ঔরঙ্গজ়েব সমাধি ঘিরে হিংসার পরে উস্কানিদাতারাই এখন ওই ঘটনার দায় এড়ানোর কৌশল নিয়েছে বলে আজ আক্রমণ শানালেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব।
মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজ়েবের সমাধি বিতর্ককে কেন্দ্র করে গত সোমবার থেকে উত্তপ্ত নাগপুর। এই আবহে আগামিকাল থেকে বেঙ্গালুরুতে শুরু হচ্ছে আরএসএসের তিন দিনের অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভা। একটি সাংবাদিক সম্মেলনে গতকাল আরএসএসের মুখপাত্র সুনীল অম্বেকর জানান, ঔরঙ্গজ়েবের সমাধিকে কেন্দ্র করে বর্তমান সময়ে বিতর্ক অপ্রাসঙ্গিক।
অম্বেকরের ‘অপ্রাসঙ্গিক’ মন্তব্যকে কটাক্ষ করে আজ মুখ খোলেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ অখিলেশ যাদব। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন, আগুন জ্বালালেন, তাঁরাই এখন বলছেন ওই বিতর্ক অপ্রাসঙ্গিক।’’ এসপি নেতৃত্বের মন্তব্য, মহারাষ্ট্র তথা দেশের প্রকৃত সমস্যা থেকে দেশের মানুষের মনোযোগ সরাতেই পরিকল্পিত ভাবে ঔরঙ্গজ়েবের সমাধিকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আজ বলেন, ‘‘কোনও হিংসা সমর্থন করি না। বাবরি মসজিদ ধ্বংস হওয়ার পরেও বাম সরকারকে এক সঙ্গে কাজ করার বার্তা দিয়েছিলাম।’’
অখিলেশের সমালোচনা নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিজেপি নেতৃত্ব। তবে দলের মতে, অখিলেশ যা বলছেন, তা তিনি তাঁর মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থেই বলছেন।
মহারাষ্ট্রের উত্তেজনার আঁচ এসে পড়েছে রাজধানী দিল্লিতেও। ঔরঙ্গজ়েবের পরে এ বার হিন্দুত্ববাদীদের নজরে আকবর! গতকাল রাতে ইন্ডিয়া গেটের কাছে আকবর রোড লেখা সাইনবোর্ডে কালো কালি লেপে দিয়ে তাতে মহারানা প্রতাপের ছবি সেঁটে দেন তিন যুবক। তাঁদের দাবি, সম্প্রতি রাজধানীর কাশ্মীরি গেটের কাছে মহারানা প্রতাপের মূর্তি ভাঙচুরের প্রতিবাদে তাঁরা ওই কাজ করেছেন। ওই তিন যুবকের মধ্যে বিজয় নামে এক ব্যক্তি দাবি করেছেন, ‘‘বাবর, হুমায়ন বা আকবরের মতো বিদেশি আক্রমণকারীদের নামে থাকা সাইনবোর্ড সরানোর দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরেই লড়াই করে যাচ্ছি।’’ তার পরে তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি কাশ্মীরি গেটের কাছে মহারানা প্রতাপের মূর্তি ভাঙা হয়েছিল। দিল্লি পুলিশ ও কেন্দ্র সেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদে আমরা আকবর রোড লেখা সাইনবোর্ডে কালি লেপে দিয়েছি।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)