রামদেব এবং বালকৃষ্ণের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর এবং নিতিন গডকড়ী। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা না দিয়েই বাজারে একেবারে করোনার ওষুধ নিয়ে হাজির হয়েছিল তারা। আয়ুষ মন্ত্রকের আপত্তিতে শেষমেশ বিজ্ঞাপন তুলে নিতে হয়েছিল। করোনার সেই ‘ওষুধ’ রাতারাতি হয়ে যায় ‘শক্তিবর্ধক ওষুধ’। ৪ মাসও কাটেনি। এ বার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের হাত দিয়েই পতঞ্জলির তৈরি ‘করোনিল’ ওষুধের ‘বিজ্ঞানসম্মত গবেষণাপত্র’ প্রকাশ করালেন যোগগুরু তথা পতঞ্জলির প্রতিষ্ঠাতা বাবা রামদেব। সেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, যিনি কি না এক জন চিকিৎসকও বটে!
শুক্রবার কেন্দ্রীয় হর্ষ বর্ধন এবং কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর উপস্থিতিতে পতঞ্জলির তরফে করোনিলের গবেষণাপত্রটি করা হয়। রামদেব এবং সংস্থার কর্ণধার বালকৃষ্ণর সঙ্গে ওই ওষুধ হাতে নিয়ে ক্যামেরার সামনেও ধরা দেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সেখানে রামদেব দাবি করেন, ‘‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ছাড়পত্র দিয়েছে। করোনার ওষুধ হিসেবে করোনিলকে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রকও।’’
কিন্তু গত বছর করোনিলকে ঘিরে যে বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছিল, সে নিয়ে প্রশ্ন করলে রামদেব বলেন, ‘‘গত ৩ দশক ধরে আমাকে নিয়ে কম প্রশ্ন ওঠেনি। রোগ নিয়ন্ত্রণ করার বদলে নির্মূল করার ডাক দিয়েছিলাম। তার জন্যও কম সমালোচনা হয়নি। কিন্তু বর্তমানে আমাদের কাছে ২৫০-র বেশি গবেষণাপত্র রয়েছে। শুধুমাত্র করোনার উপর ২৫টি গবেষণাপত্র রয়েছে। পৃথিবীর আর কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবেন না।’’
করোনিল প্রসঙ্গে হর্ষ বর্ধন বলেন, ‘‘ভারতীয় অর্থনীতিতে ৩০ হাজার কোটি টাকা যোগদান রয়েছে আয়ুর্বেদিক ওষুধের। সমীক্ষা বলছে, করোনার আগে মানুষের মধ্যে আয়ুর্বেদিক ওষুধের চাহিদা ছিল ১৫-২০ শতাংশ। কোভিড পরবর্তী কালে তা বেড়ে ৫০-৯০ শতাংশ হয়েছে। এতেই বোঝা যায়, মানুষের মধ্যে আয়ুর্বেদিক ওষুধের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। বিদেশ-বিভুঁইয়েও এখন আয়ুর্বেদিক ওষুধ রফতানি করা হচ্ছে। তাতে বিদেশি বিনিয়োগও বেড়েছে।’’
অতিমারির সঙ্গে যখন যুঝছে ভারত, সেই সময় ২০২০-র জুনে বাজারে করোনিল কিট নিয়ে হাজির হয় পতঞ্জলি। দাবি করে তাদের তৈরি ‘করোনিল’ ও ‘শ্বাসরি’ নামে দু’টি ওষুধ করোনা সারাতে ১০০ শতাংশ সফল। এই ওষুধ ৭ দিনে করোনা সারিয়ে তুলবে। ২৮০ জন করোনা রোগীর উপরে পরীক্ষার ফল থেকেই ওই ওষুধ তৈরি করা হয়েছে বলেও জানায় তারা।
কিন্তু করোনার ওষুধ হিসেবে বাজারে ওই দু’টি ওষুধ আনে পতঞ্জলি, সে কথা লাইসেন্স নেওয়ার সময় একবারও উল্লেখ করা হয়নি বলে জানা যায়। তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে নড়েচড়ে বসে কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রক। পতঞ্জলিকে নোটিস পাঠিয়ে ওষুধগুলির উপাদান, কোথায় গবেষণা হয়েছে, কত জন রোগীর উপরে পরীক্ষা হয়েছে এবং তার ফলাফল কী, তা সবিস্তারে জানাতে বলা হয়।
ওষুধের গুণাগুণ পরীক্ষা না-হওয়া পর্যন্ত বিজ্ঞাপন, বিপণন বন্ধ রাখতেও নির্দেশ দেওয়া হয় পতঞ্জলিকে। তার পর করোনার ওষুধের পরিবর্তে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাবর্ধক ওষুধ হিসেবে করোনিল বিক্রি করতে শুরু করে পতঞ্জলি। তার পরই শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ছাড়পত্র পেল তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy