রাজভবনের বাইরে অশোক গহলৌত। ছবি: পিটিআই।
যত দ্রুত সম্ভব বিধানসভার অধিবেশন শুরু করতে হবে, এই দাবি জানিয়ে রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রর বাড়িতে চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধর্নায় বসেছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত।
তিনি শুক্রবার জানান, সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন রয়েছে তাঁর কাছে। তাই আস্থাভোটে যেতে আপত্তি নেই তাঁদের। এর পরই গহলৌত অভিযোগ করেন, কোনও ‘চাপের’ কারণেই রাজ্যপাল বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি করছেন। গহলৌত বলেন, “গতকালই চিঠি দিয়ে বিধানসভার অধিবেশন ডাকার জন্য রাজ্যপালকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু সারা রাত অপেক্ষা করেও কোনও উত্তর পাইনি।” রাজ্যপালের এই ‘নিষ্ক্রিয়’ ভূমিকার পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গহলৌত।
এ দিন দলের ১০০ জন বিধায়ককে নিয়ে রাজ্যপালের বাড়িতে ধর্নায় বসেছিলেন গহলৌত। তাঁদের দাবি ছিল যত ক্ষণ না বিধানসভার অধিবেশনের বিষয়টি সুনিশ্চিত করবেন তত ক্ষণ ধর্না চালিয়ে যাবেন। বিধায়করা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘এখনই বিধানসভার অধিবেশন ডাকুন। আমরা বিচার চাই। এ দিন ১০২ বিধায়কের নাম রাজ্যপালের কাছে জমা দিয়েছেন গহলৌত।
গহলৌতরা যখন ধর্না চালাচ্ছিলেন, সে সময় রাজ্যপাল বেরিয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রীকে জানান যে, তিনি আইনি পরামর্শ নিচ্ছিলেন। যেহেতু মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। গহলৌত তখন তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যত ক্ষণ না অধিবেশনের কথা ঘোষণা করবেন তাঁরা রাজভবন ছেড়ে যাবেন না। যদিও রাজ্যপাল প্রত্যুত্তরে জানিয়ে দেন, “আমি এ বিষয়ে এখনই কিছু বলব না।”
রাজ্যপালের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন ‘স্পষ্ট’ নয়। এবং যে চার লাইনের প্রস্তাব পেশ করেছেন তাঁরা তাতে বিধানসভার কোনও অ্যাজেন্ডার কথা উল্লেখ ছিল না। যদিও রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রঘু শর্মা জানান, রাজ্যপাল তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন যে সংবিধান মেনেই তিনি ব্যবস্থা নেবেন।
অন্য দিকে, সচিন এবং তাঁর অনুগামী ১৮ জন বিধায়কের বিরুদ্ধে এখনই পদক্ষেপ করা যাবে না বলে শুক্রবার জানিয়েছে রাজস্থান হাইকোর্ট। তার পরই রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত। তাঁর বক্তব্য, ‘‘উপর থেকে কী এমন চাপ আসছে, যার জন্য রাজ্যপাল বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে ইতস্তত করছেন, তা জানি না আমরা।’’
আরও পড়ুন: সচিনদের বিরুদ্ধে এখনই কোনও পদক্ষেপ নয়, আস্থাভোটের তোড়জোড় গহলৌত শিবিরে
বিধানসভা অধিবেশন না ডাকা হলে পরিস্থিতি বেগতিক হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেন গহলৌত। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। উনি যে চাপে রয়েছেন, তা বুঝতে পারছি। কিন্তু ওঁকে অনুরোধ করব, যাতে অধিবেশন ডাকা নিয়ে কোনও রকম চাপের মুখে নতিস্বীকার না করেন। নইলে রাজ্যের মানুষ যদি রাজভবন ঘেরাও করতে চলে আসেন, তাহলে আমাদের কোনও দায়িত্ব থাকবে না।’’
বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়কদের বিজেপি হরিয়ানায় পণবন্দি করে রেখেছে বলেও এ দিন দাবি করেন গহলৌত। তাঁর অভিযোগ, ‘‘গোটাটাই বিজেপির খেলা। ওদের নেতারা এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমাদের বিধায়কদের পণবন্দি করে রাখা হয়েছে। কর্নাটক এবং মধ্যপ্রদেশে ঠিক যেমনটি ঘটেছিল, রাজস্থানেও তা ঘটাতে চাইছে ওরা। কিন্তু সমস্ত বিধায়ক এবং সাধারণ মানুষ আমাদের পাশে রয়েছেন।’’
আরও পড়ুন: রাম মন্দির তৈরির তোড়জোড়ের মধ্যেই বাবরি মসজিদ মামলায় বয়ান রেকর্ড আডবাণী-জোশীদের
আস্থাভোট হলে তাঁর সরকার যে জিতবে, তা প্রমাণ করতে এ দিন সমর্থক বিধায়কদের বাসে চাপিয়েই রাজভবনের উদ্দেশে রওনা দেন গহলৌত। অবিলম্বে বিধানসভার অধিবেশন শুরু করার দাবিতে রাজভবনের সামনে ধর্নায়ও বসেন ওই বিধায়করা। কিন্তু আস্থাভোট নিয়ে গহলৌত তাড়াহুড়ো করছেন বলে মত বিজেপির। রাজস্থানে বিজেপির সভাপতি সতীশ পুনিয়া বলেন, ‘‘বিধানসভার অধিবেশন ডাকা নিয়ে এত মরিয়া হয়ে উঠেছেন কেন গহলৌত? মানুষ রাজভবন ঘেরাও করবেন, এক জন মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এ ধরনের মন্তব্য শোভা পায় না। মনে হচ্ছে, যে বা যাঁরা তাঁর বিরোধিতা করছেন, তাঁদের সকলকে দল এবং বিধানসভা থেকে বার করে দিতে চাইছেন তিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy