অন্ধ্রপ্রদেশের ছ’টি জেলার ৬২৮টি গ্রাম বন্যার কবলে। ছবি পিটিআই
প্রবল বৃষ্টিতে গোদাবরী নদীর জলস্তর বাড়ার ফলে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্ধ্রপ্রদেশের স্যর আর্থার কটন ব্যারেজ থেকে ২৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ফলে পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক।
অন্ধ্রপ্রদেশের ছ’টি জেলার ৬২৮টি গ্রাম বন্যার কবলে। এর মধ্যে ৪৪টি মণ্ডলের অধীন কয়েকটি গ্রামে সব চেয়ে খারাপ পরিস্থিতি। তবে মহারাষ্ট্র এবং তেলঙ্গানায় বৃষ্টি কমে যাওয়ায় আগামী কয়েক দিনে গোদাবরীর জল কিছুটা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এক আধিকারিক জানিয়েছেন, তেলঙ্গানার ভদ্রচলমে আজ জলের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। কিন্তু কটন ব্যারেজ থেকে আগামী ৩০ থেকে ৩৬ ঘণ্টায় জল ছাড়ার পরিমাণ পৌঁছে যেতে পারে ২৮ লক্ষ কিউসেকে। বন্যাপীড়িত গ্রামগুলি থেকে ইতিমধ্যেই ৬৯ হাজার ৭৪৬ জনকে সরানো হয়েছে। ১৫৬টি ত্রাণ শিবিরে তাঁদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের পরিসংখ্যানে। রাজামহেন্দ্রবরমে ভারতীয় নৌসেনার তরফে দু’টি হেলিকপ্টার রাখা হয়েছে দুর্গতদের উদ্ধার ও ত্রাণশিবিরে পুনর্বাসনের জন্য।
মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগন্মোহন রেড্ডি জানিয়েছেন, বন্যাপীড়িত অঞ্চলের জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অন্তত আগামী ২৪ ঘণ্টা যাতে ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি করা হয়। দুর্গতদের উদ্ধারের জন্য জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১০টি দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বন্যার জেরে দুর্বিপাকে পড়া পরিবারগুলির জন্য ২৫ কিলোগ্রাম চাল, এক কিলোগ্রাম তুর ডাল, আলু, পেঁয়াজ এবং ভোজ্য তেলের বন্দোবস্তের জন্যও জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ত্রাণ শিবিরে যাঁরা আছেন, তাঁদের মাথাপিছু এক হাজার টাকা করে পরিবার-পিছু সর্বোচ্চ দু’হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, বন্যার জেরে জলার তলায় চলে গিয়েছে ৩১৭৩.৫৮ হেক্টর কৃষিজমি। ১১০১ কিলোমিটার রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অন্ধ্রের মতো খারাপ না হলেও গোদাবরী ফুঁসে ওঠায় ওড়িশার মালকানগিরি জেলার নিচু অঞ্চলের বাসিন্দারাও বিপাকে পড়েছেন। তাঁদের অন্যত্র সরানো হয়েছে। মালকানগিরির জেলাশাসক বিশাল সিংহ জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের তরফে বহু জায়গায় ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। বিশাল ইতিমধ্যেই মোটু, কালীমেলা, পাডিয়া ব্লক পরিদর্শন করেছেন।
গত চার দিনে প্রবল বৃষ্টির পাশাপাশি গোদাবরী নদীর ব্যাকওয়াটার্সের মাধ্যমেও মোটু ব্লক এবং আরও কিছু অঞ্চলে জল ঢুকেছে। ভদ্রতচলমে জলস্তর পৌঁছে গিয়েছে ৭০ ফুট উচ্চতায়। যা ২০০৬ সালের তুলনায় চার ফুট বেশি। প্রশাসন সূত্রে খবর, বিনায়কপুর, আলামা এবং পেটা গ্রাম সম্পূর্ণ জলমগ্ন। তবে সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বন্যার জেরে কোনও প্রাণহানির খবর মেলেনি। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস, আগামী কয়েক ঘণ্টায় ওড়িশার বহু অঞ্চলে ভারী থেক অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে স্পেশাল রিলিফ কমিশনার (এসআরসি) বিভিন্ন জেলাশাসককে সতর্ক করে জানিয়েছেন, সর্বত্র যাতে কড়া নজরদারি চালানো হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy