Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
IIM Ahmedabad

অর্থাভাবকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে ক্যাটে দুর্দান্ত ফল আমদাবাদের এসি মেকানিকের ছেলের

রাজ়িনের স্বপ্নপূরণ হল এ বছরের ক্যাটে। পেলেন ৯৯.৭৮ পার্সেন্টাইল। নম্বর প্রাপ্তির নিরিখে যা দুর্দান্ত। দেশের সেরা দুই আইআইএম, আমদাবাদ বা বেঙ্গালুরুতে সুযোগ একপ্রকার নিশ্চিত।

মা, বাবার সঙ্গে রাজ়িন।

মা, বাবার সঙ্গে রাজ়িন। ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
আমদাবাদ শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২২ ১১:৩১
Share: Save:

বাবা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র মেরামতির কাজ করেন। মাসে আয় মেরেকেটে ২৫ হাজার টাকা। তাতেই এক কামরায় কোনও মতে চলে যায় চার জনের সংসার। কিন্তু বাড়ির বড় ছেলে ২২ বছরের রাজ়িন মনসুরির পরিকল্পনা ছিল অন্য। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সংসারে সমৃদ্ধি আনতে চেয়েছিলেন। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। হাজার প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে এ বারের ‘কমন অ্যাডমিশন টেস্ট’ (ক্যাট) পরীক্ষায় দুর্দান্ত ফল করলেন রাজ়িন। সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা আমদাবাদ বা বেঙ্গালুরু আইআইএমে।

আমদাবাদের জুহাপুরা এলাকা। এসি মেকানিক বাবা, গৃহকর্ত্রী মা ও এক ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন রাজ়িন। বাড়িতে অর্থকষ্ট নিত্যসঙ্গী। যদিও তা কখনওই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি রাজ়িনের সামনে। ছেলেবেলা থেকেই পড়াশোনায় দুর্দান্ত। এতই মেধাবী যে কোথাও কোচিং না নিয়ে কেবল বৃত্তির ভরসায় এত দূর পড়ে ফেলেছেন তিনি। রাজ়িনের স্বপ্ন ছিল ম্যানেজমেন্ট পড়ার। সেই লক্ষ্যে গত বছর ক্যাট দেন তিনি। তাতেও বেশ ভাল ফল করেন। সুযোগ পেতে পারতেন আইআইএম উদয়পুরে। কিন্তু রাজ়িন চাইতেন সেরা হতে!

অতঃপর আবার পড়া শুরু। রাজ়িনের মেধা আঁচ করে তাঁকে অর্ধেক খরচে কোচিং দেন এক শিক্ষক। অর্থ দিয়ে না হলেও বাকি সব রকম ভাবেই ছেলের পাশে ছিলেন মা, বাবা। সেই রাজ়িনের স্বপ্নপূরণ হল এ বছরের ক্যাটে। পেলেন ৯৯.৭৮ পার্সেন্টাইল। এ বার দেশের সেরা দুই আইআইএম, আমদাবাদ বা বেঙ্গালুরুতে সুযোগ পাওয়া নিশ্চিত।

রাজ়িন বলেন, ‘‘আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তাই হাই স্কুলে পড়ার সময় থেকেই আমার লক্ষ্য থাকত, যে করে হোক বৃত্তি পেতেই হবে। সে ভাবেই স্কুলের পড়াশোনা শেষ করি। তার পর আমদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেধাবৃত্তি পেয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করি। তার পরই অবশ্য একটা চাকরি পেয়েছিলাম। তাঁরা বছরে ৬ লক্ষ টাকা দেবেন বলেছিলেন। কিন্তু আমি চেয়েছিলাম আরও ভাল কিছু করতে। তাই ম্যানেজমেন্ট পড়ব ঠিক করি।’’ কিন্তু অর্থের অভাবে গত বছর ক্যাটের প্রস্তুতিতে কোচিং নিতে পারেননি রাজ়িন। তার ফলে আইআইএম আমদাবাদ বা বেঙ্গালুরুতে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। অতঃপর আবার পড়ার টেবিলে ফেরেন রাজ়িন। তাঁর মেধা দেখে তাঁকে অর্ধেক খরচে পড়ানো শুরু করেন কোচিং সেন্টারের এক শিক্ষক। কাউকে হতাশ করেননি রাজ়িন। তিনি বলছেন, ‘‘এটাই তো লক্ষ্য ছিল। অবশেষ লক্ষ্যপূরণ করতে পেরে আনন্দিত। কিন্তু কাজ এখনও অনেক বাকি। আমার মতো লড়াই করে যাঁরা নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের পাশে থাকতে চাই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

IIM Ahmedabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE