লোকসভায় হই-হট্টগোল। —ফাইল চিত্র
হইহুল্লোড় শুধু নয়, ভোটপ্রচারে রাহুল গাঁধীর ‘ডান্ডাপেটা’ মন্তব্য ঘিরে রীতিমতো হাতাহাতি হল সংসদে। লোকসভায় শাসক-বিরোধী সাংসদদের এই বাকবিতণ্ডা, হাতাহাতির জেরে শুক্রবার দিনের মতো অর্থাৎ সোমবার পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি করে দিতে বাধ্য হন স্পিকার ওম বিড়লা। একে-অন্যের বিরুদ্ধে আক্রমণের অভিযোগ এনেছে দু’পক্ষই। সব মিলিয়ে শুক্রবার নজিরবিহীন পরিস্থিতির সাক্ষী থাকল লোকসভার অধিবেশন কক্ষ।
প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ‘ডান্ডাপেটা করবে বেকার যুবসমাজ’ — সম্প্রতি দিল্লির বিধানসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে এমনই মন্তব্য করেছিলেন রাহুল গাঁধী। সেই মন্তব্যের জন্য লোকসভায় নিন্দা প্রস্তাব পাশ করা হোক বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। তার পরেই কংগ্রেস সাংসদরা ওয়েলে নেমে স্পিকারের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পাল্টা বিজেপি সাংসদরাও হইহট্টগোল শুরু করে দেন। দফায় দফায় এই পরিস্থিতির জেরে বাধ্য হয়ে দিনের মতো অধিবেশন মুলতুবি করে দেন স্পিকার।
ঠিক কী বলেছিলেন রাহুল? দিল্লির বিধানসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে হিন্দিতে রাহুল বলেন, “ছ’মাস পর দেশের যুবসমাজ নরেন্দ্র মোদীকে ডান্ডা মেরে মেরে দেশছাড়া করবেন।” এর পর শুক্রবার অধিবেশনে দেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করেন রাহুল। জবাব দিতে ওঠেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। কিন্তু তিনি ওয়েনাডের সাংসদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে রাহুলের ওই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে আনেন।
স্পিকারকে হর্ষ বর্ধন বলেন, “আমাকে ক্ষমা করবেন। রাহুল গাঁধীর প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে আমি তাঁর নিন্দা করতে চাই। দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করেছেন, তার তীব্র নিন্দা করছি।” স্পিকার ওম বিড়লা হর্ষ বর্ধনকে ওই প্রসঙ্গ ছেড়ে রাহুলের প্রশ্নের উত্তর দিতে বলেন। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাতেও থামেননি।
আরও পড়ুন: নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিতের ফাঁসি আলাদা ভাবে? মঙ্গলবার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে
তার পরেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কংগ্রেস সাংসদরা। স্পিকারের চেয়ারের সামনে গিয়ে তুমুল হই হট্টগোল-বিক্ষোভ শুরু করেন। হর্ষ বর্ধনের বিরুদ্ধে চলতে থাকে স্লোগান। তার মধ্যেই তামিলনাড়ুর কংগ্রেস সাংসদ মানিকম ঠাকুর শাসক দলের বেঞ্চের দিকে এগিয়ে যান। দ্বিতীয় সারিতে বক্তব্য রাখছিলেন হর্ষ বর্ধন। সামনের সারি টপকে তাঁর কাছে গিয়ে শাসাতে থাকেন। তখন বিজেপি সাংসদরা তাঁকে টেনে-হিঁচড়ে নামিয়ে আনেন।
আর গোটা এই হই হট্টগোলের মধ্যেও হর্ষ বর্ধন রাহুলের ওই মন্তব্য নিয়ে বলতে থাকেন। রাহুলের এই মন্তব্যের জন্য অধিবেশনের নিন্দা করা উচিত বলে দাবি করতে থাকেন। তিনি বলেন, ওঁর বাবাও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু আমাদের দলের কোনও নেতা কখনও এই ধরনের খারাপ ভাষা ব্যবহার করেননি। পাল্টা কংগ্রেস সাংদদের হইচইও চলতে থাকে। পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে চলে যাওয়ায় অধিবেশন মুলতুবি করে দেন স্পিকার।
আরও পড়ুন: ভোটের পরে আসুন, শাহিন বাগ মামলায় বিজেপি নেতাকে বলল সুপ্রিম কোর্ট
পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, “কংগ্রেস সাংসদরা আমার আসনের কাছে চলে আসেন। আমাকে আক্রমণ করার চেষ্টা করেন এবং হাত থেকে নথিপত্র কেড়ে নেন।” যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা শাসক দলের সাংদদের বিরুদ্ধেই বিশৄঙ্খলা সৄষ্টির অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর।
রাহুল গাঁধীও সংসদের বাইরে বলেন, “সংসদের বাইরে আমি কোনও মন্তব্য করেছি। সেটা টেনে এনে অধিবেশনের মধ্যে মন্তব্য করা অসংসদীয়। আসলে বিজেপি আসল সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে চাইছে। আমার উত্তরও দিতে পারেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy