রাম সেতু ছবিতে অক্ষয় কুমার। ছবি: সংগৃহীত।
রুপোলি পর্দায় অক্ষয় কুমার ‘খুঁজে’ বার করে ফেলতে পারেন, বাস্তবে কিন্তু তা বেশ কঠিন। রাজ্যসভায় বিজেপি সাংসদ কার্তিকেয় শর্মার রাম সেতু সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা কার্যত মেনে নিলেন কেন্দ্রীয় ভূবিজ্ঞান এবং মহাকাশ গবেষণা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ।
মহাকাব্য আর ইতিহাসে একাকার হয়ে যাওয়া পক্ প্রণালীতে রাম সেতুর ‘প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ কিছু প্রমাণ’ তাঁদের হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভায় সদস্য জিতেন্দ্র। কিন্তু সেই সঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘রাম সেতু সম্পর্কে তথ্য আবিষ্কার করার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কারণ, ইতিহাস ১৮ হাজার বছরেরও বেশি পুরনো এবং আপনি যদি ইতিহাসকে অনুসরণ করেন, তবে জানতে পারবেন যে সেই সেতুটি প্রায় ৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ছিল।’’
ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মাঝে ভারত মহাসাগরে নিমজ্জিত ওই ‘সেতুর আকারের ভূখণ্ড’ প্রাকৃতিক না কি মানুষের তৈরি, তা নিয়ে বিবাদ দীর্ঘদিনের। বছর কয়েক আগে মোদী সরকার জানিয়েছিল, রাম সেতুর বয়স নির্ধারণ করতে গবেষণা ও পরীক্ষানিরীক্ষা করা হবে। জিতেন্দ্রর নিয়ন্ত্রণাধীন ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই) পরিচালিত কেন্দ্রীয় নৃতাত্ত্বিক গবেষণা পরিষদ এই প্রকল্পে সায় দিয়েছিল। গবেষণায় যুক্ত ছিল গোয়ার কেন্দ্রীয় সমুদ্র বিজ্ঞান কেন্দ্রও।
কিন্তু সেই গবেষণার প্রাথমিক ফল যে ‘আশাব্যঞ্জক’ হয়নি, তা রাজ্যসভায় মন্ত্রীর বক্তব্যেই স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, ‘‘মহাকাশ প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা টুকরো টুকরো দ্বীপগুলিকে খুঁজে পেয়েছি। চুনাপাথরের তৈরি ওই দ্বীপগুলি দেখে নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না, সেগুলি কোনও সেতুর অংশ কি না।’’ তবে চুনাপাথরের ওই কাঠামোগুলি ‘নির্দিষ্ট ধারাবাহিকতা’ মেনেই অবস্থান করছে বলে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্রর দাবি। আর তাকেই রাম সেতুর ‘পরোক্ষ প্রমাণ’ বলে দাবি করছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারের দীর্ঘ দিনের দাবি, তামিলনাড়ুর ধনুষ্কোটি থেকে পক প্রণালী ধরে শ্রীলঙ্কা পর্যন্ত জলে ডুবে থাকা পাথরের সেতু প্রাকৃতিক নয়, মানুষের তৈরি। ইউপিএ সরকার পক্ প্রণালীতে ড্রেজিং করে জাহাজ চলাচলের পথ তৈরির একটি প্রকল্প নিয়েছিল, যার নাম ‘সেতুসমুদ্রম’। বিজেপি তাতে বাধা দিয়ে জানিয়েছিল, ওই সেতু রাম ও বানর সেনাদের তৈরি বলে মানুষের বিশ্বাস। ড্রেজিং করে তার কোনও ক্ষতি করা তারা মেনে নেবে না। অন্য দিকে, পদ্ম-শিবিরের দাবি ছিল, ওই সেতু আকৃতির ভূখণ্ড সামুদ্রিক প্রবালের প্রাচীর নয়, পুরোদস্তুর পাথরের তৈরি।
বিতর্কের জেরে মামলাও হয়েছিল। তৎকালীন ইউপিএ সরকার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে বলে, প্রাকৃতিক এই সেতু রামের তৈরি বলে মানুষের বিশ্বাসের কোনও ভিত্তি নেই। ‘সেতুসমুদ্রম’ প্রকল্পটি হলে ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলের মধ্যে জাহাজ চলাচলে সময় যেমন কম লাগবে, তেলের খরচও কমে যাবে। পরে মোদী ক্ষমতায় আসার পরে সেই প্রকল্পের কাজ আর এগোয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy