Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Arunachal Pradesh

Indian Army: ক্যাপ্টেন সারিয়া! এই মেয়ের কাঁধেই এখন অরুণাচলের চিন সীমান্ত রক্ষার ভার

সারিয়ার ইউনিট দেশের অন্যতম প্রথম এএডি রেজিমেন্ট যাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে আধুনিক অবতারে ফেরা কিংবদন্তী এল-৭০ বিমানবিধ্বংসী বন্দুক।

সারিয়া আব্বাসি। নিজস্ব চিত্র।

সারিয়া আব্বাসি। নিজস্ব চিত্র।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২১ ০৬:১২
Share: Save:

বাবা তেহসিন আব্বাসি আকাশবাণী গোরক্ষপুরের প্রোগ্রাম হেড। মা রেহানা ভাটহাট এলাকার জুনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষক। ছোট ভাই তামসিল আহমেদ দিল্লিতে বিবিএ করছে। আইএমএস গাজিয়াবাদ থেকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বি-টেক পাশ করে বড় মেয়ে সারিয়া আব্বাসি নিশ্চিন্ত চাকরিতে ঢুকেছিলেন। চাকরির ডাক পাচ্ছিলেন বিদেশ থেকেও। কিন্তু মধ্যবিত্ত নিস্তরঙ্গ জীবন তো সারিয়ার বরাবর না-পসন্দ। তাঁর স্বপ্ন জুড়ে শুধুই জলপাই পোশাক আর বুকে-কাঁধে লাগানো তারা, মেডেলের সারি। চাকরি ছেড়ে, সেই অসম্ভব স্বপ্নকেই সম্ভব করে ফেলেছেন সারিয়া। উত্তরপ্রদেশের আকাশবাণী কর্তার মেয়ের কাঁধে এখন অরুণাচলপ্রদেশের চিন সীমান্তে আকাশ রক্ষার ভার!

মেয়েদের জন্য একেই সেনাবাহিনীতে আসন সীমিত। তার মধ্যেও ফিল্ড পোস্টিংয়ের অনুমতি মিলেছে সদ্য। সারিয়া যখন ২০১৫ সালে কম্বাইন্ড ডিফেন্স সার্ভিসেসের ফর্ম জমা দিলেন তখনও বাবা-মার মনে অবিশ্বাস। আসন মাত্র ১২টি। তাই সাফল্য মেলে দু’বারের চেষ্টায়। ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মায়ের জন্মদিনেই লেফটেন্যান্ট হওয়া সারিয়া এখন ক্যাপ্টেন। অতি-গুরুত্বপূর্ণ তাওয়াং সেক্টরে মোতায়েন আর্মি এয়ার ডিফেন্স রেজিমেন্টের বর্তমান ট্রুপ কম্যান্ডার তিনি।

সারিয়ার ইউনিট দেশের অন্যতম প্রথম এএডি রেজিমেন্ট যাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে আধুনিক অবতারে ফেরা কিংবদন্তী এল-৭০ বিমানবিধ্বংসী বন্দুক।

গত বছর লাদাখের সংঘর্ষের পরে অরুণাচল সীমান্তের ও পারে চিনা সেনার সমাবেশ অনেক বেড়েছে। সেনাবাহিনীর ড্রোন ও রেডারে প্রমাণ মিলেছে আপাতদৃষ্টিতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ওপাশে নতুন নতুন গ্রাম তৈরি করলেও তার আড়ালে চিনা সেনা বাড়িয়ে চলেছে সামরিক ঘাঁটি। তাই পরিস্থিতি বেগতিক হলে ও পার থেকে যে কোনও সময় অরুণাচলের আকাশে ঢুকে পড়তে পারে চালকহীন সশস্ত্র বিমান, কপ্টার বা বিমান। সে ক্ষেত্রে সারিয়ার অধীনে থাকা এল-৭০ দ্রুত কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে। এ ছাড়াও বুম লা ও অরুণাচলের অন্যান্য নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে ভারতীয় বাহিনী মোতায়েন করেছে বফর্স কামান ও এম-৭৭৭ আল্ট্রালাইট হাউইৎজ়ার কামান- যার পাল্লা ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত। ক্যাপ্টেন সারিয়া জানান, সুইডিশ বফর্স কোম্পানির কাছ থেকে ১৯৬০-এর দশকে এল-৭০ এয়ার ডিফেন্স গানগুলি প্রথম কেনা হয়েছিল। এখনও সক্রিয় ১১৮০টি এল-৭০। তাদের মধ্যে ২০০টি এল-৭০তে মাজ়ল ভেলোসিটি রেডার, ইলেক্ট্রো অপটিকাল সেন্সর, লেজ়ার রেঞ্জ ফাইন্ডার ও অটোম্যাটিক টার্গেট ট্র্যাকিং প্রযুক্তি যোগ করা হয়েছে। সেগুলির সঙ্গে এখন ট্যাকটিক্যাল কন্ট্রোল রেডার ও ফায়ার কন্ট্রোল রেডারের সংযোগ সম্ভব। তাই নতুন অবতারের এল-৭০ যে কোনও ড্রোন, হেলিকপ্টার, বিমানকে দ্রুত ট্র্যাক করে আঘাত হানতে সক্ষম। এই কাজে খরচ হয়েছে ৫৭৫ কোটি টাকা।

আদতে রামজানকী নগরের বাসিন্দা সারিয়া ছোট থেকে সেনাবাহিনীতে কাজ করা আত্মীয়দের বীরত্বের কথা শুনে বড় হয়েছেন। এখন নিজে সেই বীরগাথার শরিক হয়ে দেখেছেন উর্দিতে তারা ও ব্যাজের সংখ্যা বাড়ার পিছনে রয়েছে কত কষ্ট, কত দায়িত্ব। ২৮ বছরের এই তরুণীর মতে, মেয়েদের জন্য ভারতীয় সেনার ফিল্ড পোস্টিংয়ে সুযোগ এখনও সত্যিই কম। কিন্তু যাঁরা চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করেন তাঁদের জন্য এই কেরিয়ারের কোনও বিকল্প নেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Arunachal Pradesh Indian Army Saria Abbasi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy