Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

চাষি-বন্ধু সাজতে মরিয়া আরএসএস

মধ্যপ্রদেশে কৃষকদের দাবি নিয়ে জুনের গোড়া থেকে আন্দোলন চালাচ্ছিল আরএসএসের কৃষক সংগঠন ‘ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘ’। কিন্তু শিবরাজ সিংহ চৌহানের সঙ্গে বৈঠকের পর চার দিনের মাথায় আন্দোলনের পাট চুকিয়ে দেয় তারা। তাদের সরে যেতে দেখে কৃষকদের বাকি সংগঠনগুলি সরকারের বিরুদ্ধে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ০৩:৫১
Share: Save:

চাষিদের দাবি নিয়ে নরেন্দ্র মোদী চরম বিপাকে পড়লেও সরকারের বিরোধিতা থেকে সরে আসছে না সঙ্ঘের কৃষক সংগঠন। বরং নিজেদের কৃষক-বন্ধু হিসেবে তুলে ধরতে রাজ্যে রাজ্যে আরও আক্রমণাত্মক হচ্ছে তারা।

মধ্যপ্রদেশে কৃষকদের দাবি নিয়ে জুনের গোড়া থেকে আন্দোলন চালাচ্ছিল আরএসএসের কৃষক সংগঠন ‘ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘ’। কিন্তু শিবরাজ সিংহ চৌহানের সঙ্গে বৈঠকের পর চার দিনের মাথায় আন্দোলনের পাট চুকিয়ে দেয় তারা। তাদের সরে যেতে দেখে কৃষকদের বাকি সংগঠনগুলি সরকারের বিরুদ্ধে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। সেই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মারা যান কৃষকরা। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে সঙ্ঘের কৃষক সংগঠন সরকারকে আর বিপাকে ফেলতে চাইছে না। তাই সে রাজ্যে আন্দোলনে আপাতত বিরাম দিলেও অন্যত্র চাষিদের দাবি নিয়ে আন্দোলনের পথে তারা।

ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘের সূত্রের মতে, রাজস্থানে ১৫ জুন থেকে ধর্নায় বসছে তারা। শুধু এখানেই নয়, বিজেপি শাসিত অনেক রাজ্যেই কৃষকদের অসন্তোষ সামনে চলে আসছে। সেখানে কৃষকদের প্রতিনিধি হিসেবে আন্দোলনের মূল স্রোতের বাইরে থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ, প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠনগুলি তাতে ছেড়ে কথা বলবে না। কিষাণ সঙ্ঘের এক নেতার ব্যাখ্যা, মধ্যপ্রদেশে সরকারের সঙ্গে ‘আপসে’র বার্তা যাওয়ার পর ‘রাষ্ট্রীয় কিষাণ মজদুর সঙ্ঘ’, ‘কিষাণ ইউনিয়নে’র মতো প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠনগুলি আরএসএসের নেতা শিবকান্ত দীক্ষিতের কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছে।

প্রশ্ন হল, মধ্যপ্রদেশের আন্দোলন থেকে কেন সরে এল আরএসএসের কৃষক সংগঠন? ‘ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘ’-র সাধারণ সম্পাদক দীনেশ কুলকার্নির মতে, তাঁদের যে দাবিদাওয়া ছিল, সেগুলি মুখ্যমন্ত্রী মেনে নিয়েছিলেন। অর্থও বরাদ্দ করেছিলেন। তার ভিত্তিতেই আন্দোলন তুলে নেয় সঙ্ঘের সংগঠন। কিন্তু সেই সাময়িক সন্ধির পরেও মোদী সরকারের কৃষি নীতি নিয়ে বিরোধিতা যে শেষ হয়ে যায়নি, সংগঠনেরই আর এক নেতা রঘুবীর সিংহ শেখাওয়াত তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাঁর ক্ষোভ, লোকসভা ভোটের সময় বিজেপির প্রতিশ্রুতি ছিল, ফসলের দামের উপর ৫০ শতাংশ লাভ জুড়ে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেওয়া হবে। তা হয়নি। জেনেটিকালি মডিফাইড (জিএম) শস্য নিয়ে সঙ্ঘের বিরোধ থাকা সত্ত্বেও মোদী সরকার এগোচ্ছে। তা ছাড়া রাজ্যে রাজ্যে সেচ, বিদ্যুৎ, কৃষি-ঋণ মকুবে বিষয়গুলি তো রয়েইছে।

তবে অনেকেই মনে করছেন, সঙ্ঘের কৃষক সংগঠনের বিরোধের পিছনে অন্য কৌশলও রয়েছে। বাজপেয়ী জমানায় আরএসএসের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্কে যে তিক্ততা ছিল, এখন মোদী-শাসনে তা নেই। কিন্তু কৃষকদের ক্ষোভকে পুঁজি করে বাকি বিরোধীদের পরিসরটিও সুকৌশলে নিজেদের দখলে রাখতে চায় সঙ্ঘের বিভিন্ন সংগঠন।

অন্য বিষয়গুলি:

Farmers Protest RSS আরএসএস
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy