ফাইল চিত্র।
ভারত ও চিনের সীমান্ত-দ্বৈরথের মধ্যেই বৃহস্পতিবার বালিতে বৈঠক করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। জি-২০ গোষ্ঠীর রাষ্ট্রগুলির বিদেশমন্ত্রী সম্মেলনের এই পার্শ্ববৈঠকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় বকেয়া বিষয়গুলি মেটাতে সওয়াল করেছে ভারত। ওয়াংকে জয়শঙ্কর বলেছেন, পূর্ব লাদাখ থেকে অবিলম্বে সেনা সরানোর জন্য উদ্যোগী হতে হবে। এ-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত হওয়া উচিত ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা’, ‘পারস্পরিক সংবেদনশীলতা’ এবং ‘পারস্পরিক স্বার্থ’।
এই বছরের শেষ থেকে জি-২০-র সভাপতিত্ব করবে ভারত। সূত্রের খবর, আগামী বছরের শেষ ভাগে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখে জি-২০-র শীর্ষ সম্মেলন হবে। কিন্তু এ নিয়ে পাকিস্তানের পাশাপাশি আপত্তি জানিয়েছে চিনও। আজ এই প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে কি না, স্পষ্ট করেনি বিদেশ মন্ত্রক। দিল্লিতে মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেছেন, “আগামী বছর জি-২০-র শীর্ষ সম্মেলন। তা ছাড়াও এই শীর্ষ বৈঠকটিকে ঘিরে গোটা দেশে বিভিন্ন স্তরে নানা রকম অনুষ্ঠান এবং বৈঠক হবে। কোথায় কী হবে, তা নিয়ে এখনই জল্পনা করার সময় আসেনি।”
আজ ওয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পরে টুইট করে জয়শঙ্কর বলেছেন, “এক ঘণ্টা বৈঠক হয়েছে। বিশেষত সীমান্ত পরিস্থিতি সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বকেয়া বিষয়গুলি আলোচনায় উঠেছে। চিনের সঙ্গে বিমান চলাচল এবং ছাত্রদের নিয়েও কথা হয়েছে।” বেজিংয়ের কোভিড নিয়মাবলির জন্য হাজার হাজার ভারতীয় ছাত্র গত দু’বছর ধরে সে দেশে ফেরত যেতে পারছেন না। আগেও ভারত একাধিক বার এ নিয়ে চিনের সঙ্গে কথা বলেছে। ভারত-চিন সরাসরি বিমান চালু করা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। যদিও ইতিবাচক সঙ্কেত মেলেনি।
গত দু’বছরে ভারত ও চিনের যে সংঘাতবিন্দুগুলি থেকে সেনা সরানো গিয়েছে, আজ বৈঠকে সেগুলির কথা তুলে বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, সীমান্তে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে দু’দেশেরই উচিত, সম্পূর্ণ সেনা সরিয়ে ফেলার ক্ষেত্রে উদ্যম ধরে রাখা।বিদেশ মন্ত্রক জানাচ্ছে, ‘দ্বিপাক্ষিক প্রোটোকল এবং সীমান্ত চুক্তিগুলি মান্য করার উপরে আজ জোর দিয়েছেন জয়শঙ্কর। দুই মন্ত্রীই সহমত হয়েছেন, সামরিক এবংকূটনৈতিক আলোচনা নিয়মিত হওয়া উচিত। খুব শীঘ্রই ভারত-চিন শীর্ষ কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক হবে বলে স্থির হয়েছে।’
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, গত এক বছর ধরে বিষয়টি কাটা রেকর্ডের মতো একই জায়গায় বেজে চলেছে। প্যাংগং হ্রদের পরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার বাকি সংঘর্ষবিন্দু থেকেও বেজিং যাতে দ্রুত সেনা হটায়— তা নিয়ে বার বার সুর চড়িয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম। অতিমারি-পরবর্তী আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে কিছুটা কোণঠাসা বেজিংয়ের উপরে চাপ তৈরি করে দর-কষাকষির এই স্নায়ুযুদ্ধে এগিয়ে থাকতে চাইছে নয়াদিল্লি। কিন্তু তার হাতে-কলমে ফল এখনও মেলেনি।
গত বছরের গোড়ায় প্যাংগংয়ের উত্তর ও দক্ষিণ তীর থেকে সামরিক সরঞ্জাম এবং পরিকাঠামো সরাতে শুরু করে চিন। ফিঙ্গার ৮ থেকে ফিঙ্গার ৩ পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকা এখন ‘বাফার জ়োন’। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে না আসা পর্যন্ত কোনও পক্ষই সেখানে টহল দিতে পারবে না। এত দিন ফিঙ্গার ৪ পর্যন্ত ভারতেরদখলে ছিল। নয়া চুক্তিতে সেইএলাকা কার্যত ছেড়েই দিতে হয়েছে ভারতকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy