Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
laxmi Puja 2022

তিন পুরুষ ধরে লক্ষ্মীর পটচিত্র এঁকেও লক্ষ্মীলাভই চিন্তা লক্ষ্মীরানীর

সিপাহীজলা জেলার বিশালগড় মহকুমার রাউত খলার বাসিন্দা লক্ষ্মীরানী। ৩৫ বছর ধরে লক্ষ্মীর পট এঁকে বিক্রি করছেন তিনি। গোলবাজারে পট নিয়ে বসেছিলেন  তাঁর ছেলে বিপ্লব ও নাতি বিশালের সঙ্গে।

প্রবীণ শিল্পী লক্ষ্মীরানী পাল আগরতলা গোলবাজার এলাকায় লক্ষ্মীর পটচিত্র বিক্রি করছেন। ছবি: বাপী রায়চৌধুরী

প্রবীণ শিল্পী লক্ষ্মীরানী পাল আগরতলা গোলবাজার এলাকায় লক্ষ্মীর পটচিত্র বিক্রি করছেন। ছবি: বাপী রায়চৌধুরী

বাপী রায়চৌধুরী
আগরতলা শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২২ ০৮:২৬
Share: Save:

দুর্গোৎসবে আধুনিকতার ছোঁয়া আজ প্রকট। তবু কিছু কিছু উপাচার মেনে চলতে প্রাচীন সংস্কৃতির দিকে এখনও ছুটে যায় বাঙালি। দুর্গাপুজোর পরে এ বার লক্ষ্মীপুজো আসন্ন। ত্রিপুরার আগরতলায় তাই লক্ষ্মীপুজোর বাজার জমে উঠেছে। বর্তমানে অন্যান্য জিনিসের মতো মাটির প্রতিমার দামও বেড়েছে। তেমনই আগের চেয়ে বেড়েছে পটের লক্ষ্মীর দামও। কারণ পটশিল্পের কাঁচামালের দামও তো ঊর্ধ্বমুখী।

পটচিত্র প্রাচীন শিল্প। তাকে এখনও গ্রামীণ শিল্পীরাই বাঁচিয়ে রেখেছেন। এই শিল্পকে নির্ভর করেই তাঁদের জীবনধারণ। আগরতলার সবচেয়ে বড় বাজার হল গোলবাজার। সেই বাজারেই লক্ষ্মীপ্রতিমা নিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।

বাজারের আর এক দিকে দেখা গেল, লক্ষ্মীর পটচিত্র নিয়ে বসে অল্প কয়েক জন। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন শিল্পী তথা বিক্রেতা লক্ষ্মীরানী পাল। পটচিত্র কেমন বিক্রি হচ্ছে জানতে চাওয়া হলে প্রৌঢ়া জানালেন, আগের তুলনার চাহিদা কিছুটা কম। কিন্তু পটের দাম না বাড়িয়ে উপায় নেই। কারণ, কাঁচামালের দাম অত্যধিক বেড়ে গিয়েছে। লক্ষ্মীরানীর আক্ষেপ, আগে একটি পটচিত্র ৫০ টাকায় বিক্রি করেও অনেক লাভ হত। কিন্তু কাঁচামালের দাম এতই বেড়েছে যে, বর্তমান সময়ে একই পটচিত্র ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করেও ঘরে কিছুই থাকে না।

সিপাহীজলা জেলার বিশালগড় মহকুমার রাউত খলার বাসিন্দা লক্ষ্মীরানী। গত ৩৫ বছর ধরে লক্ষ্মীর পট এঁকে বিক্রি করছেন তিনি। গোলবাজারে পটচিত্র নিয়ে বসেছিলেন তাঁর ছেলে বিপ্লব ও নাতি বিশালের সঙ্গে। তাঁদের নিয়ে ওই এলাকার পাঁচটি পরিবার এখনও পটশিল্পের কাজ করেই জীবনধারণ করে। সেই পাঁচটির মধ্যে তিনটি পরিবারের সদস্যেরা এ বার গোলবাজারে এসে পটচিত্র বিক্রি করছেন। লক্ষ্মীরানীরা জানালেন, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার পাইকারেরা সরাসরি বিশালগড়ে এসেও আগে থেকে পটচিত্র কিনে নিয়ে যান। তবে গত দু’বছরে করোনার প্রকোপের কারণে সে ভাবে পটচিত্র বিক্রি করা যায়নি। ফলে বেশ লোকসানই হয়েছিল।

তা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত তিন পুরুষের পেশা ছাড়েননি লক্ষ্মীরানী পাল ও তাঁর উত্তরসূরিরা। মায়ের থেকে কাজ শিখেছেন ছেলে। ছেলের পরে নাতি। রামঠাকুর কলেজে এডুকেশন নিয়ে প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন লক্ষ্মীরানীর নাতি বিশাল।

পড়াশোনার পাশাপাশিই ঠাকুমার সঙ্গে পট আঁকায় হাত লাগিয়েছেন তিনি। মূলত বিশালই এ বারের পটচিত্রগুলি এঁকেছেন। কিন্তু লক্ষ্মীর ছবি এঁকে লক্ষ্মীলাভ হবে কি? সেই প্রশ্ন এখনও ভাবাচ্ছে বাস্তবের লক্ষ্মীরানীকে।

অন্য বিষয়গুলি:

laxmi Puja 2022 silchar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy