অশোক গহলৌত এবং সচিন পাইলট। ফাইল চিত্র।
কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় বিজেপি শিবির উল্লসিত। তবে বিজেপির সভাপতির ক্ষেত্রে নির্বাচন করানোর কথা ভাবছেন না দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তার বদলে বর্তমান জাতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডার মেয়াদ আগামী লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে বিজেপি সভাপতি পদে নড্ডার তিন বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
রবিবার হরিয়ানায় নীতীশ কুমার, লালুপ্রসাদ যাদবরা বিরোধী জোটের ডাক দেওয়ার পরে সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁরা কংগ্রেস ও বাকি বিরোধী দলগুলিকে নিয়েই জোট তৈরির পক্ষে। সনিয়ার সঙ্গে নীতীশ-লালুর ওই বৈঠকের পরেই ঠিক হয়, কংগ্রেসের নতুন সভাপতি নির্বাচন মিটে গেলেই কংগ্রেস বিরোধী জোটের বিষয়ে উদ্যোগী হবে। সেই সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই কংগ্রেসের অভ্যন্তরে নতুন করে সঙ্কট তৈরি হওয়ায় উল্লসিত বিজেপির নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর কংগ্রেসের ‘বেহাল দশা’ নিয়ে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসের কোনও দিশাও নেই, নেতাও নেই। নেতার কথাও কেউ শোনে না।’’
কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে বিরোধী জোট করতে উদ্যোগী নীতীশ কুমারকেও আজ বিজেপি কটাক্ষ করেছে। বিজেপির তরফে নীতীশকে নিয়ে তৈরি কার্টুন তুলে ধরা হয়েছে। তাতে নীতীশকে ‘পল্টুরাম’ তকমা দিয়ে বলা হয়েছে, নীতীশ প্রধানমন্ত্রীর গদির পিছনে দৌড়চ্ছেন। বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব রবিবারই কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, রাহুল গান্ধী ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় হাঁটার বদলে আগে অশোক গহলৌত ও সচিন পাইলটকে জোড়ার চেষ্টা করুন! পাইলট এর আগে গহলৌতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ জানিয়ে বিজেপির দিকে পা বাড়িয়েও কংগ্রেসে ফিরে আসেন। এ বারও বিজেপি রাজস্থানে কংগ্রেসের সঙ্কটের ফায়দা তোলার চেষ্টা করবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিজেপি নেতাদের দাবি, তাঁদের সঙ্গে কংগ্রেসের অন্দরের ঘটনাবলীর কোনও সম্পর্ক নেই।
বিজেপি অবশ্য নিজেদের দলে সভাপতি নির্বাচন করাতে চাইছে না। দলের নেতাদের বক্তব্য, লোকসভা নির্বাচনের আর দু’বছরও বাকি নেই। এই পরিস্থিতিতে আগামী বছর আর সভাপতি নির্বাচনের প্রশ্ন নেই। নড্ডা ২০১৯-এর জুলাইয়ে কার্যকরী সভাপতি হয়েছিলেন। তার পরে ২০২০-র জানুয়ারিতে জাতীয় সভাপতি হন। তাঁর কাজে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ সন্তুষ্ট, তাই ২০২৩-এ তাঁর তিন বছরের মেয়াদ শেষ হলে তা ফের বাড়িয়ে দেওয়া হবে। বিজেপির সংবিধান অনুযায়ী, কেউ টানা দু’বার তিন বছর করে সভাপতি হতে পারেন। কংগ্রেস নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, নড্ডা যখন সভাপতি হন, তখনও বিজেপিতে নির্বাচন হয়নি।
বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, গত দু’সপ্তাহে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র যে সুফল কংগ্রেস ঘরে তুলেছিল, দলের সভাপতি নির্বাচন ঘিরে নেতিবাচক প্রচারে তা জলে চলে গেল। গহলৌত বনাম পাইলট বিবাদ ফের প্রকাশ্যে চলে আসায় রাজস্থানে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপির সুবিধা হয়ে গেল। রাজস্থানের বিজেপি নেতা রাজেন্দ্র রাঠৌর আজ দাবি তুলেছেন, কংগ্রেসের অশোক গহলৌতের অনুগামী বিধায়করা যখন ইস্তফা দেওয়ার কথাবলছেন, তখন তাঁরা নিয়ম মেনে স্পিকারের কাছে ইস্তফা দিন। সে ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীরও উচিত বিধানসভা ভেঙে দিয়ে ভোটে যাওয়া। রাঠোরের বক্তব্য, ‘‘অশোক গহলৌত সরকারের সূচনাই হয়েছিল গহলৌত ও পাইলটের বিবাদ থেকে। বিবাদের জেরে মন্ত্রী, বিধায়করা রাজ্যের কাজ ছেড়ে হোটেলে গিয়ে বসে থেকেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy