দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে রাহুল গাঁধী। মঙ্গলবার সংসদে। পিটিআই
কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের পর দিনই সংসদের দু’টি কক্ষ আজ উত্তাল হল কৃষি আইন নিয়ে। বার বার মুলতুবি হল লোকসভা এবং রাজ্যসভা। পূর্বপরিকল্পনা মাফিক আজ কংগ্রেস, তৃণমূল, ডিএমকে, আরজেডি, বামেদের মতো বিরোধী দলগুলি পৃথক পৃথক ভাবে মুলতুবি প্রস্তাব দেয় গোড়াতেই। দাবি, সব কাজ বন্ধ রেখে বিতর্কিত কৃষি আইনি নিয়ে আলোচনা হোক। কিন্তু লোকসভার স্পিকার অথবা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান অনড় থাকায় ওয়েলের কাছে নেমে গিয়ে উচ্চ কণ্ঠে কৃষিআইন বিরোধী স্লোগান দেন তাঁরা। দফায় দফায় অধিবেশন বন্ধ করতে হয় রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু এবং লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে।
সূত্রের খবর, আগামিকাল কংগ্রেস, তৃণমূল বা বামেরা মুলতুবি প্রস্তাব আনবে না। তারা আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরতে চায়। কাল লোকসভায় এবং বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় কৃষি আইন নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে আলোচনার সময় দীর্ঘায়িত করা হবে, যাতে ছোট দলগুলিও বলার যথেষ্ট সময় পায়। রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় যেহেতু কৃষি আইনের কথা রয়েছে, ফলে ওই আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলির সুযোগ থাকবে বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য পেশ করার। আগে স্থির ছিল, ১০ ঘণ্টা আলোচনা হবে প্রধানমন্ত্রীর জবাব-সহ। কিন্তু বিকল্প প্রস্তাব, ১০ ঘণ্টা নির্ধারিত করা হচ্ছে শুধুমাত্র সমস্ত রাজনৈতিক দলের সাংসদদের বলার জন্য। তার পর বাড়তি সময় রাখা হবে প্রধানমন্ত্রীর জবাবি বক্তৃতার জন্য।
আজ সকালেই একটি টুইট করে কৃষি আইন নিয়ে বিরোধিতার সুর বেঁধে দেন কংগ্রেসের রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা বঢরা। দু’জনেই দিল্লির সীমানায় কৃষক আন্দোলন মোকাবিলার জন্য পুলিশি প্রস্তুতির ছবি ও ভিডিয়ো পোস্ট করেন। রাহুল লেখেন, ‘ভারত সরকার। দেওয়াল তৈরি না করে সেতু তৈরি করুন।’ পরে তাঁর টুইট, ‘মোদীর প্রশাসনের ধাঁচ হল—মুখ বন্ধ করে দাও। সমস্ত সংযোগ কেটে দাও। মাটিতে গুঁড়িয়ে দাও।’ তাঁর বোন প্রিয়ঙ্কা কৃষক আন্দোলন মোকাবিলায় প্রশাসনের সাঁজোয়া বাহিনীর ভিডিয়ো পোস্ট করে লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীজি, নিজেদের কৃষকদের সঙ্গেই যুদ্ধ?’
বিরোধী সাংসদদের সম্মিলিত বক্তব্য, আজ যাঁরা রাস্তায় বসে রয়েছেন, তাঁদেরই প্রতিনিধিত্ব করতে সংসদে আসা। ফলে তাঁদের কথা সামনে নিয়ে আসার জন্য সংসদকে সময় দিতেই হবে। আজ সকালে কংগ্রেসের তরফে যোগাযোগ করা হয় তৃণমূলের লোকসভার সাংসদ সৌগত রায়ের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে স্লোগানে সামিল হতে অনুরোধ করা হয়। সৌগতবাবু বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সূত্রের খবর, মমতা তাঁকে জানান, এই বিলের বিরোধিতার প্রশ্নে যখন ঐকমত্য তৈরি হয়েছে, তখন একত্রে প্রতিবাদ জানানো হোক। কংগ্রেস নেতারা লোকসভায় স্লোগান তোলেন, ‘ওয়াপস লো ওয়াপস লো কিষান বিরোধী কানুন ওয়াপস লো।’ তৃণমূলের সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা ওয়েলে নেমে স্লোগান দেন। হট্টগোলের মধ্যে স্পিকার ওম বিড়লাকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনাদের স্লোগান দেওয়ার হলে বাইরে গিয়ে দিন।’
কৃষক আন্দোলন ভেঙে দিতে আন্দোলনস্থলে যে ভাবে সমস্ত সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে আাজ সরব হয়েছেন বাম নেতারা। তৃণমূলের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেছেন, “সরকার যে ভাবে কৃষক আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা করছে, সেই প্রসঙ্গে সরব হওয়ার জন্যই আমরা মুলতুবি প্রস্তাব এনেছি। যদি রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে আলোচনাতেই সব বলা যেত, তা হলে এই প্রস্তাব এনে আলোচনার আইনেরই তো কোনও প্রয়োজন থাকত না।’’
কৃষি প্রতিমন্ত্রী কৈলাস চৌধুরী বলেন, “এটা মিথ্যা রটানো হচ্ছে যে কৃষি আইন বাস্তবায়িত হলে চাষিরা ভূমিহীন হয়ে যাহেন। যদি এক ইঞ্চি জমিও কোনও চাষিকে ছাড়তে হয়, মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়াব। রাজনীতিও ছেড়ে দেব পাকাপাকি ভাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy