Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

সঙ্ঘ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপেই কি রাজনাথ ফেরত

প্রবল ক্ষমতা নিয়ে এসে নরেন্দ্র মোদী সরকারের এক সপ্তাহও কাটেনি, রাজনাথ সিংহের ডানা ছাঁটার ঘটনায় সেই সময়টি ‘খুব দ্রুত’ই চলে এল বলে মনে করছেন বিজেপির কিছু নেতা।

প্রবল ক্ষমতা নিয়ে এসে নরেন্দ্র মোদী সরকারের এক সপ্তাহও কাটেনি, রাজনাথ সিংহের ডানা ছাঁটার ঘটনায় সেই সময়টি ‘খুব দ্রুত’ই চলে এল বলে মনে করছেন বিজেপির কিছু নেতা।

প্রবল ক্ষমতা নিয়ে এসে নরেন্দ্র মোদী সরকারের এক সপ্তাহও কাটেনি, রাজনাথ সিংহের ডানা ছাঁটার ঘটনায় সেই সময়টি ‘খুব দ্রুত’ই চলে এল বলে মনে করছেন বিজেপির কিছু নেতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৯ ০৩:০০
Share: Save:

পাঁচ দিন আগেই আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত প্রকাশ্যে সতর্ক করেছিলেন। স্পষ্ট বলেছিলেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যাঁরা জিতে এসেছেন, তাঁদের প্রবল ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু তার মানে এই নয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করতে হবে। সরকারের ত্রুটি ধরা পড়লে সঙ্ঘ ইতিবাচক পরামর্শ দেবে।

প্রবল ক্ষমতা নিয়ে এসে নরেন্দ্র মোদী সরকারের এক সপ্তাহও কাটেনি, রাজনাথ সিংহের ডানা ছাঁটার ঘটনায় সেই সময়টি ‘খুব দ্রুত’ই চলে এল বলে মনে করছেন বিজেপির কিছু নেতা। গত কাল মোদী মন্ত্রিসভার যে সব কমিটি গঠন করেন, তার সিংহ ভাগেই রাখা হয়নি রাজনাথকে। কিন্তু অমিত শাহ রয়েছেন সব ক’টিতে। এমনকি রাজনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভার কমিটি থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছিল রাজনাথকে। দিনভর বিতর্কের পরে নতুন তালিকা প্রকাশ করে রাজনাথের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গত কাল রাতেই রাজনাথের দফতর থেকে স্পষ্ট বলা হয়েছে, তাঁকে কমিটি থেকে দূরে রাখলেও তিনি ইস্তফা দিতে চাননি। সঙ্ঘও হস্তক্ষেপ করেনি। কিন্তু প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছে। আর তার জের চলল আজ দিনভরও। বিজেপির কিছু নেতা যা ঘরোয়া মহলে বলছেন, বিরোধী নেতারাও তা বলতে শুরু করেছেন— ‘‘আসলে মোদী-অমিত জুটির মুখোশ এক সপ্তাহেই খুলে গেল। রাজনাথ সিংহও সতর্ক হয়ে গেলেন। সঙ্ঘ নেতৃত্বও। দলে চাপা অসন্তোষ তো ছিলই। গত কালের ঘটনায় ভবিষ্যতের লড়াইয়ের ভিতটা তৈরি হয়ে থাকল।’’

অভিযোগের আঙুল মোদী-শাহের দিকে উঠতেই আজ সরকারের একটি অংশ নতুন যুক্তি সামনে আনেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী জানতেনই না তালিকায় রাজনাথের নাম বাদ পড়েছে। নজরে আসতেই সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করেছেন।’’ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে আড়াল করার এই তত্ত্ব নাটকে আরও বড় মোড় এনে দিল। স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠছে, প্রধানমন্ত্রী যদি না জানেন, তা হলে রাজনাথের ডানা ছাঁটার সিদ্ধান্ত কি অমিত শাহের? সরকারে অমিত যে ভাবে ধাপে ধাপে ক্ষমতাধর হয়ে উঠছেন, তাতে কি মোদীর সঙ্গেও তাঁর দূরত্ব হচ্ছে? তা না হলে মন্ত্রিসভার কমিটির সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর ‘অজান্তে’ হয় কী করে?

জেডি(ইউ)-এর পবন বর্মার ঠেস— ‘‘অমিত শাহকে কেন উপপ্রধানমন্ত্রী করে দিচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী?’’ লালকৃষ্ণ আডবাণীর একদা সহযোগী সুধীন্দ্র কুলকার্নির মতে, ক্ষমতার শীর্ষে দু’জন ক্ষমতাধর ব্যক্তি থাকতে পারেন না। গত কাল থেকেই দিল্লিতে একটি রসিকতা মুখে মুখে ঘুরছে, ‘‘অমিত শাহ প্রথমে লালকৃষ্ণ আডবাণীর আসন কেড়েছেন, তার পরে রাজনাথের মন্ত্রক আর এখন অটলবিহারী বাজপেয়ীর ঘরও কব্জা করতে চলেছেন।’’

কিন্তু রাজনাথ সিংহের শিবির গোটা ঘটনায় কোনও ‘নতুনত্ব’ দেখছে না। পাঁচ বছর আগে রাজনাথের থেকে দায়িত্ব নিয়ে বিজেপির সভাপতি হয়েছিলেন অমিত শাহ। নরেন্দ্র মোদী সরকার তখন সবে ক্ষমতায় এসেছে। হঠাৎই রাজনাথ সিংহের ছেলে পঙ্কজের বিরুদ্ধে অনিয়মের নানা অভিযোগ ভেসে উঠল। ক্ষিপ্ত রাজনাথ তখন প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, অভিযোগ সত্য হলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে প্রধানমন্ত্রী দফতর ও বিজেপি সভাপতির পক্ষ থেকে সেই সময় লিখিত বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, রাজনাথের ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’। কিন্তু রাজনাথ শিবিরের নেতারা এখনও মনে করেন, পঙ্কজের বিরুদ্ধে সে সময় গুজব ছড়ানোর নেপথ্যেও ছিলেন মোদী-শাহ জুটি। আর বিবৃতি দিয়ে সেই গুজবকে আরও পল্লবিত করার কৌশলও তাঁদেরই।

এর মধ্যেই আজ রাতে রাজনাথ সিংহের বাড়িতে বৈঠক হল মন্ত্রিসভার সংসদ বিষয়ক কমিটির। রাজনাথ আজ নিজের বাড়িতেই বৈঠকটি ডাকেন। যেখানে আসতে হয় অমিতকেও। ঠিক হয়, স্পিকার মনোনয়নের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বয়সই মাপকাঠি হবে না, প্রার্থীর যোগ্যতাও দেখা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Politics Rajnath Singh Central Ministry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE