মোহন ভাগবত। ছবি: পিটিআই
বিজয়া দশমীর অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে আজ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইনের পক্ষে সওয়াল করলেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। সঙ্ঘ পরিবার (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ, আরএসএস) দীর্ঘ সময় ধরে ওই আইনের পক্ষে সওয়াল করলেও, ক’দিন আগেই সরকার জানিয়েছিল, জন্ম নিয়ন্ত্রণে উল্লেখজনক ভাল ফল করায় সরকার ওই বিল আনার কথা ভাবছেন না। সেই প্রেক্ষিতে আজ ভাগবতের ওই দাবি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। আজ মহিলা পর্বতারোহী সন্তোষ যাদবকে পাশে বসিয়ে নারী ক্ষমতায়নের উপরেও জোর দেন আরএসএস প্রধান। নাগপুরের সঙ্ঘ পরিবারের সদর দফতরে বিজয়ার অনুষ্ঠানে এ বারই প্রথম কোনও মহিলা ব্যক্তিত্ব প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকলেন।
রাম মন্দির, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের মতোই দীর্ঘ সময় ধরেই জন্মনিয়ন্ত্রণ আইনের পক্ষে সওয়াল করে আসছে আরএসএস। বিজয়া দশমীতে আরএসএস প্রধান যে বার্তা দিয়ে থাকেন তাকেই অভিমুখ করেই আগামী দিনে আন্দোলনে নামে সঙ্ঘ পরিবার। ফলে ভবিষ্যতে সঙ্ঘের প্রচারের অন্যতম অভিমুখ যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন হতে চলেছে তা অনেকটাই স্পষ্ট। আজ ভাগবত বলেন, ‘‘ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যার ভারসাম্যের অসাম্য ভৌগোলিক সীমানা পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যায়। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যার ভারসাম্যকে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা কোনও ভাবেই অগ্রাহ্য করা যায় না। তা ছাড়া জনসংখ্যার জন্য রসদ প্রয়োজন, তা না থাকলেই সেই জনসংখ্যা বোঝায় পরিণত হয়। তাই দেশের স্বার্থে একটি সামগ্রিক জনসংখ্যা নীতি গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে, যা সবার ক্ষেত্রে সমান ভাবে প্রযোজ্য হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।’’ একই সঙ্গে জোর করে, লোভ দেখিয়ে ধর্মান্তকরণের সমালোচনায় সরব হয়েছেন ভাগবত।
সঙ্ঘ প্রধানের ওই বক্তব্যে বিজেপি নেতৃত্বের উপরে চাপ তৈরি করবে বলে মনে করছেন অনেকেই। প্রশ্ন উঠেছে, ভাগবতের ওই দাবি মেনে কি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পথে হাঁটবে নরেন্দ্র মোদী সরকার? কেননা গত এপ্রিলেই সংসদে আপাতত ওই আইন আনার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া। তিনি দাবি করেন, ২০২৫ সালে দেশে জাতীয় গর্ভধারণের যে হার সরকার স্থির করেছিল তা নির্দিষ্ট সময়ের আগে ছুঁয়ে ফেলা সম্ভব হবে। কিন্তু সঙ্ঘে যুক্তি, জন্মহার যা কমেছে তা মূলত কমেছে হিন্দু সমাজেই। মুসলিম সমাজে জন্মহার কমার হার হিন্দুদের তুলনায় নগণ্য। সঙ্ঘ নেতাদের একাংশ মনে করেন, এই গতিতে চললে জনসংখ্যার বিস্ফোরণের মাধ্যমে আগামী দিনে দেশে সংখ্যাগুরু হয়ে দাঁড়াবে মুসলিমেরা। সেই কারণে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল আনা জরুরি বলেই মনে করেন সঙ্ঘ নেতারা।
এই প্রথম সঙ্ঘের বিজয়া দশমীর অনুষ্ঠানে কোনও মহিলা প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। আজ নারী শক্তির ক্ষমতায়নের উপরে জোর দেন ভাগবত। নারী ও পুরুষের সমানাধিকারের উপরে জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘শক্তি শান্তির ভিত্তি। তাই মহিলাদের সমানাধিকার দিতে হবে। তাঁদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আরও বেশি করে নিতে দিতে হবে। সমাজের সর্বাঙ্গীন বিকাশের লক্ষ্যে জোর দিতে হবে মহিলাদের ক্ষমতায়নে।’’ একই সঙ্গে মুসলিম সমাজকে আরও বেশি করে কাছে টানার উপরে জোর দিয়েছেন ভাগবত। সঙ্ঘ পরিবার সম্পর্কে মুসলিম সমাজের মধ্যে যে সন্দেহ রয়েছে তা দূর করার জন্য আরও বেশি করে পারস্পরিক আলোচনার উপরে জোর দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy