এসএস স্বামীনাথন। —ফাইল চিত্র।
দেশে ‘সবুজ বিপ্লবে’র জনক, প্রখ্যাত কৃষিবিজ্ঞানী এম এস স্বামীনাথন প্রয়াত হলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ের বাড়িতে জীবনাবসান হয় তাঁর।
দেশে দুর্ভিক্ষ রোখার জন্য এবং কৃষিক্ষেত্রে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে ছয়ের দশকের শেষ দিক থেকে ভারত সরকার যে ‘সবুজ বিপ্লব’-এর সূচনা করে, তার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন স্বামীনাথনই। উন্নত বীজ, জলসেচের মাধ্যমে পশ্চিম ভারত, মূলত পঞ্জাবে কৃষিক্ষেত্রের আমূল সংস্কার করা হয়। সবুজ বিপ্লবের সাফল্য নিয়ে সংশয় এবং বিতর্ক থাকলেও, তৎকালীন ভারতে উদ্ভূত খাদ্য সঙ্কট এবং খাদ্যশস্যের জন্য বিদেশি রাষ্ট্রনির্ভরতা যে অনেকাংশে কমানো গিয়েছিল, তা স্বীকার করেন সকলেই।
১৯৭২ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চের ডিরেক্টর জেনারেল পদে ছিলেন স্বামীনাথন। সেই সময় ভারত সরকারের কৃষি গবেষণা এবং শিক্ষা দফতরের সচিবও ছিলেন তিনি। ২০০৭ এবং ২০১৩ সালে পর পর দু’বার রাজ্যসভায় মনোনয়ন দেওয়া হয় তাঁকে। কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ১৯৭১ সালে রমন ম্যাগসাইসাই পুরস্কারে সম্মানিত করা হয় তাঁকে। পদ্মশী, পদ্মভূষণ এবং পদ্মবিভূষণ পুরস্কারেও ভূষিত হন তিনি। স্বামীনাথনের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখেন, “কৃষিতে বৈপ্লবিক অবদানের বাইরেও ডক্টর স্বামীনাথন ছিলেন উদ্ভাবনী ক্ষমতার ভরকেন্দ্র। বহু মানুষের পথপ্রদর্শক ছিলেন তিনি। গবেষণার প্রতি তাঁর সঙ্কল্প বহু বিজ্ঞানী এবং গবেষককে অনুপ্রাণিত করেছিল।”
শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখেন, “স্বামীনাথনের মতো শ্রেষ্ঠ প্রতিভা আমাদের গর্বিত করেছে। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত। তাঁর পরিবার, বন্ধু এবং অগণিত অনুরাগীকে সমবেদনা জানাই।” স্বামীনাথনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও।
স্বামীনাথনের জন্ম ১৯২৫ সালের ৭ অগস্ট, তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুর জেলায়। কৃষিবিজ্ঞানী হিসাবে উচ্চফলনশীল ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। কর্মজীবন থেকে অবসরগ্রহণের পরেও দেশ-বিদেশের একাধিক পরিবেশগত এবং কৃষি সংক্রান্ত সংস্থায় পরামর্শদাতা কিংবা সদস্য হিসাবে কাজ করেছেন তিনি। এক সময় এশিয়ার ২০ জন প্রভাবশালীর তালিকাতেও উঠে এসেছিল তাঁর নাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy