Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

জ্যোতিষকে বিজ্ঞানের থেকে অনেক এগিয়ে রাখা রমেশ পেলেন শিক্ষার দায়িত্ব

উত্তরাখণ্ডের হেমবতী নন্দন বহুগুণা গঢ়বাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে ওখানেই পিএইচডি করেছিলেন নিশঙ্ক। চাকরি জীবনের শুরুতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ-পরিচালিত সরস্বতী শিশু মন্দিরের শিক্ষক ছিলেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৯ ০২:৩৫
Share: Save:

বছর কয়েক আগে বলেছিলেন, ‘‘জ্যোতিষচর্চার কাছে বিজ্ঞান কিছুই না, তুচ্ছ ব্যাপার!’’ সেই রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক-ই দায়িত্ব নিলেন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের। শিক্ষার ভার এখন তাঁর হাতে।

উত্তরাখণ্ডের হেমবতী নন্দন বহুগুণা গঢ়বাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে ওখানেই পিএইচডি করেছিলেন নিশঙ্ক। চাকরি জীবনের শুরুতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ-পরিচালিত সরস্বতী শিশু মন্দিরের শিক্ষক ছিলেন। ১৯৯০ সালে উত্তরপ্রদেশের ভোটে পাঁচ বারের কংগ্রেস বিধায়ক শিবানন্দ নৌটিয়ালকে হারিয়ে প্রথম নজরে আসেন তিনি। লোকসভা ভোটে হরিদ্বার থেকে সামান্য ব্যবধানেই জিতেছেন সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ ৬১ বছর বয়সি নিশঙ্ক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নতুন মন্ত্রিসভায় তিনি এখন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী। আগে ওই মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন প্রকাশ জাভড়েকর। এ বার তিনি পেয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের দায়িত্ব। নিশঙ্কের এক সময়ের ‘মন্তব্য’ নিয়ে এখন নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। লোকসভায় ‘দ্য স্কুল অব প্ল্যানিং অ্যান্ড আর্কিটেকচার’ বিল নিয়ে বিতর্ক চলাকালীন তৎকালীন সাংসদ নিশঙ্ক বলেছিলেন, ‘‘জ্যোতিষচর্চা সব চেয়ে বড় বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের থেকেও এটা বড় বিষয়। আমাদের সত্যিই বিষয়টি নিয়ে প্রচার করা উচিত।’’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘‘আমরা আজকাল পরমাণু বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করি। কিন্তু লক্ষ বছর আগেই কণাদ পরমাণু পরীক্ষা করেছিলেন।’’ সে দিন এখানেই থামেননি উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, ‘‘অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জ্ঞানও অনেক দিন আগে থেকে রয়েছে আমাদের।’’ এ কথা অবশ্য তিনি প্রথম নন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখেও শোনা গিয়েছিল। মোদী বলেছিলেন, গণেশের মাথা প্লাস্টিক সার্জারিরই নির্দশন। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মোদী এক জায়গায় এ-ও লিখেছিলেন, প্রথম বিমান উড়িয়েছিলেন রাম।

মন্ত্রকের দায়িত্ব গ্রহণের পরে আজ নয়া শিক্ষানীতির খসড়া প্রস্তাব তুলে দেওয়া হয় নিশঙ্কের হাতে। মোদী-জমানার প্রথম পাঁচ বছরে দিনের আলো দেখেনি ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’, যার দায়িত্বে রয়েছেন ইসরোর প্রাক্তন প্রধান কে কস্তুরীরঙ্গন। ও দিকে, জাতীয় শিক্ষানীতিকে বাস্তবায়িত করতে বরাবরই চাপ দিয়ে আসছেন সঙ্ঘ-প্রধান মোহন ভাগবত। বিরোধীদের অভিযোগ, শিক্ষাব্যবস্থার গৈরিকীকরণের জন্যই এই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মোদী-সরকার। এই মুহূর্তে নিশঙ্কের উপরে বড় চাপ, আগামী একশো দিনের মধ্যে জাতীয় শিক্ষানীতিকে সামনে আনা। পাশাপাশি, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে থমকে থাকা শিক্ষক-নিয়োগ প্রক্রিয়া তরান্বিত করা। ইউজিসি তুলে দিয়ে উচ্চশিক্ষা কমিশন গড়ার বিষয়েও চাপ থাকবে নিশঙ্কের ঘাড়ে। এ বিষয়ে রাজ্যগুলোর সমর্থন প্রয়োজন। বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোর সমর্থন আদায় করতে পারলেও অন্য রাজ্যগুলোতে নিশঙ্ককে বেগ পেতে হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

ramesh pokhriyal nishank HRD Ministry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE