Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
India

School: সীমানার ও-পারে ওড়িশায় স্কুল চলছে, এ-পারেই বন্ধ

পথচলতি মানুষ দেখছেন, বালেশ্বর জেলার তালসারির রাস্তায় বইখাতার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে পড়ুয়ারা। কচিকাঁচাদের হাত ধরে চলেছেন মা-বাবা।

ক্লাস চলছে বালেশ্বরের পদ্মপুর ইউপি ইউ জি স্কুলে।

ক্লাস চলছে বালেশ্বরের পদ্মপুর ইউপি ইউ জি স্কুলে। নিজস্ব চিত্র।

আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২২ ০৭:১৫
Share: Save:

পড়শি দুই রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গ আর ওড়িশা। পরিধি আরও সংক্ষিপ্ত করে আনলে বলতে হয় পড়শি দুই জেলা। বঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর আর ওড়িশার বালেশ্বর। মাঝখানে রাস্তা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থেকে ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, নানা বিষয়ে মিল এত যে, গুনে শেষ করা যায় না। কিন্তু ইদানীং একটা বড় পার্থক্য দেখা যাচ্ছে ঠিক সকালবেলা। এ-পারে স্কুল বন্ধ ও-পারে খোলা।

পথচলতি মানুষ দেখছেন, বালেশ্বর জেলার তালসারির রাস্তায় বইখাতার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে পড়ুয়ারা। কচিকাঁচাদের হাত ধরে চলেছেন মা-বাবা বা ঠাকুরদা-ঠাকুরমা। কিন্তু এ-পারের স্কুল বন্ধ। বেশ আগেই পড়ে গিয়েছে গরমের ছুটি।

পশ্চিমবঙ্গের সীমানা থেকে ওড়িশার বালেশ্বরের উচ্চ প্রাথমিক পদ্মপুর ইউপি-ইউজি স্কুলের দূরত্ব মেরেকেটে পাঁচ কিলোমিটার। রাস্তা ঘেঁষা এই দোতলা সরকারি স্কুলের বেশির ভাগ পড়ুয়ার পরিবারই আর্থিক ভাবে অসচ্ছল। শনিবার সকালে তখনও কয়েকটি ক্লাসে শিক্ষকেরা আসেননি। পড়ুয়ারাই ঝাঁটা হাতে নিজেদের শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার করছে। স্কুলের মাঠ পেরিয়ে হন্তদন্ত হয়ে চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস নিতে যাচ্ছিলেন বিজয় সোরেন। জানান, গরম পড়েছে বলে মর্নিং স্কুল চলছে। তবে গরমের ছুটি পড়বে জুন মাসের ছ’তারিখ থেকে।

চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিকে একঘরে বসিয়ে বিজ্ঞান ক্লাস নিচ্ছিলেন হরেকৃষ্ণ পাল। পড়ানোর ফাঁকে বলেন, “গত দু’বছর করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনায় ওরা খুব পিছিয়ে গিয়েছে। অনলাইন ক্লাস তো সে-ভাবে হয়নি। তাই এখন যথাসম্ভব ক্লাস করিয়ে ওদের দীর্ঘ কালের ঘাটতি পূরণ করার চেষ্টা করছি আমরা।”

অন্য শিক্ষকেরা জানান, এপ্রিলের শেষে খুব গরম পড়েছিল। তখন দিন কয়েক ছুটিও দেওয়া হয়। তার পরে ফের সকালে স্কুলের ব্যবস্থা হয়েছে। স্কুলে মিড-ডে মিলও দেওয়া হচ্ছে নিয়মিত। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র বিশ্বজিৎ প্রধানের সঙ্গে দেখা স্কুলের গেটের সামনে। বিশ্বজিৎ বলল “পড়াশোনা হয়। পাওয়া যায় টিফিনও। বাড়ির থেকে স্কুলেই বেশি ভাল লাগে।’’

পূর্ব মেদিনীপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা নানা কাজে এই সীমানায় আসেন। তাঁদের অনেকের আফসোস, আলাদা তো কিছুই নেই। এখানে গরম পড়লে ওখানেও গরম। অথচ ওরা দিব্যি স্কুল চালু রেখেছে। এ-পারে বন্ধ। দিঘা থেকে পর্যটক নিয়ে রোজই তালসারি আসেন টোটোচালক চন্দন সাহা। দুই ছেলের এক জন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে, অন্য জন সপ্তমে। দু’জনের স্কুলেই এখন গরমের ছুটি চলছে। ‘‘বাড়িতে কি পড়াশোনা হয়? প্রাইভেট টিউশন পড়াব, সেই সামর্থ্য নেই। সকালে বর্ডার পেরিয়ে ওড়িশার দিকে এসে রাস্তায় স্কুলপড়ুয়াদের দেখলে মন খারাপ হয়ে যায়। আমার ছেলেদের সেই কবে থেকে গরমের ছুটি চলছে। মিড-ডে মিলও বন্ধ। এত তাড়াতাড়ি এ দিকে স্কুল বন্ধ করার কী দরকার ছিল,’’ প্রশ্ন ক্ষুব্ধ টোটোচালকের।

অন্য বিষয়গুলি:

India Odisha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy