ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসাব বলছে, ভারতে কোভিডে মৃতের মোট সংখ্যা ৪ লক্ষ ৮৩ হাজারেরও বেশি। কিন্তু ভারত, কানাডা ও আমেরিকার একদল গবেষকের মতে, এ দেশে মৃতের প্রকৃত সংখ্যাটা ঘোষিত সংখ্যার অন্তত ছ’গুণ!
‘সায়েন্স’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণাপত্র। তাতে আশঙ্কা করা হয়েছে যে, অতিমারির শুরু থেকে ভারতে এখনও পর্যন্ত কোভিডে অন্তত ৩২ লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছেন। এঁদের ৭১ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ২৭ লক্ষের মৃত্যু হয়েছে গত বছরের জুন থেকে এপ্রিলের মধ্যে, অর্থাৎ সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ যখন তুঙ্গে। বিভিন্ন কারণে ভারতে কোনও নির্দিষ্ট সময়ে যত মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকে, অতিমারির ওই সময়টায় তা দ্বিগুণে পৌঁছেছিল বলেই গবেষকদের আশঙ্কা।
কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চের বিজ্ঞানী প্রভাত ঝা, আমেরিকার ডার্টমাউথ কলেজের পল নোভোসাড প্রমুখ এই সমীক্ষাটির নেপথ্যে রয়েছেন। টেলিফোনে প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষের থেকে সংগৃহীত তথ্য, প্রায় দু’লক্ষ সরকারি হাসপাতাল এবং মৃত্যুর সংখ্যায় এগিয়ে থাকা দশটি রাজ্যের নথির ভিত্তিতে সমীক্ষাটি তাঁরা চালিয়েছেন। এই বিশেষজ্ঞেরা বলেছেন, ‘‘কোভিডে ভারতে ৪ লক্ষ ৮০ হাজার মৃত্যুর নিরিখে হিসাব করলে দেখা যাচ্ছে, প্রতি দশ লক্ষ জনসংখ্যায় ৩৪৫ জন মারা যাচ্ছেন। এই পরিসংখ্যানও আমেরিকার মৃত্যুহারের সাত ভাগের এক ভাগ। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন, ভারতে কোভিডে মৃত্যুর যা ঘোষিত সংখ্যা, প্রকৃত সংখ্যাটা তার চেয়ে অনেক বেশি। এর কারণ হল, কোভিডে মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না করা, কোভিডে মৃত্যুকে ক্রনিক রোগে মৃত্যু বলা। তা ছাড়া অধিকাংশ মৃত্যু হয়েছে গ্রামাঞ্চলে, অনেক ক্ষেত্রে বিনা চিকিৎসায়।’’ অন্যতম গবেষক পল নোভোসাডের মতে, সারা পৃথিবীতে কোভিডে মৃত্যুর একটা বড় অংশই ঘটেছে ভারতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উচিত, সে কথা মাথায় রেখে মৃত্যুর খতিয়ান তৈরি করা।
ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা আগের চেয়ে সামান্য কমে হয়েছে ২৮৫। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে কোভিড সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৪২ হাজার। ২৭টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজার পেরিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওমিক্রনের পাশাপাশি করোনার ডেল্টা প্রজাতিও সংক্রমণ ছড়িয়ে চলেছে। এ সবেরই প্রভাবে ভারতে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা গত ২২২ দিনের রেকর্ডকে ছাপিয়ে গিয়েছে।
দিল্লিতে আজ সারা দিনে সংক্রমণ ধরা পড়েছে ২০,১৮১ জনের। মারা গিয়েছেন সাত জন। সংক্রমণে রাশ টানতে দিল্লিতে গত কাল রাত থেকেই ৫৫ ঘণ্টা ব্যাপী সপ্তাহান্তের কার্ফু চালু হয়েছে। তবে আগামিকাল গুরু গোবিন্দ সিংহের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সেই কার্ফু সাময়িক ভাবে শিথিল করা হয়েছে। পুণ্যার্থীরা ওই সময়ে গুরুদ্বারে যেতে পারবেন।
মুম্বইয়ে আজ সারা দিনে সংক্রমিত হয়েছেন ২০,৩১৮ জন। মৃত্যু পাঁচটি। মুম্বইয়ের বান্দ্রা-কুর্লা কমপ্লেক্সের সিবিআই অফিসের ৬৮ জন কর্মীর কোভিড ধরা পড়েছে। সোমবার থেকে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দিচ্ছে মহারাষ্ট্র সরকার। স্কুলে শুধু দশম-দ্বাদশ শ্রেণির প্রয়োজনীয় কাজটুকুই হবে। সুইমিং পুল, জিম, স্পা, চিড়িয়াখানা, বিউটি পার্লার, বিনোদন পার্ক— সব বন্ধ। শপিং মল কিংবা বাজারে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ উপস্থিতি। সর্বত্রই পাঁচ জন বা তার বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ। কর্নাটক সরকারও আপাতত ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সপ্তাহান্তের
কার্ফু চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দক্ষিণী রাজ্যটির মোট সংক্রমণের সিংহভাগই বেঙ্গালুরুতে। কার্ফু চলাকালীন অত্যাবশ্যক পরিষেবা ছাড়া অন্য সমস্ত গতিবিধি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy