-মমতা সেই রসায়ন

তিন দশক আগে রাজধানী দিল্লিতে নির্জোট দেশগুলির (ন্যাম) সম্মেলন মঞ্চ। রাজীব গাঁধী তখন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে হাজির তৎকালীন সর্বভারতীয় যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৭ ০৩:২০
Share: Save:

তিন দশক আগে রাজধানী দিল্লিতে নির্জোট দেশগুলির (ন্যাম) সম্মেলন মঞ্চ। রাজীব গাঁধী তখন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে হাজির তৎকালীন সর্বভারতীয় যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মঞ্চে ওঠার আগে কূটনৈতিক সৌজন্য অনুযায়ী আন্তর্জাতিক নেতাদের সঙ্গে তাঁর দলের নেতাদেরও পরিচয় করিয়ে দিলেন রাজীব। তার পর স্ত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গেও মমতার আলাপ করিয়ে দেন রাজীব। জাতীয় রাজনীতিতে তখনও ততটা সড়গড় নন সনিয়া। রাজীব মঞ্চে ওঠার আগে সনিয়াকে দেখিয়ে মমতাকে বলেছিলেন, ‘‘একটু খেয়াল রেখো।’’ আসনে সে দিন পাশাপাশি বসেছিলেন সনিয়া-মমতা। সেই প্রথম আলাপ।

এ বার দিল্লিতে এসে ঘরোয়া শিবিরে সেই ‘প্রথম দেখার’ স্মৃতিচারণ করলেন তৃণমূল নেত্রী। আজ বিকেলে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে ১০ জনপথে গেলেন তিনি। জানালেন, ‘‘সনিয়াজির শরীর এখন আগের চেয়ে সুস্থ। আমি আগামী সপ্তাহে অথবা খুব শীঘ্রই তাঁর সঙ্গে আবার দেখা করব।’’

এর আগে বহু বার সনিয়ার বাংলোয় গিয়েছেন মমতা। সাধারণত উপহার হিসেবে বাংলার শাড়ি নিয়ে গিয়েছেন। আজ অবশ্য ফুল হাতে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। দু’মাস আগেই শেখ হাসিনার নয়াদিল্লি সফর উপলক্ষে রাজধানী এলেও সে বার সনিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি তাঁর।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, মতবিরোধ থাকলেও সনিয়ার নাম করে কখনও ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে দেখা যায়নি মমতাকে। রাহুল গাঁধীকে এক-দু’বার নিশানা করেছেন। ‘বসন্তের কোকিল’ও বলেছেন এক বার। উল্টো দিকে, সনিয়াও গত বছরের এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘মমতা-মোদী একই মুদ্রার দু’পিঠ। দুই অহঙ্কারী শক্তি বাংলার পক্ষে বিপজ্জনক।’’ তবে সেটা জনসভার নির্বাচনী বক্তৃতা। এ সব দুই নেত্রীর দীর্ঘ দিনের রসায়নকে টাল খাওয়াতে পারেনি কখনও।

কলকাতায় এআইসিসি সম্মেলনে সোমেন মিত্র এবং সীতারাম কেশরী গোষ্ঠীর বিরোধিতা করে মমতা যখন দল ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন, সে সময়ে তাঁকে দলে রেখে দিতে শেষ মুহূর্তে নিজে আসরে নেমেছিলেন সনিয়া। পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অস্কার ফার্নান্ডেজ, অজিত পাঁজা এবং মমতাকে ডেকে পাঠান তিনি। তবে, রাত বেশি হয়ে যাওয়ায় নাইটগাউন পরে নিয়েছিলেন সনিয়া। সে জন্য তিনি শুধুমাত্র মমতাকেই নিজের ঘরে ডেকে নিয়েছিলেন। ভেতরের ঘরে ডেকে নিয়ে মমতাকে বুঝিয়ে বলেন, ‘‘এখনই ছেড়ো না। তোমাকে যাতে দলে রাখা যায় যাতে, আমি সেই চেষ্টাই করছি।’’

যদিও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।

আর আজ যখন সনিয়ার সঙ্গে দেখা করলেন মমতা, তখন রাজ্য স্তরে কংগ্রেস ও তৃণমূল পরস্পর যুযুধান। কিন্তু, বিজেপি-বিরোধী জোট তৈরি করার প্রশ্নে এই দুই নেত্রীর পুরনো রসায়ন আবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে— এমনটাই মনে করছেন রাজনীতির লোকজন।

অন্য বিষয়গুলি:

Sonia Gandhi Mamata Banerjee Delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy