অশোক গহলৌত এবং সনিয়া গান্ধী। ফাইল চিত্র।
রবিবার রাতে জয়পুরে অশোক গহলৌত অনুগামী কংগ্রেস বিধায়কদের ‘ইস্তাফার নাটকের চিত্রনাট্য’ তৈরি করেছিলেন দলেরই তিন প্রবীণ নেতা। মুখ্যমন্ত্রী গহলৌতের ঘনিষ্ঠ ওই তিন জন হলেন, রাজস্থানের নগরোন্নয়ন, আবাসন ও পরিষদীয় মন্ত্রী শান্তি ধারিওয়াল, কংগ্রেস পরিষদীয় দলের চিফ হুইপ মহেশ জোশী এবং রাজ্য পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান ধর্মেন্দ্র পাঠক। মঙ্গলবার কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর কাছে রাজস্থান পরিস্থিতি নিয়ে লিখিত রিপোর্ট পেশ করে এ কথা জানিয়েছেন, এআইসিসি নিযুক্ত দুই পর্যবেক্ষক মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং অজয় মাকেন।
সনিয়াকে দেওয়া রিপোর্টে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ১০ দিনের মধ্যে ওই তিন নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে। এআইসিসির একটি সূত্র জানাচ্ছে, মঙ্গলবার রাতেই সুপারিশ মেনে নোটিস পাঠানো হয়েছে ওই তিন নেতাকে। কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের আগে মাকেনের এই রিপোর্ট গহলৌতের বিড়ম্বনা বাড়াবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের একটি সূত্রে খবর এসেছে, দক্ষিণ ভারতে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ চলাকালীন গহলৌত অনুগামী রাজস্থানে কংগ্রেস বিধায়কদের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ সভানেত্রী সনিয়া। ঘনিষ্ঠ নেতাদের নাকি সে ‘বার্তাও’ দিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের সভাপতি পদের দৌড় থেকে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ছিটকে যেতে পারেন বলেও ওই সূত্রের দাবি। সভাপতি পদে বিকল্প হিসাবে মধ্যপ্রদেশের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ এবং দিগ্বিজয় সিংহের পাশাপাশি খড়্গের নামও জল্পনায় রয়েছে। যদিও দলের অন্য একটি সূত্রের খবর, জয়পুর-কাণ্ড নিয়ে গহলৌত প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ করায় ‘বরফ গলেছে’।
গত সপ্তাহেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী জানিয়ে দিয়েছিলেন, কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হলে ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি মেনে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হবে গহলৌতকে। এর পর রবিবার এআইসিসি নিযুক্ত দুই পর্যবেক্ষক খড়্গে এবং মাকেন পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী মনোনয়নের জন্য বিধায়কদের মত জানতে জয়পুরে গিয়েছিলেন। কিন্তু গহলৌত গোষ্ঠীর বিধায়কেরা তাঁদের সঙ্গে দেখা না করে ধারিওয়ালের বাড়িতে পৃথক বৈঠক করেন।
ওই বৈঠকে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, কোনও অবস্থাতেই ২০২০ সালে গহলৌতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা পাইলটতে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মেনে নেওয়া হবে না। স্পিকার সিপি জোশীর বাড়ি গিয়ে অন্তত ৮২ জন গহলৌত অনুগামী বিধায়ক ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন বলে কংগ্রেসের একটি সূত্রের খবর। পাইলটকে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী মনোনীত করা হলে দল ছাড়ারও হুমকি দেন তাঁরা। রাজস্থানের কংগ্রেস বিধায়কদের সঙ্গে কথা না বলেই সোমবার দিল্লি ফিরে আসেন মাকেন। তিনি বলেন, ‘‘যে বিধায়কেরা আলাদা ভাবে বৈঠক করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কাজের অভিযোগ ওঠা অসঙ্গত নয়।’’ মরুরাজ্যে দলের প্রবল অন্তর্দ্বন্দ্বের আবহেই মঙ্গলবার দিল্লি এসেছেন পাইলট। সূত্রের খবর, সনিয়ার সঙ্গে দেখা করতে পারেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy