ছবি: পিটিআই।
কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরোনোর পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারের সঙ্গে সাংবাদিকদের কথাবার্তা—
প্রশ্ন: শিবসেনার সঙ্গে মিলে সরকার গড়া নিয়ে কথা হল?
উত্তর: কারও সঙ্গে সরকার গড়া নিয়ে তো কথা হয়নি। কার কত সংখ্যা, পরিস্থিতি কী, তা নিয়ে কথা হল।
প্রশ্ন: তা হলে এখনও অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মতভেদ কাটেনি?
উত্তর: কিসের অভিন্ন কর্মসূচি?
প্রশ্ন: কংগ্রেস-এনসিপি-শিবসেনা মিলে যে সমন্বয়ের এত বৈঠক হল!
উত্তর: বিধায়কেরা নিজেদের মধ্যে দেখা করেছেন হয়তো।
প্রশ্ন: তিন দলের বৈঠকের ছবি তো ঘটা করে প্রকাশ হয়েছে।
উত্তর: যাদের সরকার গড়ার কথা, গড়েনি। তাই হয়তো ভাবছে, ‘এ কী হল’?
প্রশ্ন: উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গেও তো আপনার কথা হয়েছে!
উত্তর: হ্যাঁ। কী হয়েছে বলব না।
প্রশ্ন: যদি বিজেপি সরকার গড়ে ফেলে?
উত্তর: ছয় মাস সময় আছে।
সনিয়া-পওয়ারের বহু প্রত্যাশিত বৈঠকের আগেই আজ সংসদের সেন্ট্রাল হলে শরদ পওয়ার এক ঘণ্টা কথা বলেন শিবসেনার সঞ্জয় রাউতের সঙ্গে। রাতে নিজের বাড়ি থেকে সাংবাদিকদের বিদায় জানিয়ে ফের রাউতকে ডেকে পাঠান। অথচ সনিয়ার সঙ্গে বৈঠকের পরে বেমালুম অস্বীকার করে গেলেন সব। প্রশ্ন উঠেছে, কেন এই ভোলবদল?
আরও পড়ুন: নয়া পোশাকে ভোলবদল রাজ্যসভায় মার্শালদের, শুরু বিতর্ক
মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস-এনসিপি ও শিবসেনার সরকার গড়ার পথে জট কি এখনও কাটেনি? না কি বিজেপি এখনও সরকার গড়ার তালে আছে? কাল যে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন খোদ অমিত শাহ। শিবসেনা কি এখনও আশায় আছে, বিজেপির সঙ্গে মিলে সরকার হতে পারে? তারা কি গোপনে বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে? মোদীর মন্ত্রিসভা থেকে শিবসেনার মন্ত্রী ইস্তফা দিলেও আজ দিনভর সংসদে বিজেপির সঙ্গে সখ্যও দেখা গেল সেনা-সদস্যদের। সেনা-সাংসদদের আসন বদল করে বিরোধী শিবিরে পাঠিয়ে দেওয়া নিয়ে আজ সকালে সঞ্জয় রাউতই আক্ষেপ করেন, ‘‘বিজেপি ঠিক করবে, কাকে এনডিএ থেকে বের করবে? আমরা সব চেয়ে পুরনো শরিক। সুখে-দুঃখে ছিলাম!’’ আবার এই শিবসেনাই আজ ‘আনুষ্ঠানিক ভাবে’ বিরোধী দল হয়েছে। আর্থিক সঙ্কট নিয়ে তৃণমূলের নোটিসে সই করেছে। সকালে সংসদে শিবাজি মূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। সেই কৃষকদের সমস্যা নিয়েই সংসদের ভিতরেও সরব হয়ে কক্ষত্যাগ করেছে। কিন্তু কংগ্রেস যে বিক্ষোভ দেখিয়েছে, তাতে শামিল হয়নি। মাতোশ্রীরও নির্দেশ, বিজেপির বিরুদ্ধে কোনও ব্যক্তিগত আক্রমণ যেন না করেন সেনা-সাংসদেরা।
এরই মধ্যে আবার রাজ্যসভার ২৫০তম অধিবেশন উপলক্ষে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এনসিপির তারিফ করেন। বলেন, সংসদে বিরোধ দেখানোর জন্য কখনও ওয়েলে নেমে আসেনি পওয়ারের দল। যদিও বিষয়টিকে লঘু করে পওয়ার বলেন, ‘‘ওয়েলে না-নামা তো আমাদের দলের নীতি। প্রধানমন্ত্রী সেটিই বলেছেন।’’ তা হলে কি বিজেপি-এনসিপি-রও সরকার হতে পারে? পওয়ার বলেন, ‘‘বিজেপিই আমাদের প্রধান বিরোধী।’’
তা হলে সনিয়ার সঙ্গে বৈঠকে কী হল? পওয়ার বললেন, ‘‘কংগ্রেস-এনসিপির সঙ্গে আরও কিছু ছোট দল একসঙ্গে ভোটে লড়েছে। তাদের সঙ্গেও কথা হবে।’’ বৈঠকের পর কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাও বললেন, ‘‘দুই এক দিনের মধ্যে দুই দলের কিছু নেতা মিলে কথা বলবেন।’’ প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে সরকারটা কবে হবে?
মহারাষ্ট্রের নেতারা বলছেন, সময় নেওয়া হচ্ছে, যাতে দুই বিপরীত আদর্শের দল একসঙ্গে এলে নেতা-কর্মীদের মধ্যে সমস্যা না হয়। বিজেপি যাতে ভাঙাতে না পারে। ঝুলিয়ে রেখে শরদ পওয়ারও উদ্ধব ঠাকরেকে আরও নমনীয় করতে চাইছেন, যাতে মন্ত্রক বণ্টন নিয়ে সমস্যা না হয়। কংগ্রেসের আশঙ্কা— পওয়ার সব ক্ষমতা নিজের হাতে রাখলে কংগ্রেসের কী হবে? পওয়ার বিজেপির হাতে খেলছেন না তো? এমনিতেই কংগ্রেসের মধ্যে সেনা-সঙ্গ নিয়ে অসন্তোষ আছে। আজ জমিয়তে উলেমা-ই-হিন্দের সভাপতি আরশাদ মাদানি আবার সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখে সতর্ক করেছেন, শিবসেনার সঙ্গে যেন সরকার না করেন। সনিয়া আজও পওয়ারের সঙ্গে বৈঠকে এ কে অ্যান্টনিকে সঙ্গে রেখেছিলেন। যে অ্যান্টনি আগেই সতর্ক করেছিলেন, সেনার সঙ্গে গেলে কেরলে সংখ্যালঘু ভোট বিগড়ে যেতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy