Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Ashok Gehlot

‘ভোটের পরে কংগ্রেস হাইকমান্ড আমার ভূমিকা ঠিক করবে’, মুখ্যমন্ত্রিত্ব জল্পনা বাড়ালেন গহলৌত

রাজস্থানে সাধারণত পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদল হয়। এ বার গহলৌতকে সামনে রেখেই সেই প্রথা ভাঙতে চাইছে কংগ্রেস। কিন্তু দলের অন্দরে ধন্দ রয়েছে গহলৌতের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়েই।

অশোক গহলৌত।

অশোক গহলৌত। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
জয়পুর শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:৪৫
Share: Save:

রাজস্থানে বিধানসভা ভোটের প্রচারের শেষ বেলায় মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে জল্পনা উস্কে দিলেন অশোক গহলৌত। নির্বাচনের পরে তিনিই আবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন কি না প্রশ্ন করা হলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘‘আমার ভূমিকা সব সময় হাইকমান্ড যা চায় তাই হয়েছে। আমি আমার নিজের ভূমিকা ঠিক করি না। হাইকমান্ড আমাকে যে ভূমিকা দেবে, আমি তা পালন করব।’’

আগামী শনিবার (২৫ নভেম্বর) রাজস্থান বিধানসভার ২০০টি আসনেই এক দফায় ভোটগ্রহণ হবে। গণনা আগামী ৩ ডিসেম্বর দেশের অন্য চার রাজ্য— মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, তেলঙ্গানা এবং মিজ়োরামের সঙ্গে। বৃহস্পতিবারই প্রচারের শেষ দিন। নির্বাচনে জিতে কংগ্রেস আবার ক্ষমতা দখল করলে গহলৌতকেই আবার মুখ্যমন্ত্রী করা হবে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে মরুরাজ্যে। কংগ্রেসের অন্দরে ‘গহলৌত বিরোধী’ হিসেবে পরিচিত প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সচিনকে রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গেরা বেছে নিতে পারেন বলেও জল্পনা রয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কংগ্রেসের তরফে ‘পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ হিসাবে কোনও নাম ঘোষণা করা হয়নি।

সূত্রের খবর, গহলৌত গোষ্ঠীর কয়েক জন বিধায়ক এবং মন্ত্রীকে টিকিট দেওয়ার বিষয়ে জোরালো আপত্তি তুলেছেন সচিন। আর তা নিয়েই দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে সমস্যা। সম্ভবত, এমন সম্ভাবনার আঁচ পেয়ে আড়াই মাস আগেই সক্রিয় হয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। যুযুধান দুই নেতার মধ্যে ভারসাম্যের নীতি নিয়ে জুলাই মাসে গড়া হয়েছিল ২৯ সদস্যের প্রদেশ কংগ্রেস নির্বাচন কমিটি। তাতে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত এবং পাইলট দু’জনেই। রয়েছেন রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি গোবিন্দ সিংহ দোতাসরা। যিনি একদা ‘গহলৌত ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত হলেও বর্তমানে দুই গোষ্ঠীর সঙ্গেই তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। কিন্তু সমস্যা তাতে মেটেনি। গত সপ্তাহে রাহুলের কর্মসূচিতে গহলৌত-পাইলট হাতে-হাত ধরে ছবি তুললেও বিরোধের নিষ্পত্তি হয়েছে কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রী গহলৌতের সরকারের বিরুদ্ধে ‘অভ্যুত্থান’ চালাতে গিয়ে ‘ব্যর্থ’ হয়েছিলেন পাইলট। রাজস্থানের তৎকালীন উপমুখ্যমন্ত্রী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তাঁর অনুগামী ১৯ জন বিধায়ককে নিয়ে দিল্লির কাছে একটি রিসর্টে গিয়ে উঠেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রত্যাশী পাইলটের এই পদক্ষেপে কংগ্রেসের অন্দরে আশঙ্কা তৈরি হয় যে, বিজেপির সহায়তায় তিনিও রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার ফেলে দিতে পারেন। তবে কিছু দিন পরেই বিদ্রোহে ইতি টানেন প্রয়াত রাজেশ পাইলটের পুত্র। যদিও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ খোয়াতে হয়েছিল তাঁকে।

এর পর গত তিন বছর ধরেই পাইলট রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ চাইছেন। গত অক্টোবরে ‘লক্ষ্যের’ কাছেও পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। সে সময় ছিল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি নির্বাচন। প্রাথমিক ভাবে সভাপতি হওয়ার দৌড়ে তখন গহলৌতকে এগিয়ে দিয়েছিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব। তিনি সভাপতি হলে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে পারেন পাইলট, এ রকমই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সে সময়ই গহলৌত অনুগামী ৮২ জন বিধায়ক বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তাঁরা এআইসিসি প্রতিনিধিদের বৈঠকেও হাজির হননি।

শেষ পর্যন্ত ক্ষুব্ধ হাইকমান্ড সভাপতি হওয়ার দৌড় থেকে সরিয়ে দিয়েছিল গহলৌতকে। কিন্তু পাইলটের ‘ভাগ্য’ ফেরেনি। এমনকী, তাঁর দাবি সত্ত্বেও গহলৌত অনুগামী মন্ত্রী-বিধায়কদের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কাজের জন্য কড়া পদক্ষেপ করেনি কংগ্রেস হাইকমান্ড। রাজস্থানে সাধারণত পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদল হয়। এ বার গহলৌতকে সামনে রেখেই সেই প্রথা ভাঙতে চাইছে কংগ্রেস। কিন্তু প্রথা ভাঙলেও রাহুল-খড়্গেরা কি সদয় হবেন গহলৌতের উপর? ধন্দ সম্ভবত রয়ে গিয়েছে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর মনেও।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE