Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Rss

রাম নামে বাংলার গ্রামে পৌঁছতে চায় আরএসএস

পশ্চিমবঙ্গের জন্য সঙ্ঘের আলাদা কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা, এই প্রশ্ন এ দিন এড়িয়ে গিয়েছেন সঙ্ঘ-নেতা। শুধু জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে কোনও রকম হিংসার বিরোধী তাঁরা।

সঙ্ঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ গোপাল। ফাইল চিত্র।

সঙ্ঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ গোপাল। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৪৫
Share: Save:

অতিমারি চলাকালীন পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য-সহ নানা সামাজিক ক্ষেত্রে তারা কাজ করেছে বলে দাবি করল আরএসএস। সংগঠনের মতে, এই কর্মকাণ্ডে আগ্রহী হয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অনেক মানুষ। তাঁদেরও সঙ্গে নিয়ে এ বার গোটা দেশে মকরসংক্রান্তি থেকে গ্রাম সংযোগ অভিযান শুরু করা হবে। আজ গুজরাতে তিন দিনের চিন্তন শিবিরের শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানান সঙ্ঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ গোপাল।

পশ্চিমবঙ্গের জন্য সঙ্ঘের আলাদা কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা, এই প্রশ্ন এ দিন এড়িয়ে গিয়েছেন সঙ্ঘ-নেতা। শুধু জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে কোনও রকম হিংসার বিরোধী তাঁরা। এর আগেই সঙ্ঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, রামমন্দির নির্মানের বিষয়টিকে সামনে রেখে বাংলার ৩৩ হাজার গ্রামে পৌঁছবে তারা। আজ কৃষ্ণ গোপালের বক্তব্য, গোটা দেশে ৫ লক্ষ গ্রামে ১০ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছনোর লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। তাঁর কথায়, “রামমন্দির ইতিহাসের প্রতীক। দেশের সম্মানের সঙ্গে যা জড়িত। এই মন্দির নির্মানের জন্য ১০ টাকা থেকে চাঁদা নেওয়া শুরু করা হবে। যাঁরা সম্পন্ন, তাঁদের কাছ থেকে ১০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। এর পরেও যদি কেউ আনন্দের সঙ্গে বেশি দিতে চান, সেটা শিরোধার্য।“

রাজনৈতিক শিবিরের মতে, সব মিলিয়ে নতুন বছরের প্রথম মাস থেকেই গ্রামীণ ভারতের ঘরে ঘরে হিন্দুত্বের স্রোত বইয়ে দিতে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাবে আরএসএস এবং তার শাখা সংগঠনগুলিকে।
স্বাভাবিক ভাবেই এই স্রোতে নিজেদের ভোট-নৌকা ভাসাতে তৎপর বিজেপি। আজ সঙ্ঘের সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করা হয়, অতিমারি এবং লকডাউনের সময় গ্রামে গ্রামে নিজেদের ভাবমূর্তিকে আরও পোক্ত করার কাজটি নিঃশব্দে সেরেছে সঙ্ঘ। কৃষ্ণ গোপালের কথায়, “বিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে সঙ্ঘের কর্মকর্তারা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে ছোট ছোট বাচ্চাদের পড়িয়েছেন। অনলাইন পড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। অধ্যাপকেরা সময় দিয়েছেন সঙ্ঘের এই যোজনায়। পাশাপাশি বিভিন্ন হাতের কাজ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়ানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন সঙ্ঘের কর্মকর্তারা।“ আরএসএস-এর দাবি, এর ফলে বহু মানুষের
রোজগার হয়েছে।

আরএসএস-এর মন্থন বৈঠকে আরও একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যাকে পশ্চিমবঙ্গে ভোটের আগে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। সঙ্ঘের নেতার কথায়, “সমাজে জাত, ভাষা, বিত্তের জন্য বহু অসাম্য রয়েছে। এত সুযোগ সুবিধা দেওয়ার পরেও এই ভেদাভেদ দূর হচ্ছে না। সঙ্ঘের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে, এই সামাজিক অসাম্য দূর করার। পরমাত্মার সামনে, সংবিধানের সামনে কোনও জাতভেদ বা ভাষার ভেদ নেই।’’

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, সঙ্ঘ যে সামাজিক ঐক্যের কথা বলে ঝাঁপানোর কৌশল নিয়েছে, তাতে বিভিন্ন বর্ণের হিন্দুকে একটি মঞ্চে টেনে আনলে সুবিধা হবে বিজেপি নেতৃত্বের। অন্যান্য অসাম্যের কথা উল্লেখ করলেও ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদের কথা স্বাভাবিক ভাবেই শোনা যায়নি আরএসএস নেতৃত্বের মুখে। কিন্তু দলিত, পিছড়ে বর্গ, অনগ্রসর শ্রেণী এবং উচ্চবর্ণকে যদি একই ছাতার (হিন্দু) তলায় নিয়ে আসা যায়, তা হলে তা বিজেপি-র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিকে এককাট্টা করবে বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও বিরোধীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ভোটের আগে সব বর্ণের হিন্দুকে এক ছাতার তলায় এনে সঙ্ঘ আদতে বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে চাইছে ঠিকই। কিন্তু সঙ্ঘ এবং বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব বরাবরই বর্ণাশ্রমের রাজনীতি করেছে, যাতে চিরকালই বঞ্চিত হয়েছেন নিম্নবর্ণের হিন্দুরা। এই বিষয়টিও মাথায়
রাখা দরকার।

অন্য বিষয়গুলি:

Rss ram mandir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy