মাধবী বুচ। — ফাইল চিত্র।
বিরোধীদের তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। আর তা সত্য প্রমাণিত করে বৃহস্পতিবার সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি)-র বৈঠকে গরহাজির রইলেন শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি-প্রধান মাধবী পুরী বুচ। ঘটনার জেরে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে বিজেপি এবং কংগ্রেসের।
মাধবীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি একাধিক বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এই আবহেই তাঁকে পিএসির পর্যালোচনা বৈঠকে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু পিএসির চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস সাংসদ কেসি বেণুগোপালকে চিঠি লিখে জানান ‘জরুরি কাজের কারণে’ বৈঠকে হাজিরা দিতে পারছেন না তিনি। মাধবীর অনুপস্থিতির কারণে বেণুগোপাল বৈঠক মুলতুবি করে দিলে বিজেপি এবং বিরোধী সাংসদদের বাদানুবাদ হয়।
সম্প্রতি পিএসি পুনর্গঠনের পর চেয়ারম্যান হয়েছিলেন বেণুগোপাল। প্রথম পর্যালোচনা বৈঠকটিই বৃহস্পতিবার মুলতুবি করে দেন তিনি। কেরলের কংগ্রেস সাংসদ বলেন, ‘‘কমিটির প্রথম বৈঠকেই আমরা আমাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির কাজ পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমরা সেবির পর্যালোচনার জন্য আজ একটি সভা ডেকেছি। আমরা সংশ্লিষ্টদের কাছে একটি নোটিস পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা সভা থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন, যা আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি।’’ এর পরে পিএসি চেয়ারম্যানের বক্তব্য, ‘‘আজ সকাল সাড়ে ৯টায়, আমরা সেবি প্রধান এবং অন্য সদস্যদের কাছ থেকে তথ্য পেয়েছি যে ব্যক্তিগত জরুরি কারণে তিনি দিল্লি ভ্রমণের অবস্থায় নেই। অনুরোধটি যে হেতু এক জন মহিলা করেছেন, তা বিবেচনা করে আমরা আজকের বৈঠকটি মুলতুবি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
প্রসঙ্গত, আমেরিকার কর্পোরেট তথ্যানুসন্ধান সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টে সেবি কর্তা মাধবী ও তাঁর স্বামী ধবল বুচের বিরুদ্ধে কয়েক মাস আগে কিছু অভিযোগ তোলা হয়েছিল। ওই রিপোর্টে বলা হয়, শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি-র পর্ষদ সদস্য ও চেয়ারপার্সন হওয়ার পরেও নিজের উপদেষ্টা সংস্থা আগোরা অ্যাডভাইজ়রিতে মাধবী নিজের অংশীদারিত্ব বহাল রেখেছিলেন। রিপোর্টে দাবি, ওই ভারতীয় উপদেষ্টা সংস্থাটি বিভিন্ন দেশীয় শিল্পকে পরামর্শ দিয়ে আয় করে। অংশীদার হিসেবে সেই আয়ের শরিক হন মাধবী ও তাঁর স্বামী ধবল। সেই সঙ্গে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের দাবি, যে বিদেশি ও অখ্যাত লগ্নিকারী সংস্থার মাধ্যমে আদানি গোষ্ঠীর নথিভুক্ত সংস্থাগুলিতে পুঁজি ঢেলে তাদের শেয়ারের দাম কৃত্রিম ভাবে বাড়ানো হয়েছিল, তাতে বুচ দম্পতির লগ্নি ছিল।
মাধবী ২০২২ থেকে সেবির চেয়ারপার্সন পদে রয়েছেন। সেবির পরিচালন পর্ষদের সদস্য হওয়ার আগে মাধবী একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে কর্মরত ছিলেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে সেবি প্রধানকে বিঁধেছিল কংগ্রেসও। সেপ্টেম্বরের গোড়ার দিকেই দেশের প্রধান বিরোধী দলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, সেবির পরিচালন পর্ষদের পূর্ণ সময়ের সদস্য হওয়ার পরেও নিয়মিত ভাবে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে বেতন নিয়ে গিয়েছেন মাধবী। বিরোধীদের অভিযোগ, সরকারি নিয়ামক সংস্থার পদে থেকে মাধবীর এই কাজ বেআইনি। যদিও বিজেপির সাংসদ নিশিকান্ত দুবের দাবি, পিএসি এক্তিয়ার-বহির্ভূত কাজ করেছে। পিএসির সদস্য নিশিকান্ত এর আগে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে এই বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। যার বক্তব্য ছিল, এ ভাবে কোনও স্বয়ংশাসিত সংস্থার প্রধানকে ডেকে পাঠানো যায় না। ঘটনাচক্রে, তার পরেই বৈঠক এড়ালেন মাধবী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy