চিলড্রেন ব্যাঙ্কের ছাপ মারা সেই জাল নোট।
আট হাজার টাকা তুলতে স্টেট ব্যাঙ্কের এটিএমে কার্ড ঢুকিয়েছিলেন রোহিত কুমার। দক্ষিণ দিল্লির সঙ্গম বিহারের সেই এটিএম থেকে বেরিয়ে এল চারটি দু’হাজারি নোট। নোট হাতে নিতেই হতভম্ব রোহিত। নোটের ডান দিকের কোণে অশোকস্তম্ভটাই বিলকুল হাওয়া!
বিস্ময়ের এখানেই শেষ নয়। খুঁটিয়ে দেখতে গিয়ে রোহিতের মনে হচ্ছিল কেউ যেন নিদারুণ ঠাট্টা করেছে তাঁর সঙ্গে। নোটের উপরে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের জায়গায় লেখা ‘ভারতীয় মনোরঞ্জন ব্যাঙ্ক।’ আর বাঁ দিকে ইংরেজিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া পাল্টে হয়েছে ‘চিলড্রেন ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া।’ অশোকস্তম্ভের জায়গায় লেখা চূরণ লেবেল। নীচে বাঁ দিকে আবার সেই একই কথা। আপাত ভাবে গোলাপি রং, গাঁধীর ছবি, টাকার নম্বরে কোনও তফাৎ নেই।
নতুন দু’হাজারের নোট বাজারে আসার কয়েক দিনের মধ্যেই তার রঙিন ফোটোকপি ছড়িয়ে গিয়েছিল। তিন মাসের মধ্যে জাল দু’হাজারি নোটও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্ধার হচ্ছে। তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে এ বারের কারিকুরি। গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই অদ্ভুত নোট হাতে পেয়ে কালবিলম্ব না করে রোহিত সেগুলি দেখান এটিএমের রক্ষীকে। এমন আজগুবি নোট এটিএম থেকে বেরিয়েছে, মানতেই চাননি সেই রক্ষী। বাধ্য হয়ে রোহিত ১০০ ডায়াল করে পুলিশ ডাকেন।
আরও পড়ুন: ভাঙা সরকারি বাসে জমাটি ভোটযাত্রা, শেষমেশ ‘ফেভারিট’ সেই অখিলেশই
নোটগুলো দেখে পুলিশেরও চোখ ছানাবড়া। প্রথমে তাঁরাও পাত্তা দেননি রোহিতকে। সাব-ইন্সপেক্টর তাঁর সঙ্গে থাকা হেড-কনস্টেবলকে নিজের অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের কার্ড দিয়ে তখনই এটিএম থেকে টাকা তুলে আনতে বলেন। তখন যে নোট বেরলো, তাতে বাক্যিহারা পুলিশও।
আসল ২০০০ টাকার নোট
স্টেট ব্যাঙ্কের অবশ্য দাবি, সাধারণ ভাবে তাদের এটিএম থেকে জাল নোট বের হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ এটিএম-ই জাল নোট চিহ্নিত করে সরিয়ে ফেলতে পারে। এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে, তা এখনই বলতে পারছেন না ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। তদন্ত চলছে।
স্টেট ব্যাঙ্কের কর্তাদের অনেকের মতে, নোটগুলি কারও উৎকট রসিকতার ফসল। কারণ, মোদী সরকারের নোট নাকচের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে বিস্তর।
কিন্তু রসিকতাও যদি হয়, এহেন নোট ব্যাঙ্কের এটিএমে চলে এল কী ভাবে! এর মানে তো নজরদারি পুরোদস্তুর শিকেয়। অথবা সর্ষের মধ্যেই ভূত! গোটা ব্যবস্থাটা নিয়েই ছেলেখেলা করেছে নকল-রসিকরা!
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় নোট জাল করা, জালিয়াতি, প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সিল করে দেওয়া হয়েছে ওই এটিএমটিও। রোহিত ছাড়া আর কেউ এখনও পর্যন্ত এমন নোট পেয়েছেন বলে অভিযোগ জানাননি। সে ক্ষেত্রে ধরে নেওয়া যায়, পাঁচটি অদ্ভুতুড়ে নোট ঢোকানো হয়েছিল এটিএমে। যার চারটি পান রোহিত নিজে আর একটি পুলিশের কনস্টেবল।
আপাতত একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই কালঘাম ছুটছে পুলিশ এবং ব্যাঙ্ক-কর্তাদের। এটিএমে আজগুবি নোটগুলি ঢোকাল কে?
যে বেসরকারি সংস্থাটি এটিএমে নোট আনা-নেওয়ার কাজ করে তাদের কারও হাত এর পিছনে রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা পুলিশের। যে ব্যক্তি শেষ বার এটিএমে টাকা ভরেছিলেন, তাঁকে খুঁজে বার করার চেষ্টা চলছে। অর্থ মন্ত্রকও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং স্টেট ব্যাঙ্কের কাছ থেকে এই বিষয়ে রিপোর্ট চেয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy