Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Ashwani Mahajan

আর্জেন্টিনার শকুনই নাকি রামায়ণের জটায়ু!

এ বার সঙ্ঘ-পরিবারের নেতা অশ্বিনী মহাজনের দাবি, কেরলে ফের রামায়ণের সেই দৈব-পাখি জটায়ুর দেখা মিলেছে। যে জটায়ু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন। লালমোহন বাবুর কথায়, ‘বড়িয়া পক্‌ষি’!

আর্জেন্টিনার এই শকুনকে জটায়ু বলে দাবি করা হচ্ছে। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়ায়

আর্জেন্টিনার এই শকুনকে জটায়ু বলে দাবি করা হচ্ছে। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়ায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৯ ০৩:০৩
Share: Save:

রামের বংশধরের পরে এ বার জটায়ুর আবির্ভাব!

দু’দিন আগে বিজেপি সাংসদ, জয়পুরের রাজকুমারী দিয়া কুমারী দাবি করেছিলেন, তাঁরাই রামের বংশধর।

এ বার সঙ্ঘ-পরিবারের নেতা অশ্বিনী মহাজনের দাবি, কেরলে ফের রামায়ণের সেই দৈব-পাখি জটায়ুর দেখা মিলেছে। যে জটায়ু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন। লালমোহন বাবুর কথায়, ‘বড়িয়া পক্‌ষি’!

সঙ্ঘ-পরিবারের স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের নেতা মহাজন, ‘জটায়ু’-র ডানা মেলে উড়ে যাওয়ার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। তাঁর দাবি, রামায়ণের দৈব-পাখি জটায়ুর দেখা খুব কমই মেলে। সম্প্রতি কেরলের শদয়ামঙ্গলমে সেই জটায়ুর দেখা মিলেছে।

বাস্তবে অবশ্য ওই ভিডিয়ো জটায়ুর নয়, কেরলে তার দেখাও মেলেনি। ওই ভিডিয়ো আসলে আর্জেন্টিনার! এবং তা-ও এক ধরনের শকুনের! বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর ওই বিশালাকৃতি শকুনকে উদ্ধার করে তার চিকিৎসা করা হয়। তার পরে ফের ছেড়ে দেওয়া হয়। সে ঘটনাও বছর পাঁচেক আগের। রামায়ণের গল্প অনুযায়ী, সীতাকে অপহরণে বাধা দিতে গিয়ে জটায়ু আহত হয়ে প্রথমে ভূপতিত হয়, পরে মারা যায়। কথিত, কেরলেই এই ঘটনা ঘটেছিল। তাই শদয়ামঙ্গলমে জটায়ুর বিরাট পাথরের মূর্তিও রয়েছে। কিন্তু তা-ই বলে কেরলে ‘জ্যান্ত’ জটায়ু! তা-ও অযোধ্যা মামলার শুনানি-পর্বের মধ্যেই!

শুধু বিজেপি বা আরএসএস নেতারা নন, সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যা মামলাতেও এখন রামলালা বিরাজমানের আইনজীবীরা প্রমাণের চেষ্টা করছেন, রামায়ণের কাহিনী কাল্পনিক নয়, তা ঐতিহাসিক সত্য। গত সপ্তাহে সে কথা শুনেই সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তুলেছিল, অযোধ্যায় এখনও রঘুবংশের কারও দেখা মেলে কি না! সেই প্রশ্নের মুখেই জয়পুরের রাজকুমারী দাবি করেন, তাঁরা রামের ছেলে কুশের ব‌ংশধর। রাজপরিবারের নথিতেও সে কথা রয়েছে।

আজ সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তুলেছে, অযোধ্যায় ঠিক কোথায় রামের জন্ম হয়েছিল?

অযোধ্যা মামলায় রামলালা বিরাজমানের আইনজীবী সি এস বৈদ্যনাথন যুক্তি দিয়েছেন, ইলাহাবাদ হাইকোর্টের এক বিচারপতি সুধীর অগ্রবাল বলেছিলেন, বাবরি মসজিদের মাঝখানে একটি গম্বুজের নীচেই রামের জন্মস্থান। কিন্তু আমাদের মতে, গোটা এলাকাটাই রামের জন্মস্থান হিসেবে ধরা উচিত। যেমনটা ইলাহাবাদ হাইকোর্টের আরেক বিচারপতি ধরমবীর শর্মা মত দিয়েছিলেন। জন্মস্থানই ভগবানের স্বরূপ।

বিচারপতি শরদ এ বোবদে প্রশ্ন করেন, আপনি বলতে চাইছেন, ভগবানের ভাগাভাগি হয় না? বৈদ্যনাথন বলেন, একদম। এই কারণেই ইলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় মেনে জন্মস্থানের কোনও ভাগাভাগি হতে পারে না। তাঁর আরও যুক্তি, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড যতই বলুক ফাঁকা জমিতে বাবরি মসজিদ তৈরি হয়েছিল, বাস্তবে মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের উপর মসজিদ তৈরি হয়। এটা ঐতিহাসিক সত্য যে, এ দেশে বাইরে থেকে শাসকরা এসে মন্দির ধ্বংস করেছেন। বাবরি মসজিদে মুসলিমদের প্রবেশের অধিকার সব সময় বিতর্কিত বিষয় থেকেছে। কিন্তু সেখানে হিন্দুদের পুজোর অধিকার কখনও চলে যায়নি। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের আইনজীবী রাজীব ধবন অবশ্য আপত্তি তুলে জানিয়েছেন, এ সবের সমর্থনে কোনও নথি-প্রমাণ দেওয়া হচ্ছে না। প্রধান বিচারপতি বলেন, ধবন চাইলে নিজের সময় মতো নথি দেখাতেই পারেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy