গুলাম নবি আজাদ। ফাইল চিত্র।
গুলাম নবি আজাদ দল ছাড়ার পরেই পদত্যাগের হিড়িক জম্মু ও কাশ্মীর কংগ্রেসে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রশাসিত ওই অঞ্চলের আট জন কংগ্রেস নেতা দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন তিন প্রভাবশালী প্রাক্তন মন্ত্রী— আব্দুল রশিদ, জিএম সরুরি এবং আরএস চিব। রয়েছেন আমিন ভট, গুলজার আহমেদ ওয়ানি, মহম্মদ আক্রমের মতো প্রাক্তন বিধায়কেরা। তাঁরা সকলেই আজাদের নয়া দলে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে আজাদ-অনুগামী আমিন শনিবার বিজেপির সঙ্গে সমঝোতার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘জম্মু ও কাশ্মীরের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন গুলাম নবি আজাদ। অনেক দলের সমর্থনই পাবেন তিনি।’’ জম্মু ও কাশ্মীর বিধান পরিষদের প্রাক্তন সদস্য তথা আজাদ অনুগামী কংগ্রেস নেতা নরেশ গুপ্তও একই দাবি করেছেন। শুক্রবার কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্যপদে ইস্তফা দেওয়ার পরেই নতুন দল গড়ে জম্মু ও কাশ্মীরে পরবর্তী বিধানসভা ভোটে লড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আজাদ। যদিও তিনি বলেন, ‘‘আমি বিজেপির সহযোগী হব না।’’ সংখ্যালঘু ভোটের লক্ষ্যেই আজাদের এই কৌশল বলে অভিযোগ কংগ্রেসের।
চলতি বছরের শেষে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হতে পারে। ইতিমধ্যেই সেখানে ‘সক্রিয়তা’ শুরু করেছে বিজেপি। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু প্রভাবিত ওই রাজ্যে আজাদই পদ্ম-শিবিরের সেরা বাজি হতে পারেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা। কারণ, মুসলিম হলেও আজাদ কাশ্মীর উপত্যকার নেতা নন। উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে কখনওই তাঁর সখ্য ছিল না। ফলে অতীতে পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতিকে মুখ্যমন্ত্রী পদে সমর্থন করে বিজেপিকে যে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল, এ ক্ষেত্রে তার সম্ভাবনা নেই।
বস্তুত, ২০১৯ সালের অগস্টে নরেন্দ্র মোদী সরকার ৩৭০ ধারা বাতিল করার পর মেহবুবা এবং ন্যাশনাল কনফারেন্সের ওমর আবদুল্লা এবং তার বাবা ফারুকের মতো প্রাক্তন মন্ত্রীদের গৃহবন্দি করা হলেও ছাড় পেয়েছিলেন আজাদ। সে সময় থেকেই তাঁকে নিয়ে জল্পনা জমাট বাঁধতে শুরু করে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যসভার সাংসদ পদে মেয়াদ ফুরলেও এখনও দিল্লির বাংলো ছাড়তে হয়নি আজাদকে। অথচ মোদী সরকারের মন্ত্রী থাকাকালীন এলজেপি প্রধান রামবিলাস পাসোয়ানের মৃত্যুর পরেই প্রয়াত নেতার বহু দিনের বাংলো থেকে তাঁর ছেলে তথা সাংসদ চিরাগকে উৎখাত করা হয়েছিল।
আজাদের ক্ষেত্রে মোদীর মনোভাবের আঁচ মিলেছিল রাজ্যসভা থেকে তাঁর অবসরের দিন। প্রধানমন্ত্রী চোখের জল ফেলে জানিয়েছিলেন, তিনি আজাদকে অবসর নিতে দেবেন না। এর পর পদ্মভূষণ সম্মাননা দেওয়া হয় জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। প্রাথমিক ভাবে জল্পনা ছিল, আজাদকে রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্য করবে মোদী সরকার। কিন্তু তিনি দল ছাড়ার পরে পরিস্থিতির বদল হয়েছে বলে প্রবীণ নেতার অনুগামীদের দাবি।
গত কয়েক মাস ধরেই কংগ্রেসের সঙ্গে ধীরে ধীরে দূরত্ব বাড়াচ্ছিলেন আজাদ। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় রাহুল গাঁধীর ইডি দফতরে হাজিরার সময় গোটা দল রাস্তায় নামলেও তিনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বিশ্রাম নিয়েছিলেন। এর পর গত সপ্তাহে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী জম্মু ও কাশ্মীরের আসন্ন বিধানসভা ভোটের জন্য গঠিত দলীয় নির্বাচনী প্রচার কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেন আজাদকে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। কংগ্রেস ছাড়ার জন্যেও আজাদ যে সময় বেছেছেন, তাতে ‘গভীর পরিকল্পনার’ ছায়া দেখছেন অনেকে। কারণ, চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়েছেন সনিয়া। সঙ্গে রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy