Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Siddaramaiah

মোদীর খয়রাতি তোপের পাল্টা দুর্নীতি-তির সিদ্দার

কংগ্রেসের খয়রাতির রাজনীতির ‘কুফল’ নিয়ে গত কাল সরব হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাল্টা আক্রমণে কর্নাটকে বিজেপি সরকারের সময়কালে হওয়া দুর্নীতির সমালোচনায় মুখর হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া।

সিদ্দারামাইয়া।

সিদ্দারামাইয়া। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৬:৪১
Share: Save:

কংগ্রেসের খয়রাতির রাজনীতির ‘কুফল’ নিয়ে গত কাল সরব হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাল্টা আক্রমণে কর্নাটকে বিজেপি সরকারের সময়কালে হওয়া দুর্নীতির সমালোচনায় মুখর হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। তিনি বলেন, ‘‘গত (বিজেপি) সরকার ছিল ৪০ শতাংশ কমিশনের সরকার। আমাদের সরকার কমিশনরাজ খতম করে সেই টাকা জনহিতে খরচ করছে।’’

কর্নাটকে ক্ষমতায় আসার আগে কংগ্রেস যে পাঁচটি জনমোহিনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার মধ্যে একটি হল ‘শক্তি প্রকল্প’। যে যোজনায় রাজ্যের মহিলারা কর্নাটকে বিনামূল্যে সফর করার সুযোগ পান। কিন্তু এতে প্রভূত রাজস্ব ক্ষতি হওয়ায় সম্প্রতি দলের বৈঠকে ওই যোজনাটি পর্যালোচনা করার দাবি তোলেন উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার। যার ভিত্তিতে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে দলীয় নেতৃত্বকে নির্দেশ দেন, ভোট প্রচারে এমন প্রতিশ্রুতি দিতে, যা বাস্তবে পূরণ করা সম্ভব হয়। মূলত খড়্গের ওই বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই গত কাল সামগ্রিক ভাবে হিমাচলপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, কর্নাটকের মতো রাজ্যে, যেখানে কংগ্রেসের সরকার রয়েছে, সে সব সরকারের আর্থিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে বলে সরব হন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘অবাস্তব প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন যে সম্ভব নয়, তা কংগ্রেস বুঝতে পেরেছে। ...মানুষের কাছে ধরা পড়ে গিয়েছে কংগ্রেস।’’ চলতি সপ্তাহে কর্নাটকের ধাঁচে ভোটমুখী মহারাষ্ট্রেও একাধিক প্রকল্প ঘোষণা করার কথা রয়েছে কংগ্রেসের। তার আগে খড়্গের ওই মন্তব্য স্বভাবতই হাতিয়ার তুলে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপির হাতে।

পাল্টা আক্রমণে আজ বিজেপি শাসনে কর্নাটকের দুর্দশার ইতিহাসকে তুলে ধরে সরব হয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসের দিকে আঙুল তোলার আগে বিজেপি-শাসিত কর্নাটকের দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা দেখে নিন। আমরা প্রত্যেকটি প্রতিশ্রুতি পালন করে চলেছি। যে পাঁচটি প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তার জন্য ৫২ হাজার কোটি টাকা যেমন খরচ হচ্ছে, তেমনই কর্নাটকের সার্বিক উন্নয়নে ৫২,৯০৩ কোটি খরচ বরাদ্দ করা হয়েছে।’’ কংগ্রেস শিবিরের অভিযোগ, আগের সরকার ছিল ৪০ শতাংশ কমিশনের সরকার। মন্ত্রী-আমলাদের প্রকল্পের ৪০ শতাংশ অর্থ ঘুষ হিসাবে দিতে হত ঠিকাদারের। সিদ্দারামাইয়ার দাবি, বর্তমান সরকার সেই ৪০ শতাংশ অর্থকে জনকল্যাণে কাজে লাগাচ্ছে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আপনার সাফল্য কি ছিল? দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া, কর্নাটকের উপরে ধারের বোঝা বৃদ্ধি করা এবং সবশেষে ব্যর্থতা লুকিয়ে ফেলতেভুয়ো প্রচার?’’

কেবল বিজেপি-শাসিত রাজ্যই নয়, সার্বিক ভাবে কেন্দ্রীয় অর্থনীতি যে মোটেই ভাল জায়গায় নেই, সেই দাবিও করেছেন সিদ্দারামাইয়া। মোদীকে আক্রমণ শানিয়ে সিদ্দারামাইয়া বলেন, ‘‘আপনার আমলে ভারতের উপর ধারের বোঝা ২০২৫ সালের মধ্যে ১৮৫.২৭ ট্রিলিয়নে পৌঁছবে। যা জিডিপির ৫৬.৮ শতাংশ। প্রশাসনিক ব্যর্থতার পাশাপাশি আপনার সরকারের ব্যর্থ নীতি ভারতবাসীর মাথায় করের বোঝা চাপিয়ে চলেছে।’’ পাশাপাশি মোদী সরকারের সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ব্যর্থতা তথা কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়েও সরব হয়েছেন সিদ্দারামাইয়া। তবে সিদ্দারামাইয়া একা নন, কেন্দ্রের এই আর্থিক বঞ্চনার বিরুদ্ধে এ নিয়ে অতীতে একাধিক বার সরব হতে দেখা গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমন্ত সোরেনের মতো বিরোধী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের। আজ সিদ্দারামাইয়া বলেন, ‘‘কর্নাটক কেন্দ্রকে ১ টাকা রাজস্ব দিলে মাত্র ১৩ পয়সা ফেরৎ পায়! এটা সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো হতে পারে না। এটা লুট!’’ পাল্টা কংগ্রেসকে আক্রমণ শানিয়ে বিজেপি সাংসদ সুধাংশু ত্রিবেদী বলেন, ‘‘কংগ্রেসের নীতি যে ব্যর্থ হচ্ছে, তা মল্লিকার্জুন খড়্গের কথা থেকেই স্পষ্ট। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে যে দেশের অর্থনীতি রসাতলে যাবে, তা কংগ্রেস-শাসিত রাজ্যগুলির আর্থিক অবস্থা থেকে স্পষ্ট।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Siddaramaiah PM Narendra Modi Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE