মধ্যস্থতা বিতর্কে বিবৃতি রাজনাথের। ছবি: টুইটার
কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্প ও মোদীর কোনও আলোচনাই হয়নি। কাশ্মীর-মধ্যস্থতা বিতর্কে এ বার লোকসভায় বিবৃতি দিয়ে জানালেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। কিন্তু, তাতেও শান্ত হচ্ছে না বিরোধীরা। এ দিনও প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করে কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধীরা। প্রতিবাদে ওয়াকআউট করে কংগ্রেস।
সত্যিই কি ট্রাম্পকে কাশ্মীর মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী? এই প্রশ্নেই মঙ্গলবার থেকে তোলপাড় সংসদ। গত কাল তা নিয়ে সংসদের দুই কক্ষেই ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কখনই কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেননি। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান কড়া পদক্ষেপ করলে তবেই আলোচনার রাস্তা খুলবে।’’ একই সঙ্গে শিমলা ও লাহৌর চুক্তির কথাও তুলে ধরেন বিদেশমন্ত্রী। কিন্তু জয়শঙ্করের বিবৃতিতে চিঁড়ে ভেজেনি। ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বুধবারও ঝড় ওঠে সংসদে। ফের প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করে কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধীরা।
কাশ্মীরের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে তাঁকে জড়িয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের পর দু’দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু, এখনও নীরব প্রধানমন্ত্রী। তাঁর ব্যাখ্যা চেয়ে বুধবার লোকসভায় মুলতুবি প্রস্তাব আনেন কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর। তারপরই ব্যাটন হাতে তুলে নেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘জাপানের ওসাকায় জি-২০ সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদী ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছিল তা আমরা জানি না। আজ প্রধানমন্ত্রীর সংসদে উপস্থিত থাকা উচিত ছিল, কিন্তু, তিনি নেই। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের পর আমরা চুক্তি করি। তারপর, শিমলা চুক্তিতে বলা হয়, ভারত-পাকিস্তান পারস্পরিক মতপার্থক্যের বিষয়গুলি দ্বিপাক্ষিক স্তরেই আলোচনা হবে। এখানে তৃতীয় পক্ষের কোনও ভূমিকা নেই। ডোনাল্ড ট্রাম্প মিথ্যা বলছেন কি না, তা মোদীর মুখ থেকেই শুনতে চাই।’’ এই দাবিতেই সংসদে হই হট্টগোল শুরু করে কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধীরা। শেষে ওয়াকআউট করেন কংগ্রেস সাংসদরা। কংগ্রেসের দাবিকে সমর্থন করেছেন ডিএমকে নেতা টিআর বালুও।
আরও পড়ুন: কর্নাটকে সরকার গড়ার প্রস্তুতি বিজেপির, চতুর্থ বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পথে ইয়েদুরাপ্পা
এ দিন বিষয়টি নিয়ে ফের সংসদে ব্যাখ্যা দেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তাঁর গলাতেও বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি শোনা যায়। রাজনাথ বলেন, ‘‘এটা আমাদের আত্মমর্যাদার প্রশ্ন। ট্রাম্প ও মোদীর আলোচনায় কাশ্মীর প্রসঙ্গ ওঠেনি। কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতার কোনও প্রশ্নই নেই। কারণ তা শিমলা চুক্তির বিরোধী।’’
কাশ্মীর বিবাদকে ভারত বরাবরই দ্বিপাক্ষিক সমস্যা বলে মনে করে। ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তিতে কাশ্মীরকে দ্বিপাক্ষিক বিষয় বলেই মেনে নিয়েছিল দুই দেশই। সেই চুক্তি এবং লাহৌর ঘোষণাপত্রই পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তি হওয়া উচিত বলে মনে করে নয়াদিল্লি। অথচ, দীর্ঘদিন ধরেই কাশ্মীর নিয়ে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের দাবি তুলছে পাকিস্তান। পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা ও বালাকোটে অভিযানের পর থেকে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের তিক্ততা চরমে উঠেছে। এর মাঝেই ইমরান খানকে পাশে বসিয়ে কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য নয়াদিল্লির রাজনীতিতে ঝড় তুলেছে। বিদেশমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্যাখ্যা দিলেও তাতে শান্ত হয়নি বিরোধীরা। বিরোধীদের লক্ষ্য, ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি আদায় করে নেওয়া।
আরও পড়ুন: ফাইভে স্কুলছুট, সংসার চালাতে টাঙ্গা চালাতেন, এখন এঁর ২০০০ কোটির ব্যবসা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy